নবীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির কাউন্সিলর ও সম্মেলন’কে সামনে রেখে চলছে প্রার্থীদের দিবারাত্রি জমজমাট প্রচারণা। নবীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির নির্ধারিত কাউন্সিলের তফশীল অনুযায়ী শনিবার বিকাল ৫টায় দলের অস্থায়ী কার্যালয় থেকে ৫ পদে ২৪ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র ফরম সংগ্রহ করেছেন।
এ নিয়ে বিএনপির ত্যাগী ও তৃণমুল নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক প্রচারণা ও উৎসাহ উদ্দীপনা বিরাজ করছে। আগামী ৯ জুলাই নবীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে ।
নবীগঞ্জ উপজেলার কুর্শি ইউনিয়নের গহরপুর সড়কে সোনার বাংলা একাডেমি সংলগ্ন মাঠে অনুষ্টিত্ব বিএনপির সম্মেলন ও কাউন্সিলকে সামনে রেখে বিএনপির তৃর্ণমুল নেতাকর্মীদের মাঝে উৎসবের আমেজ দেখা দিয়েছে। নানা প্রতিকুল পরিস্থিতির কারনে বিএনপি দীর্ঘদিন পর উপজেলা কাউন্সিল ও সম্মেলনের তফশীল ঘোষনা করলে এই উৎসাহ দেখা দেয়। এর আগেও বিএনপির কাউন্সিলের তফশীল ঘোষনা করে মনোনয়নপত্র ফরম বিতরণ ও সংগ্রহ করে অনিবার্যকারণ বশতঃ স্থগিত হয়ে পড়ে সম্মেলন। এবার এমনটা হবে না আশাবাদি দলীয় নেতাকর্মীরা।
গত ২৫ জুন কাউন্সিলের তফশিল বিজ্ঞপ্তি আকারে স্থানীয় পত্রিকায় প্রকাশ করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এডভোকেট মুদ্দত আলী।
দলীয় সুত্রে জানা যায়, নবীগঞ্জ উপজেলা বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে দূ’ভাগে বিভক্ত। এক গ্রুপে নেতৃত্ব দিচ্ছেন সাবেক এমপি ও কেন্দ্রীয় নেতা আলহাজ্ব শেখ সুজাত মিয়া। অপর গ্রæপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বর্তমান আহবায়ক সরফরাজ চৌধুরী ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান শেফু (বর্তমানে বহিস্কৃত)। ইতিপূর্বে আহ্বায়ক কমিটি উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন কমিটি গঠন করেন। প্রতিটি ইউনিয়ন কমিটির সকল সদস্য কাউন্সিলার হিসাবে গন্য হবেন এর সাথে সংযুক্ত হবেন নবীগঞ্জ উপজেলা আহবায়ক কমিটির সদস্যরা।
বিএনপির দুটি বলয়ের ৫টি পদে নির্বাচনের জন্য ১৫ জন প্রার্থী প্রচরণা করলেও শনিবার হঠাৎ করে প্রার্থী বৃদ্ধি পেয়েছে আশানুরুপ হারে। কিছু পদে প্রার্থীদের পদ বদল হয়েছে। নতুন পদে মনোনয়ন ক্রয় করেছেন অনেকেই।
নবীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির কাউন্সিলের প্রধান নির্বাচন কমিশনার এডভোকেট মুদ্দত আলী শনিবার আগ্রহী প্রার্থীদের মাঝে মনোনয়ন ফরম বিক্রি করেন। ফেইসবুক’সহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণা চলছে ৯ জুলাই নবীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির কাউন্সিল ঘিরে। এনিয়ে প্রার্থীদের প্রচার প্রচারণা ব্যাপক ভাবে সারা পড়েছে উপজেলা ব্যাপী। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর এই কাউন্সিল নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দিপনা রয়েছে। তাই প্রার্থী সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে নেতাকর্মীরা মনে করেন।
উভয় গ্রুপের মধ্যে পাল্টাপাল্টি মিটিং ও লবিং গ্রুপিং চলছে। যে পাঁচটি পদে নির্বাচন হবে সে গুলো হলো সভাপতি, সিনিয়র সহ-সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক।
নবীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির কাউন্সিলের প্রধান নির্বাচন কমিশনার এডভোকেট মুদ্দত আলীর দেয়া তথ্য মতে ফরম ক্রয়ের ক্রমানুসারে, সভাপতি পদে সাবেক সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী সদস্য শেখ সুজাত মিয়া, উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ মতিউর রহমান পেয়ারা, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মোক্তাদির চৌধুরী ও নবীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির যুন্ম আহবায়ক আব্দুল বারিক রনি।
সিনিয়র সহ সভাপতি পদে বিএনপি নেতা মুশফিকুজ্জামান চৌধুরী নোমান, মোঃ খসরু চৌধুরী ও ইনাতগঞ্জ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মোঃ বয়েতুল্লাহ মিয়া। সাধারণ সম্পাদক পদে নবীগঞ্জ উপজেলার সাবেক যুবদল আহ্বায়ক মজিদুর রহমান মজিদ, উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শিহাব আহমদ চৌধুরী, ও উপজেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুরশেদ আহমদ।
এছাড়া যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে গজনাইপুর ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি শফিউল আলম বজলু , একই ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আবুল খায়ের কায়েদ, মোঃ এনামুল হক , করগাওঁ ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক মুস্তাহিদ উদ্দিন, দেবপাড়া ইউনিয়ন বিএনপি সভপতি এড. জালাল আহমদ, সাবেক ছাত্রনেতা অলিউর রহমান অলি ও নবীগঞ্জ উপজেলা সে¦চ্ছাসেবক দলের আহবায়ক জুসেফ বখত ।
সাংগঠনিক সম্পাদক পদে উপজেলা বিএনপির সাবেক যুব বিষয়ক সম্পাদক নুরুল গনি চৌধুরী সোহেল, এডভোকেট শাহিদ আলী তালুকদার, সাবেক উপজেলা যুবদলের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক সোহেল আহমদ চৌধুরী রিপন, জামাল চৌধুরী, জাহান আহমদ, যুবনেতা প্রবাসী মোঃ রাশেদ মিয়া ও ছাত্রনেতা অলিউর রহমান অলি।
একাধিক বার উপজেলা বিএনপির কাউন্সিলের তারিখ ঘোষনা করা হলেও বার বার কোন্দলের কারনে স্থগিত ঘোষনা করা হয়। এবার কাউন্সিল নিয়ে নানা শংকায় বিএনপি নেতাকর্মীরা চুড়ান্ত কাউন্সিলে অংশ নিচ্ছেন। সম্প্রতি ৬ষ্ঠ বারের মতো কাউন্সিল তারিখ ও তফশিল ঘোষনা করা হয়।
বিএনপি নেতা আব্দুর রকিব নামের একজন কাউন্সিলার বলেন বারবার তারিখ পরিবর্তন ও স্থগিত হওয়ায় আমরা তীব্র্র্র্র্র্র্র্র হতাশায় ভুগছিলাম। আমরা মাঠের কর্মীরা চাই ভোট দিয়ে নেতা নির্বাচন করতে। কিন্তু বার বার স্থগিত করা হয়েছিল। এবার নির্ধারিত তারিখে সঠিক সময়ে কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে বলে আশাবাদী।
এ ব্যাপারে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এডভোকেট মুদ্দত আলী বলেন, নবীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির কাউন্সিলর ও সম্মেলন উপলক্ষে জমজমাট প্রচারণা চলছে । কেন্দ্রীয় নেতবৃন্দ ও জেলা নেতৃবৃন্দ বসে আলোচনার ভিত্তিতে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সম্মেলনের চুড়ান্ত তারিখ, স্থান ও তফসিল নির্ধারণ করেন। নির্ধারিত ফরম বিতরণের দিনে ৫ পদে ২৪ জন মনোনয়ন ফরম ক্রয় করেছেন। রবিবার বিকাল ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত জমা নেয়া হবে।