মেয়েকে বাঁচাতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছে পাইকগাছার বৃক্ষপ্রেমিক সিদ্দিক গাজী শিরোনামে ‘দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার অনলাইনে গত ১৮ জুন সংবাদ প্রকাশ হলে’ বৃক্ষপ্রেমিক সিদ্দিক গাজীর অসুস্থ মেয়ের চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেন খুলনার পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও নির্বাহী কর্মকর্তা মাহেরা নাজনীন।
বৃক্ষপ্রেমিক সিদ্দিক গাজী খুলনার পাইকগাছার কপিলমুনি ইউনিয়নের শ্যামনগর গ্রামের মৃতঃ বেলায়েত গাজীর ছেলে। তার মেয়ের অসুস্থতার সকল খোঁজ খবর নিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহেরা নাজনীন, সিদ্দিক গাজীর হাতে তার মেয়ের চিকিৎসা বাবদ নগদ অর্থ তুলে দেন।
উল্লেখ্য,খুলনার পাইকগাছার বৃক্ষ প্রেমিক সিদ্দিক গাজী (৬৯) উপজেলার কপিলমুনি ইউনিয়নের শ্যামনগর গ্রামের বাসিন্দা যদিও এলাকায় সবাই তাকে চেনেন বকুল সিদ্দিক নামে। দারিদ্রতা নিত্য সঙ্গী হলেও ১৯৮৫ সাল থেকে শুরু করে অদ্যবধি খুলনা, যশোর, সাতক্ষীরা সহ আশপাশের কয়েকটি জেলায় পায়ে হেটে ঘুরে ঘুরে সরকারী-বেসরকারী বিভিন্ন শিক্ষাঙ্গনসহ নানা প্রতিষ্ঠানে প্রায় ১২ হাজারেরও অধিক বকুল গাছের চারা রোপন করেছেন তিনি। এনিয়ে বিভিন্ন সময়ে পত্র-পত্রিকায় লেখালেখিও হয়েছে। সর্বশেষ ২০১৫ সালে বকুল গাছ নিয়ে বিটিভি”র জনপ্রিয় “ইত্যাদি অনুষ্ঠানে তার একটি সাক্ষাৎকার প্রচার করে এবং ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার দেয়া হয়। সে অর্থও তিনি ব্যয় করেছিলেন মানবতার কল্যাণে বৃক্ষ রোপনে।
সর্বশেষ দারিদ্রতাকে নিত্য সঙ্গীকরে দাম্পত্য জীবনে স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে বিভিন্ন বিল ও জলাশয় থেকে বিরগুণি,হেলেঞ্চা,কলমি শাক সহ নানা রকমের শাক সংগ্রহ করে পাইকগাছা সদর,কপিলমুনি বাজার সহ বিভিন্ন বাজার ও গ্রামে ঘুরে ঘুরে সেগুলো বিক্রির টাকায় নানা সংকটেও বেশ কাটছিল তার জীবন। তবে স্বল্প সুখই যেন সইলোনা তার।
কয়েকদিন আগে তার ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে খাদিজা অসুস্থ্য হলে চিকিৎসার জন্য তাকে ডাক্তারের কাছে নিলে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় অ্যাপেন্ডিসাইটিস ধরা পড়ে। ফলে অপারেশন সহ ওষুধের খরচ বাবদ ১৪/১৫ হাজার টাকার কথা জানায় চিকিৎসকরা। এর পর কয়েকদিন যাবত মেয়ের চিকিৎসার খরচ যোগাতে মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছেন হতদরিদ্র পিতা ও মানবিক মানুষ সিদ্দিক গাজী। তার অসুস্থ মেয়ের চিকিৎসার ব্যায়ভার বহন করতে পারছেনা এমন তথ্য দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার অনলাইনে সংবাদ প্রকাশিত হলে পাইকগাছা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার দৃষ্টিগোচর আসলে তিনি বকুল প্রেমিক সিদ্দিক গাজীর অসুস্থ মেয়ের চিকিৎসার জন্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। অসহায় বকুল প্রেমিক সিদ্দিক গাজী অর্থ পেয়ে প্রশাসনের এ কর্মকর্তার নিকট ভীষন খুশী বলে এমনটাই তিনি অভিমত ব্যক্ত করেছেন।