ঢাকার হাজারীবাগে ফটোগ্রাফার নুরুল ইসলাম হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে ১০ তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বিয়ের অনুষ্ঠানের ছবি তোলার কথা বলে নুরুলকে ডেকে এনে হত্যার পর দুটি ক্যামেরাও ওই তরুণরা নিয়ে গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
মঙ্গলবার ঢাকা ও ময়মনসিংহ থেকে গ্রেপ্তার করা এসব তরুণের কাছ থেকে ছিনতাই হওয়া দুইটি ডিএসএলআর ক্যামেরা ও চাপাতি উদ্ধার করা হয়েছে।
বুধবার ঢাকা মহানগর পুলিশ-ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে রমনা বিভাগের উপকমিশনার মাসুদ আলম এসব তথ্য জানান।
১৮ থেকে ২২ বছর বয়েসের এই তরুণেরা টিকটক ভিডিও করে থাকে তুলে ধরে উপকমিশনার মাসুদ আলম বলেন, ' ভালো ক্যামেরা দিয়ে টিকটক ভিডিও করার জন্য তারা পরিকল্পিতভাবে বিয়ের অনুষ্ঠানের ছবি তোলার কথা বলে নুরুলকে খুন করে ক্যামেরাগুলো নিয়ে যায়।'
গ্রেপ্তার ১০ জন হলেন- নাঈম আহম্মেদ (২০), শাহীন আকন্দ ওরফে শাহিনুল (২০), শাহীন চৌকিদার (২২), রহিম সরকার (১৯), নয়ন আহম্মেদ (১৯), হৃদয় মাদবর (১৮), আব্দুর রাজ্জাক ওরফে রাজা (১৯), আনোয়ার হোসেন (১৯), শহিদুল ইসলাম (২০) ও মো. আরমান (১৮)।
শুক্রবার হাজাররবাগ থানা এলাকার ঋষিপাড়ায় ২৬ বছরের নুরুলকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় পরদিন হাজারীবাগ থানায় একটি মামলা হয়েছে। এর চারদিনের মাথায় এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য বের করার দাবি জানাল পুলিশ।
নুরুল বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ছবি তুলতেন। বরিশালের আগৈলঝড়ার সুজনকাঠি গ্রামের আবুল ফকিরের ছেলে তিনি, ঢাকায় শংকর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় থাকতেন।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা মাসুদ বলেন, নূরুলের একটি ফেইসবুক পেইজ আছে। সেই পেইজের সূত্রে গ্রেপ্তার একজন ১৫ মে তার সঙ্গে যোগাযোগ করে বিয়ের অনুষ্ঠানের ছবি তোলার অনুরোধ করেন এবং অগ্রিম হিসেবে বিকাশের মাধ্যমে ৫০০ টাকা পাঠান।
ঘটনার দিন ওই ব্যক্তি নূরুলকে ফোন করে শংকর চৌরাস্তায় আসতে বলেন। ইমন নামে এক বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে নুরুল সেখানে যান এবং সে ব্যক্তির সঙ্গে দেখা হয়।
পরে তারা ওই ব্যক্তির কথামতো একটি অটোরিকশায় করে জাফরাবাদ পুলপাড় ব্লুমিং চাইল্ড স্কুলের কাছে বিয়ের অনুষ্ঠানের উদ্দেশে রওনা দেন। ঋষিপাড়া এলাকায় পৌঁছামাত্র হামলাকারীদের কবলে পড়েন।
পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ইমন দৌড়ে আত্মরক্ষা করলেও ক্যামেরা ব্যাগ নিয়ে থাকা নুরুলকে কুপিয়ে ক্যামেরা ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত বলে জানান।
মামলার তদন্তকালে ঘটনাস্থলের আশপাশের ক্লোজ সার্কিট (সিসি) টিভি ক্যামেরার ভিডিও বিশ্লেষণ করে ও তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের চিহ্নিত করার কথা বলেন উপকমিশনার মাসুদ আলম।
তিনি বলেন, ঘটনার এক সপ্তাহ আগে তারা কয়েকজন রায়েরবাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধ এলাকার খেলার মাঠে টিকটক করার চিন্তা ভাবনা থেকে বিয়ের অনুষ্ঠানের কথা বলে নুরুলকে ডেকে এনে হত্যার পরিকল্পনা করে।