জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামকে খালাস এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রামে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের মশাল মিছিলে হামলার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আবারও বিক্ষোভ করেছে বাম ছাত্র সংগঠনগুলো।
শুক্রবার (৩০ মে) বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এই বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে ছাত্র ফেডারেশনের ঢাবি শাখার আহ্বায়ক আরমানুল হক বলেন, ৫ আগস্টের পর ঢাবিতে বিভিন্ন প্লাটফর্ম গড়ে উঠেছে। একতার মঞ্চ থেকে শুরু করে একাধিক প্লাটফর্ম। আমরা ৫ আগস্টের আগে এগুলো দেখতে পেতাম না। তাদের ফান্ডিং কোথা থেকে আসছে আমরা বুঝতে পারতাম না। কিন্তু এতটুকু বুঝতে পারি একটা শক্তিশালী দল কাজ করছে।
তিনি বলেন, কয়েক মাস আগে শহীদ মিনারে গণঅধিকার পরিষদের ফারুক হাসানের ওপর হামলা চালায় বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ নামে একটা সংগঠন। আবার ১৫ জানুয়ারি আদিবাসীদের ওপর করে হামলা অন্য একটি প্লাটফর্ম। এটি আসলে কারা করছে? আমরা ধারণা করেছিলাম, শিবিরের সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু তারা আমাদের ওপর মব লেলিয়ে দেয়। এখন দেখা গেলো রাজশাহী ও চট্টগ্রামে তারা হামলা চালায়। এখন আমরা নিশ্চিত শিবিররাই এসব করেছে।
তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পর আমরা বার বার বলেছি শিবিরের পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রকাশ করতে। কিন্তু তারা তা করেনি। ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে তাদের সঙ্গে ওপেন ডিবেট হয়। আমরা প্রশ্ন করেছিলাম যখন আবরারকে হামলা করা হয় তখন আপনাদের অবস্থান কী ছিল। তখন তারা কিছু বলতে পারে না।
আরমান বলেন, শিবিরের নারীদের প্রতি বিশেষ ক্ষোভ রয়েছে। জানুয়ারিতে আদিবাসীদের আন্দোলনে তারা নারীদের লক্ষ্য করে মাথার আঘাত করেছিল। এখন রাজশাহী ও চট্রগ্রামেও তাই দেখতে পাই।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের ঢাবি শাখার আহ্বায়ক মোজাম্মেল হক বলেন, বিগত আমলে আওয়ামী লীগ বিচার বিভাগের ওপর হস্তক্ষেপ করতো। ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে আমরা আশা করি বিচার বিভাগ স্বাধীন হবে। কিন্তু আমরা দেখলাম বিচার বিভাগের ওপর এখনও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ চলছে। বিচার বিভাগের ওপর হস্তক্ষেপ করে এটিএম আজহারুল ইসলামকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে আমরা চেয়েছিলাম গণতান্ত্রিক ক্যাম্পাস নিশ্চিত হবে। কিন্তু ছাত্রশিবিরের হাত ধরে পুনরায় ক্যাম্পাসগুলোতে সন্ত্রাসী রাজনৈতিক পরিস্থিতি তৈরি করছে।
অনতিবিলম্বে সন্ত্রাসী রাজনীতি বন্ধ এবং শিবিরের হামলার বিচারের দাবি জানান মোজাম্মেল হক।
এছাড়াও সমাবেশ করেছে ছাত্র ইউনিয়ন ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট। সমাবেশে ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাহির শাহরিয়ার রেজা বলেন, আমরা এখানে দুটি কারণে দাঁড়িয়েছি। একটি হচ্ছে— রাজশাহী ও চট্টগ্রামে আমাদের বন্ধুদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। হামলা চালিয়েছে একাত্তরের পরাজিত শক্তি ছাত্রশিবির।
আরেকটি হচ্ছে— যুদ্ধাপরাধী জামায়াত নেতা এটিএম আজহারকে যুদ্ধাপরাধের দায় থেকে খালাস করা হয়েছে। কোন প্রক্রিয়ায় খালাস দেওয়া হয়েছে, তা পরিষ্কার না করে সরকারের কর্তাব্যক্তিরা বিচারবিভাগের স্বাধীনতা হিসেবে বিবেচনা করছেন। তাকে বেকসুর খালাস দেওয়ার প্রতিবাদে আমরা সমাবেশ করছি।