সারাদেশ

হবিগঞ্জ জেলা যুবলীগের সাবেক প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারি ও ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন ও তার শশুর আহাদ আলী মেম্বার এর বিরুদ্ধে চুনারুঘাট থানায় চাঁদাবাজির মামলা হয়েছে।

রোববার (১৫ জুন) চুনারুঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ নুর আলম মামলাটি রুজ্জ করার সত্যতা নিশ্চিত করেন।১১ জুন বৃহস্পতিবার মামলা টি করেছেন চুনারুঘাট উপজেলার গোগাউড়া গ্রামের সহিদ মিয়ার ছেলে দেলোয়ার হোসেন।

মামলার বাদী দেলোয়ার হোসেন লিখিত অভিযোগে বলেন, মোঃ নাসির মিয়া (৫২) পিতা-মৃত আকল মিয়া, সাং-শ্যামলী আ/এ, হবিগঞ্জ পৌরসভা, থানা ও জেলা-হবিগঞ্জ, ২। আহাদ আলী (৫৮) পিতা-মৃত আলী আজগর ওরফে মেন্দি মিয়া, সাং-চেগানগর, ০১ নং গাজীপুর ইউ/পি, ৩। মোঃ বকুল মিয়া (৪৫) পিতা-মৃত আব্দুল গোফার ওরফে কনা মিয়া, সাং-আশ্রাবপুর, ০২ নং আহম্মদাবাদ ইউ/পি, ৪। মোঃ আরজু মিয়া (৩২) পিতা-মৃত ইউনুছ মিয়া, সাং-বনগাঁও, ০২ নং আহম্মদাবাদ ইউ/পি, ৫।

মোঃ সজীব মিয়া (৩০) পিতা-চান মিয়া সাং-বনগাঁও, ০২ নং আহম্মদাবাদ ইউ/পি, ৬। নুরুল হক (৪৮) পিতা-অজ্ঞাত, সাং-আশ্রাবপুর, ০২ নং আহম্মদাবাদ ইউ/পি, ৭। মিজান মিয়া (৩৮)সহ আরো ৮/১০জন উল্লেখিত বিবাদীগন অত্যন্ত খারাপ, উগ্র, উশৃঙ্খল, দাঙ্গাবাজ, লাঠিয়াল, প্রতাবশালী চাঁদাবাজ প্রকৃতির লোক।চুনারুঘাট থানাধীন রাজার বাজার এলাকা হইতে বনগাঁও কোর্টবাড়ী এলাকা পর্যন্ত খোয়াই নদীতে বালু মহাল রহিয়াছে। উক্ত বালু মহালের ইজারাদার মেসার্স এবিসি বিল্ডার্স।জখমী স্বাক্ষী আলমগীর হাসান ও স্বাক্ষী সুলতান মিয়া সহ আরো বেশ কয়েকজন উক্ত বালু মহালে শ্রমিক হিসাবে লালু উত্তোলনের কাজ করে। উল্লেখিত ১নং বিবাদী নাসির মিয়ার প্ররোচনায় ও পরামর্শে উল্লেখিত অপরাপর বিবাদীগন / কিছুদিন কিছুদিন পূর্ব হইতে বিভিন্ন সময় বর্ণিত বালু মহালে আসিয়া আমাদেরকে বলে যে, আমাদের মালিক বালু মহালের ইজাদার এর নিকট হইতে তাদেরকে প্রতিমাসে ২০,০০,০০০/- (বিশ লক্ষ) টাকা করিয়া চাঁদা হিসেবে এনে দিতে হইবে।

অন্যথায় আমাদেরকে বালু মহালে কাজ করতে দিবে না। এমনকি বালু মহাল বন্ধ করিয়া দিবে বলিয়াও হুমকী দেয়। আমি ও আমার সহযোগী শ্রমিকগন বিষয়টি বালু মহালের ইজারাদারকে জানাইলে, তিনি ইহাতে অপারগতা প্রকাশ করেন। তখন আমরা বিবাদীদেরকে চাঁদার টাকা দেওয়া যাইবে না মর্মে জানাইলে, বিবাদীগন আমাদেরকে বিভিন্ন হুমকী ধামকী প্রদর্শণ করিতে থাকে এবং বিভিন্ন সময় বালু মহালে আসিয়া তাদের দাবীকৃত চাঁদার টাকা চাইতে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় উল্লেখিত ঘটনার তারিখ ও সময়ে ১নং বিবাদী নাসির মিয়ার মোবাইল ফোনের মাধ্যমে প্ররোচনায় ও পরামর্শে উল্লেখিত ২নং বিবাদী আহাদ আলীর নেতৃত্বে অপরাপর বিবাদীগন সহ অজ্ঞাতনামা বিবাদীগন পূর্ব পরিকল্পিতভাবে বে-আইনী জনতাবদ্ধে দেশীয় অস্ত্র সন্ত্র, দা, রামদা, লাঠি, লোহার রড ইত্যাদি নিয়া বর্ণিত বালু মহালে আসিয়া তাদের দাবীকৃত চাঁদার টাকা আনিয়া নিতে বলে।

আমার সহযোগী শ্রমিকগন সহ আমি তখন অপারগতা প্রকাশ করা মাত্রই ২নং বিবাদী আহাদ আলী মোবাইল ফোনে ১নং বিবাদীকে জানায়। সাথে সাথে ১নং বিবাদী নাসির মিয়ার হুকুমে ২নং বিবাদী আহাদ আলীর নেতৃত্বে উল্লেখিত অপরাপর বিবাদীগন সহ অজ্ঞাতনামা বিবাদীগন অতর্কিতে হামলা করতঃ বালু মহালের শ্রমিকদেরকে মারপিট সহ বালু মহালের মেশিন ও মালামাল ভাংচুর করিতে থাকে।

বিবাদীগন আমার সহযোগী শ্রমিক স্বাক্ষী আলমগীর হাসান ও স্বাক্ষী সুলতান মিয়াকে মারপিট করিয়া তাদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে চেছাফুলা ও রক্তাক্ত জখম করে। এক পর্যায়ে বিবাদীগন বালু মহালের বালু উত্তোলনের অনুমান ৫০০ ফুট হার্ড পাইপ, অনুমান ২০০ ফুট হুজ পাইপ, একটি পাম্প, ৩৫ হর্স পাওয়ার ০২ টি সেলু ইঞ্জিন ভাংচুর করিয়া সর্বমোট অনুমান ৪,০০,০০০/- (চার লক্ষ) টাকার ক্ষতিসাধন করে।

জখমী শ্রমিক সহ অন্যান্য শ্রমিকদের শোর চিৎকারে আশপাশের লোকজন আগাইয়া আসিতে থাকিলে, বিবাদীগন তাদেরকে তাদের দাবীকৃত চাঁদার টাকা না দিলে, বর্ণিত বালু মহালে আর বালু উত্তোলন করতে দিবে না, এমনকি আমাদেরকে আর বালু মহালে দেখিলে খুন করিয়া খোয়াই নদীতে ভাসাইয়া দিবে বলিয়া হুমকী ধামকী ও ভয়ভীতি প্রদর্শণ করিয়া চলিয়া যায়।

আমি মোবাইল ফোনে ঘটনার বিষয়টি বালু মহালের ইজারাদারকে জানাইলে, ইজাদারের পক্ষের লোকজন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হইয়া ঘটনার বিস্তারিত শুনিয়া জখমীদেরকে চুনারুঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়া চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেন।

চুনারুঘাট পৌরসভার সাবেক মেয়র ও বিশিষ্ট সামাজিক ব্যক্তিত্ব নাজিম উদ্দিন শামসু বলেন,তারা এলাকার একটি চিহ্নিত চাঁদাবাজ গ্রুপ হিসেবে সাধারণ মানুষের কাছে পরিচিত।

এলাকার সাধারণ ব্যবসায়ী এবং নিরীহ মানুষদের জিম্মি করে মোটা অংকের চাঁদা নেয়াই তাদের কাজ। তাদেরকে দ্রুত গ্রেফতার করার দাবী জানান।