শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ফরিদগঞ্জে ঠান্ডা-গরমে সর্দি-কাশিতে ভুগছেন সাধারণ মানুষ

ফরিদগঞ্জ(চাঁদপুর) প্রতিনিধি
  ২১ মার্চ ২০২৩, ১৪:৪৪

মাঘ মাসকে বিদায় জানিয়ে শেষ হয়েছে ফালগুন মাস। চলছে চৈত্র, তবুও রাতে ঠান্ডা আর দিনে প্রচন্ড গরম, ঠান্ডা গরমের বৈরী তাপমাত্রাকে স্বাস্থ্যের সাথে মানিয়ে নিতে না পেরে সিজনাল ফ্লু দেখা দিয়েছে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলা জুড়ে। সর্দি-কাশিতে ভুগছেন এ অঞ্চলের মানুষজন। তবে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিদিনই বাড়ছে রোগীদের ভিড়। অতিরিক্ত রোগী সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন গড়ে ৩৫০ থেকে ৪০০ রোগী হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এর মধ্যে ৫০ ভাগই শিশু। অথচ এক মাস আগেও ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন চিকিৎসা নিয়েছে ১৬০ হতে ১৮০ রোগী। বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি আছে ৪৫ জন।

বর্হিবিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা আব্দুল কাইয়ুম (৫০) বলেন, সকাল সাড়ে ১০ টায় আসছি হাসপাতালে, এখন ১২ টা বাজে সিরিয়ালে আছি। অনেক রোগী আসছে আগে কখনো এতোরোগী হাসপাতালে দেখি নাই। যতক্ষনই হউক ডাক্তার দেখিয়ে বাড়িতে যাবো।

আনোয়ার হোসেন (৪০) নামের আরেক রোগী বলেন, ফাগুন মাস এসেছে তবুও রাতে প্রচণ্ড ঠান্ডা নামে। দিনের বেলা আবার গরম লাগে। এ নিয়ে অসহনীয় যন্ত্রণা ভোগ করছি। শীতের কাপড় নিয়ে বেরোলে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আবার খুলতে হয়। কয়েকবার অসুস্থ্য হয়েছি। এখন সর্দি-কাশি নিয়ে হাসপাতালে আসছি চিকিৎসা নিতে।

উপজেলার ভাটিরগাঁও থেকে চিকিৎসা নিতে আসা মিনারা বেগম (৩৫) বলেন, গত ৫ দিন ধরে আমার ছেলের জ্বর গ্রামের ঔষধ কিনে খাওয়াছি কমে নাই, তাই সরকারি হাসপাতালে নিয়ে এসে ভর্তি করিয়েছি। আগের চেয়ে একটু সুস্থ্য আছে এখন।

ওষুধ ব্যবসায়ী টিপু পাঠান বলেন, রাতে পড়ছে শীত দিনে গরম। এ কারনে গত কয়েকদিন ধরে শ্বাসকষ্ট ও সর্দি-কাশি রোগের ওষুধ বেশি বিক্রি হচ্ছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) মুজাম্মেল হোসেন বলেন, ঠান্ডাজনিত রোগে প্রতিদিন গড়ে ৩৫০ থেকে ৪০০ জন রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। এদের মধ্যে শিশু রোগীর সংখ্যা বেশি। যাদের অবস্থা জটিল, তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হচ্ছে। বাকিদের চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে।

শিশুদের সুরক্ষায় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আশরাফ আহমেদ বলেন, সম্প্রতি এ হাসপাতালটি ৫০ শয্যায় উন্নতি হয়েছে। আমাদের চাহিতা মত ডাক্তার, সেবিকা থাকাতে আগের তুলনায় চিকিৎসা সেবার মানও বেড়েছে। তাই এখন আর তেমন প্রাইভেট হাসপাতালে রোগী না গিয়ে সরকারী হাসপাতালে আসছে। আর এমনিতে সিজনাল ফ্লু আর দিনে গরম রাতে শীতের কারনে হঠাৎ সর্দি-কাশি, জ্বর, নিউমোনিয়া রোগী বাড়ছে। আমরা নিষ্ঠার সাথে রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছি।

রোগীদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, শিশুদের অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে। শিশুর নিয়মিত কাপড় পরিবর্তন করে সব সময় পরিচ্ছন্ন ও জীবাণুমুক্ত রাখতে হবে। তরল খাবারের পাশাপাশি সবজি ও আঁশজাতীয় খাবার এবং ভিটামিন সি-জাতীয় খাবার খাওয়ানো উচিত। শিশুদের যেকোনো সমস্যায় দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে