চট্টগ্রামে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ১৩ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। করোনা সংক্রমণ ফের বাড়তে থাকায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) নতুন করে সচেতনমূলক পদক্ষেপ নিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে চসিক জেনারেল হাসপাতাল (মেমন হাসপাতাল-২)-এ ১৫ শয্যাবিশিষ্ট করোনা আইসোলেশন সেন্টার ও র্যাপিড এন্টিজেন টেস্ট কেন্দ্র চালু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) দুপুরে সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে পাঠানো প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ, শেভরন ডায়াগনস্টিক সেন্টার, এভারকেয়ার হাসপাতালসহ বিভিন্ন ল্যাবে ১৯৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১৩ জন করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এ পর্যন্ত চট্টগ্রামে মোট ১১২ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন।
এরআগে সকালে নগরের আলকরণ এলাকায় ১৫ শয্যাবিশিষ্ট করোনা আইসোলেশন সেন্টার ও র্যাপিড এন্টিজেন টেস্ট কেন্দ্রের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। এসময় মেয়র বলেন, “হাসপাতালের তৃতীয় তলায় স্থাপিত এই আইসোলেশন সেন্টারে ১০টি পুরুষ এবং ৫টি নারীর জন্য শয্যা রাখা হয়েছে। ভবিষ্যতে শয্যার সংখ্যা ২০-এ উন্নীত করা হবে।”
তিনি আরও জানান, সেন্টারটিতে পর্যাপ্ত অক্সিজেন সিলিন্ডার, চিকিৎসক, নার্স এবং সাপোর্ট স্টাফ নিয়োজিত রয়েছে। রোগীদের জন্য তাৎক্ষণিক র্যাপিড এন্টিজেন টেস্ট ও প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জনসচেতনতার ওপর গুরুত্বারোপ করে মেয়র বলেন, “সবচেয়ে কার্যকর প্রতিরোধ হলো মাস্ক পরা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এবং সচেতন থাকা। আমরা অতীতেও একসাথে এই দুর্যোগ মোকাবেলা করেছি, এবারও পারব ইনশাআল্লাহ।”
তিনি জানান, চট্টগ্রামে সম্প্রতি করোনার অমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে প্রায় ১০০ জন আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। “অমিক্রন এখন ডেলটার চেয়েও বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। উপসর্গ ছাড়াও অনেকের শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। উপসর্গ দেখা দিলেই পরীক্ষা করতে হবে এবং প্রয়োজনে আইসোলেশনে আসতে হবে,” বলেন তিনি।
এছাড়া ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে চসিকের গৃহীত পদক্ষেপ তুলে ধরে মেয়র জানান, ডেঙ্গুর জন্য আলাদা এন্টিজেন টেস্ট ও চিকিৎসাসেবা চালু রয়েছে। এডিস মশার বিস্তার রোধে নগরবাসীকে সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “নিজের ঘর থেকে শহর—সব জায়গা পরিষ্কার রাখতে হবে। জমে থাকা পানি, ডাবের খোসা, টব ইত্যাদি পরিষ্কার করতে হবে।”
মশক নিধন কার্যক্রম সম্পর্কে মেয়র বলেন, “চসিকের চলমান অভিযানে ক্লাব ও স্থানীয় সংগঠনগুলোকে মেশিন ও ওষুধ দিয়ে সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।”
জীবাণুনাশকের ব্যবহার সম্পর্কে মেয়র বলেন, “২০২০ সালে আমি প্রথম বলেছিলাম—০.৫% ক্লোরিন সলিউশন ভাইরাল ডিজিজ প্রতিরোধে কার্যকর। এটি বাসা, রাস্তা ও হাসপাতাল পরিষ্কারে ব্যবহার করলে অনেক রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।”