রোববার, ১৮ মে ২০২৫, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

মেহেরপুরে গাংনীতে আমের বাজার চাঙ্গা

গাংনী (মেহেরপুর) প্রতিনিধি
  ১৮ মে ২০২৫, ১৩:০৬
মেহেরপুরে গাংনীতে আমের বাজার চাঙ্গা
পাইকারি বাজারে আম। ছবি: যায়যায়দিন

বাজারে আসতে শুরু করেছে মেহেরপুরের আম। জেলায় জেলা প্রশাসন থেকে বেঁধে দেয়া তারিখ অনুযায়ি ১৫ মে বাগান থেকে প্রথম আম পাড়ার পর বাজারে তোলা হয়েছে।

স্থানীয় বাগানের আঁটি, গুটি ও বোম্বাই আম তোলা হলেও পাইকারি আড়ত ও খুচরা দোকানগুলোতে এখনো অন্যান্য জেলার আম বেশি বিক্রি হতে দেখা গেছে।

1

শহরের গাংনী ও বামন্দী বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, মৌসুমের প্রথমে আড়ত ও খুচরা বাজারে যে দরে আম বিক্রি হচ্ছে তা ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে।

গত বছর মৌসুমের প্রথম দিনে আড়তগুলোতে জাতভেদে প্রতি কেজি আম ৬০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৮০ টাকা এবং খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ১০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হলেও এবার পাইকারি ৭০ টাকা থেকে ১০০ টাকা এবং খুচরা বাজারে ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

খুচরা বিক্রেতারা স্থানীয় আড়ত থেকে আম কিনে গাংনী শহর থেকে শুরু করে বিভিন্ন বাজারে তা বিক্রি করেন।

সরেজমিনে ফলের বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতাদের আনাগোনা দেখা যায়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আমের বড় চালানগুলো বাগান থেকে ট্রাকভর্তি হয়ে সরাসরি দেশের বিভিন্ন মোকামে চলে যাচ্ছে।

এ ছাড়া আমের মৌসুম ঘিরে গ্রামে গ্রামে গড়ে উঠেছে অস্থায়ী কিছু বাজার। এ জন্য পাইকারি বাজার জমে উঠতে আরও কয়েক দিন সময় লাগবে। আর গ্রামের লোকজন স্বল্প দামেও হাতের নাগালে আম পাচ্ছেন। দেখে শুনে টাটকা আম কিনতে পারছেন তারা।

মালেক ফল ভান্ডারের স্বত্বাধিকারী আব্দুল মালেক বলেন, জেলায় এবার আমের ফলন ভালো হয়েছে। আমের চাপ বেশি হওয়ায় দাম কম। ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে আছে দাম।

গত বছর শুরুর দিকে বোম্বাই আম প্রতি মণ (৪০ কেজি) ২ হাজার ৪০০ টাকা দরে বিক্রি হলেও এবার তা ১ হাজার ৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আঁটি আমের দাম আরও কম। তাছাড়া দাম কম হওয়ায় এবার বেচাকেনা সন্তোষজনক।

দেশি আঁটির আম প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৬৫ টাকা, বোম্বাই ৭৫ থেকে ৮০ টাকা ও অন্যান্য গাছ পাকা কিছু আম প্রতি কেজি হিমসাগর ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

গতবার সেটির সর্বনিম্ন দাম ছিল ৬০ টাকা। সেটি এখন ১১০ টাকা কেজি। অন্য জেলার বিভিন্ন জাতের আম আগে থেকেই বাজারে এসেছে। তারপরও এলাকার আমের চাহিদা একটু বেশি বলে জানালেন রফিক ফল ভান্ডারের স্বত্ত্বাধিকারী রফিক।

হেমায়েতপুরের খুচরা ফল বিক্রেতা রাজু মিয়া বাজারে সড়কের ধারে টং দোকানে সারা বছর ফল বিক্রি করেন। তাঁর দোকানে বিভিন্ন জাতের আম সাজিয়ে বিক্রি করতে দেখা গেল।

রাজু মিয়া বলেন, ‘কদিন আগেও মানুষ এক/দুই কেজি করে কিনলিউ একন দাম কম হওয়ায় অনেকিই ৫ থেকে ১০ কেজি করেও কেনছে। চেষ্টা করছি অরজিনাল গাচ পাকা আম বিক্রি করার।’ এতে লাভও ভাল হবেনে’।

শিমুলতলার আম ক্রেতা গোলাম মোস্তফা বলেন ‘চলতি মৌসুমে রোদের কারণে আম খুব তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যাবে। তাই আমের স্বাদ নিতে বছরের প্রথম দিন কিছু কিনে নিলাম। কারণ, আগামী দিনে বেশি দাম দিয়েও বাজারে সুস্বাদু আম পাওয়া না-ও যেতে পারে।’ আবার তখন টাটকা আম পাওয়া যাবে নানে। পচা পাচকু আম বেশি দরে কিনি পড়তা হবে নানে। তাই আগে ভঅগেই কিনা ভাল’।

জেলা প্রশাসন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সমন্বয়ে গঠিত কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, জেলায় গত ১৫ মে থেকে মেহেরপুর জেলায় বোম্বাই এবং স্থানীয় জাতের আম সংগ্রহ ও বাজারজাত শুরু হয়েছে। হিমসাগর সংগ্রহ শুরু হবে ২২ মে থেকে। এছাড়াও ল্যাংড়া ৭ জুন, মল্লিকা ১০জুন, আম্রপালি ১৭ জুন ও ফজলি ২৩ জুন সংগ্রহ এবং বাজারজাত করতে হবে।

গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসার এমরান হোসেন বলেন, চলতি মৌসুমে ৯৫০ হেক্টর জমিতে আমের চাষ হয়েছে। ১৪ হাজার ২৫০ মেট্রিক টন আম উৎপাদনের সম্ভাবনা আছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে