বিএনপি নিজেদের সংস্কার প্রস্তাবের বাইরে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় বহু প্রস্তাবের বিষয়ে একমত হয়েছে বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রস্তাবের বাইরে বহু প্রস্তাবে আমরা একমত হয়ে গিয়েছি আলোচনায়। সেটা ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করলে দেখবেন।’
আজ মঙ্গলবার (১৯ জুন) রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্বের অসমাপ্ত আলোচনা শেষে সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
সালাউদ্দিন আহমদ বলেন, তারা অনেক প্রস্তাবের সঙ্গে নীতিগতভাবে, আবার কোনো কোনোটির বিষয়ে আংশিকভাবে একমত হয়েছেন। জুডিশিয়ালি, ম্যাজিস্ট্রেসি, দুদকের ক্ষেত্রে এবং আরও অন্যান্য ক্ষেত্রে একমত হয়েছেন। যেমন নির্বাচনী ব্যবস্থার ক্ষেত্রে বহু বিষয়ে একমত হয়েছেন, যেগুলো তাদের প্রস্তাবের বাইরে ছিল।
প্রধান বিচারপতি নিয়োগসংক্রান্ত বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই নেতা বলেন, ‘বর্তমান সংবিধানে যে বিষয়টা আছে, রাষ্ট্রপতির হাতে সেই ক্ষমতা। রাষ্ট্রপতি স্বাধীনভাবে প্রধান বিচারপতিকে নিয়োগ দিতে পারেন। এখন বিদ্যমান যে অবস্থা, তাতে বাংলাদেশের যেকোনো নাগরিককে প্রধান বিচারপতি বানিয়ে দেওয়ার সুযোগ রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, এটা থাকা ঠিক হবে না। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করার জন্য এ বিষয়ে আমরা একটি রেস্ট্রিকশনে (বিধিনিষেধ) আসতে চাই। রাষ্ট্রপতিকে নির্ধারণ করে দেওয়া হবে, এই এই ক্রাইটেরিয়ার (বৈশিষ্ট্যের) ভিত্তিতে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেবেন।’
দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্টের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্টের ধারণার সঙ্গে আমরা একমত। এটি আমরা আমাদের প্রস্তাবিত ৩১ দফাতেও উল্লেখ করেছি। উচ্চকক্ষের আসনসংখ্যা ১০০ হবে। এটির নাম সিনেট নামকরণ করা হয়েছে, যদিও এটি এখনো ফাইনাল করা হয়নি। ১০০ আসনের বিষয়ে আমাদের প্রস্তাবের সঙ্গে অধিকাংশ রাজনৈতিক দল একমত এবং অধিকাংশ রাজনৈতিক দল দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্টের বিষয়ও একমত। তবে কিছু কিছু রাজনৈতিক দলের এ বিষয়ে আপত্তি আছে। তাদের সংখ্যা হয়তো বেশি নয়।’
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আজকের আলোচনায় জামায়াতে ইসলামী ছাড়া বিএনপি, এনসিপি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), ইসলামী আন্দোলন, নাগরিক ঐক্য, গণ অধিকার পরিষদ, গণসংহতি আন্দোলনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল অংশ নেয়।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী, সফর রাজ হোসেন, বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান।