মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২

এসএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি বাংলা দ্বিতীয় পত্র

সাপুড়ে সাপ খেলায়
মো. ইমরান হোসেন, সহকারী শিক্ষক ইস্টার্ন ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ, দনিয়া, ঢাকা
  ২০ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০
এসএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি বাংলা দ্বিতীয় পত্র
এসএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি বাংলা দ্বিতীয় পত্র

প্রিয় শিক্ষার্থী, আজ বাংলা দ্বিতীয় পত্র থেকে প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করা হলো

প্রযোজক ক্রিয়া

যে ক্রিয়া একজনের প্রযোজনা বা চালনায় অন্যজন কর্তৃক অনুষ্ঠিত হয় সেই ক্রিয়াকে প্রযোজক ক্রিয়া বলে। সংস্কৃত ব্যাকরণে একে ণিজন্ত ক্রিয়া বলা হয়।

প্রযোজক ক্রিয়া : যে ক্রিয়া প্রযোজনা করে তাকে প্রযোজক কর্তা বলে।

প্রযোজ্য কর্তা : যাকে দিয়ে ক্রিয়াটি অনুষ্ঠিত হয় তাকে প্রযোজ্য কর্তা বলে। যেমন :

প্রযোজক কর্তা প্রযোজ্য কর্তা প্রযোজক ক্রিয়া

মা শিশুকে চাঁদ দেখাচ্ছেন।

(তুমি) খোকাকে কাঁদিও না।

\হসাপুড়ে সাপ খেলায়।

বিশেষ দ্রষ্টব্য বা জ্ঞাতব্য : প্রযোজক ক্রিয়া রূপে ব্যবহৃত হলে অকর্মক প্রযোজক ক্রিয়া সকর্মক হয়।

প্রযোজক ক্রিয়ার গঠন : প্রযোজক ক্রিয়ার ধাতু=মূল ক্রিয়ার ধাতু+আ। যেমন : মূল ধাতু হাস্‌+আ=হাসা (প্রযোজক ক্রিয়ার ধাতু)। হাসা+চ্ছেন বিভক্তি=হাসাচ্ছেন (প্রযোজক ক্রিয়া)।

নামধাতু ও নামধাতুর ক্রিয়া

বিশেষ্য, বিশেষণ এবং ধ্বন্যাত্মক অব্যয়ের পরে 'আ' প্রত্যয়যোগে যেসব ধাতু গঠিত হয় তাদের নামধাতু বলা হয়। নামধাতুর সঙ্গে পুরুষ বা কালসূচক ক্রিয়াবিভক্তি যোগে নামধাতুর ক্রিয়াপদ গঠিত হয়। যেমন :

ক) বেত (বিশেষ্য)+আ (প্রত্যয়)=বেতা : শিক্ষক ছাত্রটিকে বেতাচ্ছেন

খ) বাঁকা (বিশেষণ)+আ (প্রত্যয়)=বাঁকা : কঞ্চিটি বাঁকিয়ে ধর

গ) ধ্বন্যাত্মক অব্যয় : কনকন- দাঁতটি ব্যথায় কনকনাচ্ছে। ফোঁস- অজগরটি ফোঁসাচ্ছে।

আ-প্রত্যয়যুক্ত না হয়েও কয়েকটি নামধাতু বাংলা ভাষায় মৌলিক ধাতুর মতো ব্যবহৃত হয়। যেমন :

ফল : বাগানে বেশ কিছু লিচু ফলেছে।

টক : তরকারি বাসি হলে টক।

ছাপা : আমার বন্ধু বইটা ছেপেছে।

যৌগিক ক্রিয়া

একটি সমাপিকা ও একটি অসমাপিকা ক্রিয়া যদি একত্রে একটি বিশেষ বা সম্প্রসারিত অর্থ প্রকাশ করে তাকে যৌগিক ক্রিয়া বলে। যেমন :

ক) তাগিদ দেয়া অর্থে : ঘটনা শুনে রাখ।

খ) নিরন্তরতা অর্থে : তিনি বলতে লাগলেন।

গ) কার্যসমাপ্তি অর্থে : ছেলেমেয়েরা শুয়ে পড়ল।

ঘ) আকস্মিকতা অর্থে : সাইরেন বেজে উঠল।

ঙ) অভ্যস্ততা অর্থে : শিক্ষায় মন সংস্কারমুক্ত হয়ে থাকে।

চ) অনুমোদন অর্থে : এখন যেতে পার।

যৌগিক ক্রিয়ার গঠনবিধি

অসমাপিকা ক্রিয়ার পরে যা, পড়, দেখ্‌, লাগ্‌, ফেল্‌, আস্‌, উঠ্‌, দে, লহ, থাক প্রভৃতি ধাতু থেকে সমাপিকা ক্রিয়া গঠিত হয়ে উভয়ে মিলিতভাবে যৌগিক ক্রিয়া তৈরি করে। এসব যৌগিক ক্রিয়া বিশেষ অর্থ প্রকাশ করে। যেমন :

১. যা- ধাতু

ক) সমাপ্তি অর্থে : বৃষ্টি থেমে গেল।

খ) অবিরাম অর্থে : গায়ক গেয়ে যাচ্ছেন।

গ) ক্রমশ অর্থে : চা জুড়িয়ে যাচ্ছে।

ঘ) সম্ভাবনা অর্থে : এখন যাওয়া যেতে পারে।

২. পড়-ধাতু

ক) সমাপ্তি অর্থে : এখন শুয়ে পড়।

খ) ব্যাপ্তি অর্থে : কথা ছড়িয়ে পড়েছে।

গ) আকস্মিকতা অর্থে : এখনই তুফান এসে পড়বে।

ঘ) ক্রমশ অর্থে : কেমন যেন মনমরা হয়ে পড়েছি।

৩. দেখ্‌-ধাতু

ক) মনোযোগ আকর্ষণে : এদিকে চেয়ে দেখ।

খ) পরীক্ষা অর্থে : লবণটা চেখে দেখ।

গ) ফল সম্ভাবনায় : সাহেবকে বলে দেখ।

৪. আস্‌-ধাতু

ক) সম্ভাবনায় : আজ বিকেলে বৃষ্টি আসতে পারে।

খ) অভ্যস্ততায় : আমরা এ কাজই করে আসছি।

গ) আসন্ন সমাপ্তি অর্থে : ছুটি ফুরিয়ে আসছে।

৫. দি-ধাতু

ক) অনুমতি অর্থে : আমাকে যেতে দাও।

খ) পূর্ণতা অর্থে : কাজটা শেষ করে দিলাম।

গ) সাহায্য প্রার্থনায় : আমাকে অঙ্কটা বুঝিয়ে দাও।

৬. নি-ধাতু

ক) নির্দেশ জ্ঞাপনে : এবার কাপড়-চোপড় গুছিয়ে নাও।

৭. ফেল্‌- ধাতু

ক) সম্পূর্ণতা অর্থে : সন্দেশগুলো খেয়ে ফেল।

খ) আকস্মিকতা অর্থে : ছেলেরা হেসে ফেলল।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে