শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

কারেন্ট পোকার আক্রমনে দিশেহারা আমন চাষীরা

মো. আবু হেনা আজমিরীগঞ্জ (হবিগঞ্জ)
  ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:৩৮
কারেন্ট পোকার আক্রমনে দিশেহারা আমন চাষীরা

ধান কর্তন শুরু হয়েছে এরই মাঝে হঠাৎ করে পাকা জমিতে কারেন্ট পোকার আক্রমন। এমনটি হয়েছে আজমিরীগঞ্জে রোপা আমন জমিতে। এতে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে বিভিন্ন ধরনের বালাই নাশক স্প্রে করছেন।

শুধু কারেন্ট পোকার আক্রমন নয় পাকা জমির ধান কেটে ন্যায্য মূল্য না পাওয়ারও অভিযোগ করছে কৃষকরা। তবে সরকারি ভাবে ধান সংগ্রহ না করায় কৃষকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

এদিখে সরকার কৃষকদের পুর্নবাসনের উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের মাধ্যমে জন্য ৮ হাজার ৫শ' ৭৫ কৃষকের মাঝে বিনা মূল্যে সরিষা, ভুট্টা, সূর্যমুখী, চিনা বাদম, মশুর ডাল, হাইব্রিড ধান, উপশি বীজ ধান, ডিএমপি ও এমওপি সার বিতরন করেন।

আজমিরীগঞ্জ উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার ৭ হাজার ৮১০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন আবাদ করা হয়েছে। গত অক্টোবরের প্রথম সাপ্তাহে অতিবৃষ্টিতে হাওরে অধিকাংশ জমি তলিয়ে গিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় সেই সাথে পাতাপুড়া রোগেরও আক্রমন করে। কয়েকদিনের মধ্যেই পানি নেমে গিয়ে ক্ষতির পরিমানটা কমে আসলেও আবার পাকা ধানে কারেন্ট পোকার আক্রমনে দিশেহারা হয়ে পরে কৃষক।

এছাড়া জমি আবাদের খরচ অনুযায়ী ধানের মূল্য না পাওয়ায় বিপর্যস্ত হয়ে পরেছেন কৃষকরা। প্রান্তিক কৃষকরা সরকারী ভাবে ধান কেনার কার্যক্রম দ্রুত করার দাবি জানান।

কৃষক চাবু মিয়া জানান, তিনি ৮ কিয়ার জমিতে রোপা আমন আবাদ করেছেন আর কয়েকদিন পর ধান কর্তন করবেন। এরই মধ্যে কারেন্ট পোকার আক্রমনে তিনি দিশেহারা হয়ে পড়েন। তিনি বাজার থেকে বালাই নাশক ওষধ কিনে জমিতে স্প্রে করেন।

কৃষক সমর আলী বলেন, তিনি ৭ কের রোপা আমন আবাদ করেছিলেন। গত কয়েকদিন আগে ঝড়ে জমির ধান গাছ নুয়ে পড়ে তার ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়। বর্তমান বাজার মূল্য ৯১০ টাকা মন (৪০ কেজি) দরে বিক্রি করেন। এছাড়া ধানের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরো অনেকের সাথে আলাপকালে তাঁরা বলেন, ধান ব্যাবসায়িদের সিন্ডিকেটের ফলে তারা ধানের ন্যায়্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অন্যান্য এলাকায় সরকারি ভাবে খাদ্য গুদামে ধান সংগ্রহ অভিযান শুরু করলেও আজমিরীগঞ্জের খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা সঠিক ভাবে বলতে পারছেনা কখন সরকারিভাবে সংগ্রহ অভিযান শুরু হবে।

উপজেলা খাদ্য গুদাম পরিদর্শক মোঃ সামছুল হুদা বলেন, এ উপজেলায় রোপা আমন ধান ৩০ টাকা কেজি দরে ২শ' ৫৪ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করা হয়ে। কৃষকেদর তালিকা তৈরী করে আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই সংগ্রহ শুরু করা হবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ লুৎফে আল মুঈজ বলেন, বিভিন্ন ধরনের রোগ বালাই থেকে ফসলকে মুক্ত রাখতে কৃষকদের মাঝে সচেতনতা মূলক প্রচারনা ও লিফলেট বিতরন করা হচ্ছে। এছাড়া ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের পুর্নবাসনের জন্য প্রনোদনা কর্মসূচীর আওতায় সরকার এ উপজেলায় ১ হাজার ৭৫ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষককে সরিষা, ভুট্টা, গম, সূর্যমুখী, চিনা বাদাম, মশুর ফসলের বীজ ও সার, ৩০০০ কৃষককে ২ কেজি করে হাইব্রিড বীজ ধান এবং ৪৫০০ কৃষক/কৃষানীর মাঝে উফশী ৫ কেজি বীজ ধান, ১০ কেজি ডিএপি ও ১০ এমওপি সার বিতরন করা হয়। এছাড়া উপজেলায় রোপা আমন ধান কর্তন শুরু হয়েছে। গতকাল পর্যন্ত প্রায় ১৯৫০ হেক্টর জমির ধান কর্তন করা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ নাগাদ সম্পুর্ন রোপা আমন ধান কর্তন সম্পন্ন হয়ে যাবে।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে