রাজধানীর কেরানীগঞ্জে সাড়ে সাত বছর আগে মফিজুর রহমান নামের এক ব্যবসায়ীকে হত্যার দায়ে দুজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সম্পর্কে তারা দেবর-ভাবি।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি হলেন- মাকসুদা আক্তার ও তার দেবর সালাউদ্দিন। পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার (২৯ মে) ঢাকার পঞ্চম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক ইসরাত জাহান মুন্নি এ রায় দেন।
রায়ের তথ্য অনুযায়ী, মাকসুদা কেরানীগঞ্জে এক ছেলে নিয়ে বাস করতেন। তার স্বামী মালয়েশিয়া থাকতেন। মফিজুরও কেরানীগঞ্জে থাকতেন। তিনি স্বর্ণের ব্যবসার পাশাপাশি কবিরাজি করতেন। মাকসুদার একাধিকবার সন্তান মারা যায়। এ জন্য তিনি মফিজুরের শরণাপন্ন হন। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
মাকসুদার প্রবাসী স্বামী বিষয়টি জানতে পারেন। তিনি মুঠোফোনে মফিজুরকে এই সম্পর্ক থেকে সরে যাওয়ার অনুরোধ করেন। এরপর মফিজুরের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন মাকসুদা।
এদিকে নানান ভয়ভীতি দেখিয়ে মাকসুদার সঙ্গে সম্পর্ক অব্যাহত রাখেন মফিজুর। এতে ক্ষুব্ধ হন মাকসুদা। তিনি বিষয়টি নিয়ে তার দেবর সালাউদ্দিনের সঙ্গে পরামর্শ করেন।
পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর মফিজুরকে বাসায় দাওয়াত দেন মাকসুদা। বাসায় আসার পর খাবার ও চায়ের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দেন আসামিরা। খাওয়ার পর অচেতন হয়ে ঘুমাতে থাকেন মফিজুর। তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন মাকসুদা ও সালাউদ্দিন। তারা লাশটি ১০ টুকরা করে একাধিক স্থানে ফেলে দেন।
এই ঘটনায় মফিজুরের ভাই বাদী হয়ে ২০১৮ সালের ২ জানুয়ারি কেরানীগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলাটি তদন্ত করে মাকসুদা ও সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ২১ সেপ্টেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ।
পরের বছরের ৩০ অক্টোবর আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে ১৯ জন সাক্ষীকে আদালতে হাজির করা হয়। আজ রায় ঘোষণা করলেন আদালত।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন ঢাকা জেলা জজ আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর খান মো. জহিরুল ইসলাম।