গাজীপুরের অনন্ত ক্যাজুয়াল অয়্যার লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বে-আইনী ছাঁটাই এবং অতিরিক্ত কাজের চাপ বন্ধ করার দাবিতে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের নিচে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
সোমবার (৩০ জুন) সকাল ৯টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত টঙ্গীর আই আর আই রোডের ওই প্রতিষ্ঠানের নিচে তারা অবস্থান নেয়। পরে কলকারখানা কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধি কারখানার মালিক পক্ষের সঙ্গে কথা বলে তাদের প্রতিশ্রুতি দিলে তারা দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে চলে যান।
অনন্ত ক্যাজুয়াল অয়্যার লিমিটেড গাজীপুর মহানগরীর কুনিয়া (তারগাছ) এলাকায় অবস্থিত।
অবস্থানকারী শ্রমিকেরা জানান, ‘শুনছি মালিক কারখানা বন্ধ করে দেবে। গত এক মাসে প্রায় ৮১৫ জন শ্রমিক ছাঁটাই করেছে, একটি ফ্লোর খালি করে ফেলেছে।
রোববার (২৯ জুন) দুপুর ১২টা পর্যন্ত আমরা কারখানায় কাজ করেছি। বে-আইনী ছাঁটাই, অতিরিক্ত কাজের চাপ এবং জোরপূর্বক চাকুরি থেকে অব্যাহতি (রিজাইন) বন্ধ করার দাবিতে দুপুরের পর কাজ বন্ধ করে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরে এসে অবস্থান নেই।
এদিকে, শ্রমিকদের অযৌক্তিক অসন্তোষের কারণে অনন্ত ক্যাজুয়াল অয়্যার লিমিটেড কারখানা কর্তৃপক্ষ রবিবার (২৯ জুন) বিকেলে ছুটির নোটিশ টানিয়ে দেয়। নোটিশে উল্লেখ করা হয় সোমবার (৩০ জুন) স্ব-বেতনে অত্র ফ্যাক্টরীর সকল সেকশন সাধারণ বন্ধ থাকিবে। আগামী মঙ্গলবার (১ জুলাই) থেকে কারখানা খোলা থাকবে এবং উল্লেখিত সেকশনের সকলকে যথা সময়ে কাজে যোগদান পূর্বক নিজ নিজ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালনের জন্য নির্দেশ প্রদান করা হল।
কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের সহকারী মহা পরিদর্শক (এআইজি) মোতালেব মিয়া বলেন, শ্রমিদের দাবী ছিল মালিকপক্ষ জোরপূর্বক শ্রমিক ছাঁটাই এবং অতিরিক্ত কাজের চাপ।
গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র গাজীপুরের জেলা শাখার সভাপতি জিয়াউল কবীর খোকন বলেন, অনন্ত ক্যাজুয়াল অয়্যার লিমিটেড কারখানা বিনা নোটিশে শ্রমিক ছাঁটাই করে। তবে, শ্রম আইন অনুযায়ী ছাঁটাইকৃত শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করে দিয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। শ্রমিকরা ছাঁটাই চায় না, চাকরি চায়। ছাঁটাই বন্ধের প্রতিবাদে শ্রমিকেরা কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরে এসেছিলেন।
তিনি আরো বলেন, গত এক মাসে ৮১৫ জন শ্রমিক ছাঁটাই করেছে ওই কারখানা। যাদেরকে জোর করে ছাঁটাই করছে তাদের সংসার চালানোর আর কোনো পথ রইলো না।
অনন্ত ক্যাজুয়াল অয়্যার লিমিটেড কারখানার ব্যবস্থাপক (প্রশাসন ও মানব সম্পদ) বদর উদ্দিনের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ না করায় এ বিষয়ে কারখানা কৃর্তপক্ষের কেনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের ইন্সপেক্টর হাবীল জানান, রবিবার (২৯ জুন) শ্রমিকরা কাজ না করে কারখানায় অবস্থান করেছে। ওই ঘটনায় কারখানা কর্তৃপক্ষ এদিন বিকেলে কারখানা ছুটি ঘোষণা করেছে। আজকেও শ্রমিকরা তাদের দাবী নিয়ে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের নিচে সাড়ে ৩ ঘন্টা অবস্থান নেয়।