বিএনপি গণ-অভ্যুত্থানের সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখলের পাঁয়তারা করছে বলে অভিযোগ তুলেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পরে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধিত হওয়া দলের নেতাদের অভিযোগ, বিএনপির অন্তর্কোন্দল থাকায় জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন চায় না দলটি। এ জন্য তারা জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করছে।
আজ বৃহস্পতিবার বিকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তায় এক বিক্ষোভ সমাবেশে এনসিপি নেতারা এ অভিযোগ তোলেন।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) পুনর্গঠন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবিতে এনসিপির যাত্রাবাড়ী জোন শাখা এই সমাবেশের আয়োজন করে।
বিক্ষোভ সমাবেশে এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্যসচিব নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন শুরু থেকেই একটি রাজনৈতিক দলকে খুশি করতে পক্ষপাতমূলক আচরণ করছে। ফ্যাসিবাদী আমলের বিতর্কিত আইনে গঠিত সেই ইসির পুনর্গঠন করতে হবে। ইসিকে জবাবদিহিতে আনার জন্য স্বাধীন সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন করতে হবে।’
সমাবেশে এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব মো. আলাউদ্দিন মন্তব্য করেছেন, বিএনপি ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে নেমেছে। তিনি বলেন, ‘তারা (বিএনপি) বাংলাদেশে আরেকটি ওয়ান ইলেভেন আনতে চায়। ওয়ান ইলেভেনের মাধ্যমে এদেশকে অচল করার পেছনে যে বিচার বিভাগ ও নির্বাচন কমিশন, সেগুলো ঢেলে সাজাতে হবে।’
দলের যুগ্ম মুখ্য সংগঠক আলী নাসের খান বলেন, ‘বিএনপির মতো দায়িত্বশীল বড় দল জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডের বিচার চায়নি; বরং কীভাবে আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন করা যায়, তা নিয়ে তারা সর্বদা ব্যতিব্যস্ত। তারা গণ-অভ্যুত্থানের সরকারকে হটিয়ে নোংরা কায়দায় ক্ষমতা দখল করার পাঁয়তারা করছে।’
আলী নাসের খান আরও বলেন, ‘বিএনপি সংস্কার শুরু হওয়ার আগেই নির্বাচন কমিশনারদের বসিয়েছে, অ্যাটর্নি জেনারেলকে বসিয়েছে। একইভাবে উচ্চ ও নিম্ন আদালত, ব্যুরোক্রেসিসহ অন্য সরকারি গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে নিজেদের লোক বসিয়েছে। নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের কথা বলা হলেও তেমন কোনো পরিস্থিতি এখন নেই। তাই নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে।’
এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক এস এম শাহরিয়ার বলেন, ‘২০২২ সালের কালাকানুনের মাধ্যমে যে ইসি গঠিত হয়েছে, তারা নির্বাচন সংস্কারের প্রতিটি প্রস্তাবকে নাকচ করে দিয়েছে। অর্থাৎ, এই ইসি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ চায় না।’
দলের আরেক যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক খান মুহাম্মদ মুরসালিন বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন এখন বিএনপির পার্টি অফিসে পরিণত হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘জুলাই ঘোষণাপত্র কারা চায় না, এটা সবাই জানে। সরকার ঘোষিত ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে আর ২১ কার্যদিবস বাকি আছে। এর মধ্যে ঘোষণাপত্র জারি না হলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।’
বিক্ষোভ সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন এনসিপির কদমতলী থানার প্রতিনিধি মো. সাদিকুল ইসলাম, রবিউল ইসলাম, যাত্রাবাড়ী থানার প্রতিনিধি লাকি আক্তার, মিরাসাদ হোসেন হিমেল, ওয়ারী থানার প্রতিনিধি রিফাত খান, যাত্রাবাড়ী থানার প্রতিনিধি মো. রিয়াদ প্রমুখ।