গত বছরের জুলাইয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সময় বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) কেবিন ব্লক এলাকায় হত্যাচেষ্টা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে চিকিৎসকসহ আরও ১৯ কর্মীকে বরখাস্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এর আগে গত ৫ জানুয়ারি দুই চিকিৎসকসহ ১৫ জনকে সাময়িক বরখাস্ত করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ওই ঘটনায় দুই দফায় হাসপাতালের ৩৪ জনকে শাস্তি দেওয়া হল।
বিএমইউর (তৎকালীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়) প্রক্টর অধ্যাপক চিকিৎসক শেখ ফরহাদ সোমবার বলেন, ‘সরকার পতনের আগের দিন গত বছরের ৪ অগাস্টে কেবিন ব্লকের সামনে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর এবং একজন ছাত্রকে হত্যাচেষ্টার ঘটনা তদন্তে শৃঙ্খলা কমিটি করা হয়েছিল।’
সেদিন লাঠিসোঁটা নিয়ে ছাত্রজনতার ওপর হামলার প্রমাণ হিসেবে ভিডিওচিত্র, সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ভিডিও ও তথ্য কমিটি হাতে পেয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রক্টর।
তিনি বলেন, ‘২৫ জনের বিষয়ে তদন্ত শেষে কমিটি এই ১৯ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করে। ২৫ জনের ওই গ্রুপের ২ জনের বিরুদ্ধে এর আগে ১৫ জনের সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। চারজনের বিষয়ে শৃঙ্খলা কমিটি এখনও পর্যাপ্ত তথ্যপ্রমাণ পায়নি, তাদের বিষয়ে অধিকতর তদন্তের কথা বলেছে। বাকি ১৯ জনকে বরখাস্তের সুপারিশ করেছে কমিটি। সে অনুযায়ী গত শনিবারের সিন্ডিকেট সভায় তাদের বরখাস্তের বিষয়টি পাস হয়েছে। এ নিয়ে সব মিলিয়ে ৩৪ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হল ‘
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের এক দফা দাবিতে আন্দোলনের অংশ হিসেবে গত বছরের ৪ আগস্ট শাহবাগে জড়ো হয় আন্দোলনকারীরা। ওই দিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পুরান ঢাকার চকবাজার থেকে একদল শ্রমিক লাঠিসোঁটা হাতে শাহবাগে জড়ো হন। এসময় তৎকালীন সামনের দিকে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা স্লোগান দিচ্ছিলেন।
দুই পক্ষ মুখোমুখি হলে আন্দোলনকারীদের একটি অংশ ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এক পর্যায়ে ধাওয়া দিলে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হাসপাতালের ভেতরে চলে যান। পরে আন্দোলনকারীরা হাসপাতালের ফটক ভেঙে ভেতরে ঢুকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দেন।
তখন হাসপাতাল প্রাঙ্গণে অ্যাম্বুলেন্সসহ বেশ কিছু যানবাহন ভাঙচুর করা হয়, পুড়িয়ে দেওয়া হয় কয়েকটি মোটরসাইকেল ও বাস।
সরকার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর ওই ঘটনায় জড়িত বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ নেয়।