আন্তর্জাতিক

ইসরাইলের অধিকৃত সিরিয়ার গোলান মালভূমিতে রকেট হামলায় ১২ শিশু-কিশোর নিহত হওয়ার পর দেশটির প্রতিশোধমূলক হামলা সামলানোর প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে লেবানন।

গোলানে হামলার জন্য লেবাননের রাজনৈতিক ও সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহকে দায়ী করেছে ইসরাইল। এদিকে, লেবাননের জনদুর্ভোগ মোকাবিলা বাহিনী জানিয়েছে, সোমবার লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে একটি আবাসিক এলাকায় ইসরাইলি ড্রোন হামলায় দুইজন নিহত ও আরও তিনজন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে একজন অল্প বয়সি শিশু রয়েছে। তবে নিহতরা হিজবুল্লাহর যোদ্ধা না বেসামরিক, সে বিষয়ে কিছু জানায়নি তারা। তথ্যসূত্র : রয়টার্স, এএফপি

আইডিএফ (ইসরাইলের সামরিক বাহিনী) জানিয়েছে, একটি ড্রোন লেবানন থেকে সীমান্ত অতিক্রম করে পশ্চিম গ্যালিলি এলাকায় প্রবেশ করার পর তাদের বিমান প্রতিরক্ষা বাহিনী সেটি ভ‚পাতিত করেছে। অন্যদিকে, ইসরাইলের পাল্টা হামলার আশঙ্কায় বৈরুত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে অনেকগুলো ফ্লাইট বাতিল ও বেশ কিছু ফ্লাইটের উড্ডয়নের সময় পিছিয়ে দিয়েছে এয়ারলাইন্সগুলো।

জার্মানভিত্তিক এয়ারলাইন্স প্রতিষ্ঠান ‘লুফথানসা’ গ্রুপ সোমবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বৈরুতে থেকে বের হওয়ার ও বৈরুতে পৌঁছানোর পাঁচটি রুট সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে তারা। গ্রুপের তিন সংস্থা-সুইস ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স, ইউরোউইংস এবং লুফথানসার ফ্লাইটগুলো ৩০ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত রাখা হবে।

এদিকে, বৈরুতের ফ্লাইট তথ্য বোর্ড ও ফ্লাইট ট্র্যাকিং ওয়েবসাইট ফ্লাইটরেডার২৪ জানিয়েছে, টার্কিশ এয়ারলাইন্স রোববার রাতের দুটি ফ্লাইট বাতিল করেছে। এ ছাড়া তুরস্কের বাজেট এয়ারলাইন্স সানএক্সপ্রেস, এজেট, গ্রিসের এজিয়ান এয়ারলাইন্স, ইথিওপিয়ান এয়ার ও মিইএ সোমবার বৈরুতে অবতরণ করার কথা ছিল এমন বেশ কয়েকটি ফ্লাইট বাতিল করেছে।

এদিকে, রোববার রাতে ইসরাইলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকারকে গোলান মালভূমি হামলার জবাব ‘কখন ও কীভাবে’ দেওয়া হবে, সে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অনুমতি দিয়েছে। রোববার হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে নেতানিয়াহুর মন্ত্রিসভার সদস্যরা জরুরি অধিবেশনে বসেন। ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় একটি সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলেছে, ‘মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা প্রধানমন্ত্রী এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রীকে হিজবুল্লাহ সন্ত্রাসী সংগঠনের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়ার পদ্ধতি ও সময় সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা দিয়েছেন।’

গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই গত ৯ মাস ধরে সীমান্ত অঞ্চলে হিজবুল্লাহ ও ইসরাইল পরস্পরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি হামলা চালিয়ে আসছে। এর মধ্যে ইসরাইল অধিকৃত গোলান মালভূমিতে চালানো হামলাই সবচেয়ে প্রাণঘাতী হয়েছে। এর ফলে ইসরাইল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে বড় ধরনের সংঘাত শুরু হয়ে যাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

ওই হামলার জবাবে ইসরাইল কী ধরনের পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে, তাৎক্ষণিকভাবে এর কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। দেশটির সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক ‘ইয়েদিওথ আহরোনোথ’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে, ইসরাইলের জবাব ‘সীমিত কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ’ হবে। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, হিজবুল্লাহর অস্ত্রাগারগুলো বা উচ্চপর্যায়ের কমান্ডারদের লক্ষ্য করে হামলা চালানো হতে পারে।

যাযাদি/ এসএম