বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

হাবিপ্রবি উদ্ভাবিত ড্রায়ার স্থাপিত মিল উদ্বোধন করলেন নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী

হাবিপ্রবি প্রতিনিধি
  ১৯ মে ২০২৩, ১৮:০৯

বেড়েই চলেছে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (হাবিপ্রবি) উদ্ভাবিত HSTU মাল্টি ক্রপ ড্রায়ারের জনপ্রিয়তা। এরই ধারাবাহিকতায় দিনাজপুরের বিরল উপজেলার জগতপুর এ HSTU মাল্টি ক্রপ ড্রায়ার মেশিন দিয়ে স্থাপিত তৃতীয় মিল হিসেবে যাত্রা শুরু করছে রিচ ফিড এন্টারপ্রাইজ মিল।

শুক্রবার (১৯ মে) দুপুর ২ টায় রিচ ফিড এন্টারপ্রাইজের গ্রেইন ড্রায়ার মিলটির কার্যক্রম উদ্বোধন করেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি। এসময় উপস্থিত ছিলেন ড্রয়ারের উদ্ভাবক দলের প্রধান হাবিপ্রবি ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাত হোসেন সরকার এবং সাথে ছিলেন তার ছাত্র ও গবেষণা দলের অন্যতম প্রধান রিসার্চ অ্যাসিস্টেন্ট ঢাকা ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি (ডুয়েট) এর ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. হাসান তারেক মন্ডল। আরো উপস্থিত ছিলেন বিরল উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা, ভূমি সহকারী কমিশনার, কৃষি অফিসার, বিরল পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদকসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

উদ্ভাবক দলের সূত্রে জানা যায়, মিল টি দিয়ে প্রতিদিন ৩ থেকে ৪ ব্যাচে, শস্যের আদ্রতা ভেদে ৪০ থেকে ৫০ টন শস্য বিশেষ করে ধান, ভুট্টা শুকনো যাবে। কেজি প্রতি মাত্র ৫০ থেকে ৭০ পয়সা খরচে ফসলের আদ্রতা শুকিয়ে ১৩-১৪ শতাংশে আনা সম্ভব। ধানের তুষ পুড়িয়ে চালিত সাইক্লোনিক ফারনেস দিয়ে চালানো ড্রায়ারটি একই সাথে পরিবেশ বান্ধব ও জ্বালানি সাশ্রয়ী।

রিচ ফিড এন্টারপ্রাইজ মিলের স্বত্বাধিকারী মো. রাফিউ মোর্শেদ (রোমান) ড্রায়ার নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, গবেষকদল, এলাকাবাসী ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সহযোগিতা ও পরামর্শ পেলে মিলটি দিয়ে ধান ভুট্টা শুকানোর কাজ সফলতার সাথে চালানো সম্ভব। এতে করে এলাকার কৃষকরা তাদের উৎপাদিত শস্য নায্যমূল্যে বিক্রয় করতে পারবে।

HSTU মালটিক্রপ ড্রয়ারের উদ্ভাবকদলের প্রধান আনন্দ প্রকাশ করে বলেন, এই ড্রায়ারটি সম্প্রতি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিল্প মন্ত্রণালয়ের ডিপার্টমেন্ট অব পেটেন্ট ডিজাইন এন্ড ট্রেডমার্কস হতে পেটেন্ট প্রাপ্ত হয়েছে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় প্রযুক্তির সম্প্রসারণ হলে দেশের বিভিন্ন এলাকায় যে সকল চাতাল মিল প্রায় বন্ধ হতে চলেছে এমনকি এলএসডি/সিএসডি গদাউনে বসানো হলে স্বল্প খরচে অতি অল্প সময়ে শস্য শুকিয়ে গুদামজাত করা সম্ভব।এতে কৃষক নায্যমূল্য পাবে এবং লাভবান হবে সেই সাথে সরকারি খাদ্য শস্য সংগ্রহ অভিযান সফল হবে। আমাদের এই গবেষণায় অর্থায়ন ও সার্বিক সহযোগিতার করার জন্য কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশন (কেজিএফ) এর প্রতি ও হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. কামরুজ্জামান স্যারসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি কৃতজ্ঞ। পরবর্তীতে তিনি কৃষি মন্ত্রণালয় ও খাদ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে অনুরোধ করেন যাতে এই উদ্ভাবন দেশের প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকের দৌড় গোড়ায় ছড়িয়ে দেওয়া যায়।

ড্রায়ার উদ্বোধনের সময় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি বলেন, এই ড্রায়ারের স্থাপন আমাদের প্রান্তিক অঞ্চলের মানুষদের জন্য আশীর্বাদ স্বরূপ কারণ বোরো মৌসুমে বিরূপ আবহাওয়ার কারণে মানুষ শস্য ভালোভাবে শুকাতে পারে না। এখন এই এলাকার কৃষক কম সময়ে স্বল্প খরচে ধান চাল শুকাতে পারবে এবং নায্যমূল্যে বিক্রয় করতে পারবে। আর বাংলাদেশ সরকারও দীর্ঘদিন কৃষকের খাদ্য শস্য সংরক্ষণ করতে পারবে। পরিশেষে এই যুগান্তকারী উদ্ভাবনের জন্য হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক প্রফেসর ড. সাজ্জাত হোসেন সরকার ও তার দলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

যাযাদি/ এসএম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে