সোমবার, ০২ জুন ২০২৫, ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

জবি শিক্ষকের সাথে প্রধান প্রকৌশলীর অসদাচরণ, ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস উপাচার্যের

জবি প্রতিনিধি
  ৩১ মে ২০২৫, ১৮:৪২
জবি শিক্ষকের সাথে প্রধান প্রকৌশলীর অসদাচরণ,  ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস উপাচার্যের
ছবি: যায়যায়দিন

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড.নাছির আহমাদের সাথে অসদাচরণের অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে। এবিষয়ে গত বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট অভিযোগ দিয়েছেন ওই শিক্ষক। আজ শনিবার (৩১ মে) বিষয়টি জানা যায়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গতকাল বুধবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্ত চত্বর প্রাঙ্গণে ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড.নাছির আহমাদের সাথে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ এবং বাকবিতন্ডা শুরু করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারী।

1

প্রত্যক্ষদর্শী এক শিক্ষার্থী ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, শান্ত চত্বরে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রের সাথে গল্প করছিলেন ওই শিক্ষক নাছির আহমাদ। এই সময়ে এসে উপস্থিত হন প্রধান প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারী। কথা বলার এক পর্যায়ে শিক্ষক নাছির আহমাদ স্যার প্রধান প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবিত সেকেন্ড অডিটরিয়ামের কাযক্রম সম্পর্কে জানতে চান।

এসময় তিনি নাছির স্যারের সাথে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচারণ শুরু করেন।

ওই শিক্ষক জানায়, তিনি প্রশাসনিকভাবে দ্বিতীয় অডিটরিয়ামের দেখভালের দায়িত্বে আছেন । তিনি ওই কমিটির একজন সদস্য। তবে তাকে কিছু না জানিয়েই প্রধান প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারী অডিটরিয়ামের আসবাবপত্র ও অন্যান্য দ্রব্যসামগ্রী ক্রয়ের জন্য টেন্ডার আহ্বান করেন।

এসময় ওই শিক্ষক ওই প্রধান প্রকৌশলীকে বলেন টেন্ডারটি ছাড়ার আগে আপনি অন্তত আমাকে জানাতে পারতেন, একটা মিটিং কল করতে পারতেন। কিন্তু আপনি আমাকে কিছুই বললেন না। কিছুই জানালেন না। এই সময়ে প্রধান প্রকৌশলী উচ্চস্বরে উত্তর দেন আমি কি আপনার দ্বারে দ্বারে গিয়ে ঘুরবো আপনাকে জানানোর জন্য? এইসময়ে ঐ শিক্ষক বলেন আমিতো আপনাকে দ্বারে দ্বারে ঘুরতে বলিনি। আপনি তো একবার জানাতে পারতেন।

এর উত্তরে প্রধান প্রকৌশলী বলেন যাকে জানানোর তাকে জানিয়েছি। এত কথার কৌফিয়ত দিতে পারবো না। আপনিতো ঐ কমিটির সদস্য ছিলেন না, পরে আপনাকে নেয়া হয়েছে।কথা বলার এক পর্যায়ে ওই কর্মকর্তা শিক্ষককে বলেন, আমি আমার মতো করছি যা করার করেন। সে এই কথাগুলো খুবই উচ্চস্বরে এবং বিকৃতভাবে বলছিলো।এসময় আশেপাশে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা হতবাক হয়ে বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করেন।

উপস্থিত এক শিক্ষার্থী বলেন, উনি যেভাবে ওই শিক্ষকের সাথে আচরণ করলো ভিসিও হয়তো এভাবে গরম দিয়ে কথা বলে না। ওই শিক্ষক ভদ্র বিধায় ওনাকে না মেরে ছেঁড়ে দিয়েছে। তবে ঘটনাটি খুবই দৃষ্টিকটু।

এঘটনায় ভুক্তভোগী স্বীকার ওই শিক্ষক নাছির আহমাদ বলেন, আমি খুবই ভদ্রভাবে তাকে বলি আপনিতো এটা করলেন আমাকে জানালেনও না। তবে তিনি আমার সাথে যে আচরণ করলেন তা প্রত্যাশিত নয়। খুবই লজ্জাজনক। একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকের সাথে এমন আচরণ করতে পারেনা। আওয়ামীলীগের আমলেও কোন প্রশাসনিক কর্মকর্তা আমার সাথে এত খারাপ আচরণ করেনি।

এঘটনা সম্পর্কে প্রশাসনকে লিখিত কোনো অভিযোগ দেওয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি মৌখিকভাবে বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানিয়েছি। ঘটনার বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, সামান্য ভুল বুঝাবুঝি হয়েছিলো মিটিয়ে নিয়েছি। এটি সমাধান হয়েছে। আপনি এমন আচারণ করতে পারেন কিনা এই প্রশ্ন করলে তিনি ফোন কেটে দেন।

এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছ উদ্দিন বলেন, বিষয়টি জেনেছি। এটির মিমাংসা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড.রেজাউল করিম বলেন, এবিষয়টা আমার কানে এসেছে, বেশি কিছু জানি না। বিস্তারিত জানতে হবে। এবিষয়ে কথা বলবো। এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে