ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের দাম গ্রাহক পর্যায়ে আরও কমিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। সম্প্রতি বিটিআরসির সিস্টেম অ্যান্ড সার্ভিসেস বিভাগের জারি করা পরিপত্রে এ তথ্য জানা গেছে। আগামী জুলাই থেকে এই দর কার্যকর হবে।
পরিপত্রে বলা হয়েছে, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহারের মূল্য যুক্তিসংগত পর্যায়ে নামিয়ে আনার জন্য একটি বাস্তবসম্মত ও গ্রাহক বান্ধব ইন্টারনেট ট্যারিফ প্রণয়নে সরকারি/বেসরকারি সব ধরনের ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারীদের (আইএসপি) জন্য বিটিআরসি কর্তৃক একটি খসড়া প্রস্তুত করে অনুমোদনের জন্য ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে পাঠানো হয় এবং পরে সরকার কর্তৃক ট্যারিফটি অনুমোদিত হয়।
নতুন দর অনুযায়ী, এখন থেকে ৫ এমবিপিএস সংযোগে ৫০০ টাকার পরিবর্তে ৪০০ টাকা, ১০ এমবিপিএসে ৮০০ টাকার পরিবর্তে ৭০০ টাকা এবং ২০ এমবিপিএস সংযোগে মাসিক ১ হাজার ২০০ টাকার পরিবর্তে ১ হাজার ১০০ টাকা দিতে হবে গ্রাহকদের।
ট্যারিফের শর্তে যা রয়েছে
* বিটিআরসির লাইসেন্সধারী সব সরকারি/বেসরকারি বিভিন্ন ধরনের ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের জন্য উল্লেখিত ট্যারিফটি আগামী ১ জুলাই প্রাথমিকভাবে পাঁচ বছরের জন্য নির্ধারিত থাকবে। পরে নতুন করে ট্যারিফ নির্ধারিত না হলে কমিশনের অনুমোদনক্রমে তা বলবৎ থাকবে। তবে কমিশন বাজার চাহিদা ও গ্রাহক স্বার্থ বিবেচনায় যেকোনো এটা পরিবর্তন করতে পারবে।
* গ্রাহক সেবা ও সেবার মান নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় শর্তসহ কোয়ালিটি অব সার্ভিস অ্যান্ড এক্সপেরিয়েন্সকে বিবেচনায় নিয়ে প্রতিটি সেবার মানদণ্ড নির্ধারণে বর্ণিত গ্রেড এ, বি, সি মোতাবেক বজায় রাখতে বাধ্য থাকবে। সব ধরনের আইএসপির ক্ষেত্রে গ্রাহক পাঁচ দিন অব্যাহতভাবে ইন্টারনেট সেবা বিচ্ছিন্ন থাকলে মাসিক বিল ৫০ শতাংশ দেবে, ১০ দিন অব্যাহতভাবে ইন্টারনেট সেবা বিচ্ছিন্ন থাকলে মাসিক বিলের ২৫ শতাংশ দেবে এবং ১৫ দিন অব্যাহতভাবে ইন্টারনেট সেবা বিচ্ছিন্ন থাকলে ওই মাসে কোনো মাসিক বিল দেবে না।
* সরকার কর্তৃক অনুমোদিত ট্যারিফের আদলে সব লাইসেন্সধারী আইএসপি প্রতিষ্ঠানকে কমিশন হতে প্রয়োজনীয় ট্যারিফ অনুমোদন গ্রহণ করতে হবে। * সরকারের অনুমোদিত ইন্টারনেট স্পিড সর্বনিম্ন সীমা ৫ এমবিপিএস বিদ্যমান রেখে ট্যারিফের তালিকা অনুযায়ী সংযোগ রেশিও ১ দশমিক ৮ আনুপাতিক হারে প্রয়োজনীয় সমন্বয় করে কমিশনের অনুমোদনক্রমে গ্রাহকদের সেবা দেওয়া যাবে। * কমিশন থেকে অনুমোদিত ট্যারিফ চার্জ নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে এবং অনুমোদিত সেবা বা ট্যারিফে কোন ধরনের পরিবর্তন বা সংযোজন গ্রহণযোগ্য নয়। * ট্যারিফের বাইরে অনুমোদন ছাড়া কোনো সেবা পরিচালনা করলে বাংলদেশ টেলিযোগাযোগ আইন অনুযায়ী ওই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কমিশন ব্যবস্থা নেবে।
এর আগে গত ২১ এপ্রিল নতুন তিন স্তরে ইন্টারনেটের দাম কমছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব।
তিনি জানান, ফাইবার অ্যাট হোমের ম্যানেজমেন্ট নিশ্চিত করেছেন যে- আইটিসি পর্যায়ে ১০ শতাংশ, আইআইজি পর্যায়ে ১০ শতাংশ এবং এনটিটিএন বা ন্যাশনাল ট্রান্সমিশন পর্যায়ে ১৫ শতাংশ মূল্য হ্রাস করবেন তারা।
আইএসপি লাইসেন্স প্রাপ্ত কোম্পানিগুলোর অ্যাসোসিয়েশন থেকে পাঁচ এমবিপিএসের পরিবর্তে ৫০০ টাকায় ১০ এমবিপিএস ইন্টারনেট প্রদানের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে।
তারও আগে আন্তর্জাতিক গেটওয়ে পর্যায়ে বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি সকল আইআইজি এবং আইএসপি গ্রাহকদের জন্য ১০ শতাংশ এবং পাইকারি গ্রাহকদের জন্য অতিরিক্ত ১০ শতাংশসহ মোট ২০ শতাংশ দাম কমিয়েছে।