বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫, ৩ আষাঢ় ১৪৩২

তহবিল সংকটে জাতিসংঘের বৈশ্বিক সহায়তা 

অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক
  ১৭ জুন ২০২৫, ১৯:২৮
তহবিল সংকটে জাতিসংঘের বৈশ্বিক সহায়তা 
ছবি: সংগৃহীত

তহবিল হ্রাসের কারণে বিশ্বব্যাপী মানবিক সহায়তা কার্যক্রম ব্যাপকভাবে সংকুচিত করতে বাধ্য হচ্ছে জাতিসংঘ। এতে লাখ লাখ মানুষ ভয়াবহ সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে।

গতকাল জাতিসংঘের অফিস ফর দ্য কোঅর্ডিনেশন অব হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাফেয়ার্স (ওসিএইচএ) এক বিবৃতিতে এসব কথা জানিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালের জন্য তারা ২৯ বিলিয়ন ডলার তহবিল জোগাড়ের চেষ্টা করছে। যদিও গত ডিসেম্বরে ৪৪ বিলিয়ন ডলার তহবিলের জন্য অনুরোধ করা হয়েছিল ‘অতি-অগ্রাধিকারমূলক’ আবেদনের মাধ্যমে।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয়বার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের বৈদেশিক সাহায্য ব্যাপকভাবে কমিয়েছে। অথচ দেশটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় ডোনার। এ পরিস্থিতি বিশ্বব্যাপী মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রে বড় সংকট সৃষ্টি করেছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অনুদান হ্রাসের ফলে জরুরি সাহায্য, টিকাদান কর্মসূচি ও এইডস মোকাবেলায় ওষুধ বিতরণের কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। অনিশ্চিত অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে অন্যান্য প্রধান দাতা দেশও তাদের অনুদান কমিয়েছে।

ওসিএইচএ প্রধান টম ফ্লেচার বিবৃতিতে বলেছেন, ‘নিষ্ঠুর তহবিল হ্রাস আমাদের নিষ্ঠুর বিকল্পের মুখোমুখি করেছে। গত বছর যুদ্ধের জন্য আপনারা যা ব্যয় করেছেন তার ১ শতাংশ ছিল আমাদের দাবি। তবে এটি কেবল অর্থের জন্য আবেদন নয়; এটি বৈশ্বিক দায়িত্ব, মানবিক সংহতি ও মানুষের দুর্দশা অবসানে প্রতিশ্রুতির আহ্বান।’

এপ্রিলের শেষ দিকে আফগানিস্তানের কান্দাহারে একটি হাসপাতাল পরিদর্শন করার সময় ফ্লেচার সতর্ক করে বলেছিলেন, ‘সবচেয়ে বেশি বঞ্চিত মানুষের জন্য তহবিল হ্রাস কোনো গর্বের বিষয় নয়...সাহায্য হ্রাসের পরিণতি হলো লাখ লাখ মানুষের মৃত্যু।’

২০২৫ সালের প্রায় ছয় মাস শেষ হতে যাচ্ছে। গত ডিসেম্বরে প্রাথমিকভাবে জাতিসংঘ যে ৪৪ বিলিয়ন ডলার তহবিল চেয়েছিল তার মধ্যে এ পর্যন্ত মাত্র ৫ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার পেয়েছে তারা। চাহিদার তুলনায় এ প্রাপ্তি মাত্র ১৩ শতাংশ।

মূল পরিকল্পনায় ৭০টিরও বেশি দেশকে অন্তর্ভুক্ত করা এবং প্রায় ১৯ কোটি দুর্দশাগ্রস্ত মানুষকে সহায়তা করার লক্ষ্য ছিল। এ পরিকল্পনায় বলা হয়, এর পরও প্রয়োজনে থাকা সাড়ে ১১ কোটি মানুষের কাছে জাতিসংঘ পৌঁছতে পারবে না।

ফ্লেচার গতকাল বলেছেন, ‘অংকের হিসাবটি খুবই নিষ্ঠুর এবং এর পরিণতি হৃদয়বিদারক।’

তিনি আরো বলেন, ‘অনেক মানুষ তাদের প্রয়োজনীয় সহায়তা পাবে না। তবে আমরা যে সম্পদ পাব তা দিয়ে যতটা সম্ভব বেশি জীবন রক্ষা করব।’

ফ্লেচার জানান, এখন সাহায্য এমনভাবে পরিচালিত হবে যাতে তাসবচেয়ে জরুরি প্রয়োজনে থাকা মানুষ এবং স্থানে পৌঁছতে পারে।”চরম বা বিপর্যয়কর পরিস্থিতিতে”থাকা ব্যক্তিদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে।

জাতিসংঘের তরফ থেকে তহবিল হ্রাসের পরিপ্রেক্ষিতে মানবিক সহায়তা কর্যক্রম হ্রাসের ঘোষণা এমন সময় এল যখন সুদান, গাজা, ডিআর কঙ্গো ও মিয়ানমারে মানবিক সহায়তার প্রয়োজন অন্য সময়ের তুলনায় বেড়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে