বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫, ১১ আষাঢ় ১৪৩২

অসামঞ্জস্যতা থেকে উত্তরণে পলিসি ডাইভারশন জরুরি: বাণিজ্য উপদেষ্টা

অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক
  ২৫ জুন ২০২৫, ২০:৪১
অসামঞ্জস্যতা থেকে উত্তরণে পলিসি ডাইভারশন জরুরি: বাণিজ্য উপদেষ্টা
ইআরএফ ও পিইবি আয়োজিত সেমিনারে বক্তব্য রাখছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। ছবি: সংগৃহীত

বিগত ১৬ বছরের অর্জিত ক্রিমিনালাইজেশন থেকে উত্তরণে পলিসি ডাইভারশন জরুরি বলে মন্তব্য করেছে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। তিনি বলেন, এ ডাইভারশন করতে গেলে আমাদের কগনিজেন্ট হতে হবে। আমাদের নিয়ামকগুলো সুনির্দিষ্ট করে প্রয়োজনীয় নীতি গ্রহণ করতে হবে।

আজ বুধবার (২৫ জুন) বিকালে ইকোনমিক রিপোটার্স ফোরাম (ইআরএফ) অডিটোরিয়ামে ইআরএফ ও পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের (পিইবি) যৌথ আয়োজনে ‘অটোমোবাইল পলিসি ফর গ্রিন গ্রোথ অ্যান্ড কম্পিটিটিভ ইকোনমি’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের দেশে বাল্ক কার্গো আসে, সেটা সিমেন্ট ক্লিঙ্কার, ফার্টিলাইজার বা ফুড গ্রেইন যার পরিমাণ প্রায় ১০ কোটি টন। সেমিনারে বলা হয়েছে আমাদের জিডিপির প্রায় ২০ শতাংশ লজিস্টিক। আমাদের যে ক্যাশ আউটফ্লো হয় তার সঙ্গে এটাকে কলাবোরেট করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের ক্যাশ আউটফ্লোর একটা বড় অংশ বৈদেশিক মুদ্রায় ব্যয় হয়। যেমন আমরা যে এক্সটার্নাল ফ্রেইট, বিমান ভাড়া, পোর্ট কস্ট পরিশোধ করি তার সবই লজিস্টিক কস্ট।;

‘দুঃখজনক হলেও সত্য আমাদের দেশের লজিস্টিক কস্ট বিশ্বের উন্নত দেশের লজিস্টিক কস্টের চেয়ে বেশি। এ মুহূর্তে আমাদের দেশে একচল্লিশ বিলিয়ন কিলোমিটার টন লজিস্টিক প্রয়োজন আছে। ২০৪০ সালে এটা ৯ গুণ বেড়ে ৩০০ বিলিয়ন কিলোমিটার টনে রূপান্তরিত হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের অর্থনীতির মোটাদাগে নিয়ামকগুলোর মধ্যে কৃষি, শিল্প এবং সেবা অন্যতম। এসব কিছুর প্রাইমারি এনাবলার হচ্ছে লজিস্টিক। এর সঙ্গে ইউটিলিটি, গ্যাস, বিদ্যুৎ ও লেবার প্রডাক্টিভিটি।

এগুলোকে যদি সমন্বিত করি তাহলে দেখি আমাদের দেশের ভোগ্যপণ্যের বাজার বা খাদ্যপণ্যের বাজার ১৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।’

বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, আমরা যদি ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট চিন্তা করি আমাদের দেশের যেসব স্থানের নাম গঞ্জ দিয়ে আছে সেটা সিরাজগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ বা নারায়ণগঞ্জ হোক এগুলো ছিল আমাদের দেশের লজিস্টিক হাবস।

পৃথিবীতে এমন দেশ আর আছে কিনা জানা নেই, যেখানে দুইশর অধিক নদী আছে বলে যোগ করেন তিনি।

শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, আমাদের ১৭/১৮ কোটি জনসংখ্যার দেশ। কোনো খনিজ সম্পদ নেই, আছে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড। এ বিপুল সংখ্যক জনসংখ্যা খুবই ভাইব্রেন্ট ও প্রডাক্টিভ।

এটাকে যদি আমরা ব্যবহার করি, তাহলে লজিস্টিক ক্যাপাসিটি ও শ্রমশক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে যদি শ্রমের উৎপাদনশীলতা বাড়াতে পারি তাহলে একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে।

বাজেটে আমাদের নীতির একটি ম্যানুফেস্টেশন থাকে উল্লেখ করে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, সেখানে অটোমোবাইল একটি ছোট অংশ হলেও খুব গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

এক সময় গাড়ি উৎপাদনের নামে পুরো বডি বিদেশ থেকে এনে চারটা চাকা লাগিয়ে প্রশংসা নেয়া হয়েছে। বিগত ১৬ বছরের সেসব অসামঞ্জস্যতা উত্তরণ করতে এখন সুষ্ঠু নীতি করতে হবে।

সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির চেয়ারম্যান আবু মমতাজ সাদ উদ্দিন আহমেদ।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মাশরুর রিয়াজ। প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিক্যালস ইম্পোর্টার্স অ্যান্ড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট আবদুল হক, বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের প্রেসিডেন্ট আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী, উত্তরা মোটরসের চেয়ারম্যান মতিউর রহমান ও ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সভাপতি রিজওয়ান রহমান।

অর্থ ও বাণিজ্যবিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সভাপতি দৌলত আকতার মালা অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ইআরএফের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে