রোববার, ০১ জুন ২০২৫, ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

প্রবাসীদের আরও সমর্থন চাইলেন ড. ইউনূস

টোকিওতে প্রবাসীদের সঙ্গে মতবিনিময়
যাযাদি ডেস্ক
  ৩০ মে ২০২৫, ১৯:৩৭
প্রবাসীদের আরও সমর্থন চাইলেন ড. ইউনূস
টোকিওতে বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত প্রবাসীদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা। ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, যখন তারা (আওয়ামী লীগ সরকার) চলে গেছে, কোষাগার খালি করে গেছে, ব্যাংকগুলো খালি করে গেছে। ব্যাংকের সব টাকা নিয়ে গেছে। রেমিট্যান্স না আসলে আমরা বাঁচতে পারতাম না। সেই দুর্যোগের ব্যবস্থা থেকে আমরা ধীরে ধীরে আসছি। আপনাদের (প্রবাসীদের) সমর্থন না পেলে, সাহায্য না পেলে বাংলাদেশের ঘুরে দাঁড়ানোর আর সুযোগ ছিল না।

শুক্রবার (৩০ মে) টোকিওতে বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত প্রবাসীদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

1

ড. ইউনূস বলেন, এখন ঘুরে দাঁড়িয়েছে, আপনাদের এই সমর্থন আরও লাগবে। যাতে আপনারা যেসব কাজের কথা বললেন, সেগুলো আরও সুন্দরভাবে করে ফেলতে পারি। এতগুলো বিষয় আমাদের সামনে এসে গেছে— কোনটা রেখে কোনটা করবো, তা নিয়ে সমস্যায় আছি। আমরা খোঁজ নিবো যাতে সব সমস্যার সমাধান হয়।

তিনি বলেন, আজকে এখানকার একটি কোম্পানি খোঁচা দিয়ে কথা বললো— টাকা দিচ্ছি না। আমরা পরিশোধ করতে পারছি না। আমরা বললাম, ভাই একটু সময় দেন। আমরা টাকা জোগাড় করি, অনেকগুলো তো দিয়ে দিয়েছি।

কাজেই এক পয়সাও মার যাবে না। তারা আশ্বস্ত হয়েছে কারণ আমরা পরিশোধ করে আসছি। বহু দেনা ছিল আমাদের।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ভবিষ্যতে আমাদের অংশ আমরা অবশ্যই করবো, কিন্তু আপনাদের অংশ জোরদার করতে হবে। কারণ এখানে আপনারা আছেন, ব্যবসা কীভাবে বাড়াতে হবে, আপনাকে দেখতে হবে। দেশ থেকে বসে আমরা কেউ ব্যবসার কথা বলতে পারবো না।

একজন ছাত্র এখানে বললো— দেশের পরিস্থিতি ঠিক হলে দেশে যাবো, একজনকে দেশে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমরা সারা দেশ পাল্টে ফেলতে পারবো না, যেভাবে আছে ওভাবেই যেতে হবে। ওইভাবে গিয়ে দেশ মেরামত করতে হবে। কাজেই এখান থেকে এভাবে বললে হবে, আমি একজন দেশের নাগরিক। নাগরিক হিসেবে যখন দেখছি যে এটি ঠিক হচ্ছে না, নাগরিক হিসেবে দায়িত্ব নিতে হবে— আমি দায়িত্ব পালন করবো।

তিনি আরও বলেন, সংশোধনের জন্য সারা দেশের প্রয়োজন নেই, একজন দাঁড়ালেই হয়। কাজেই মনে করার কিছু নাই একা কী করবো। একজন থেকে শুরু হয় সবকিছু, এই যে এতো বড় আন্দোলন হলো, শুরুতেই এক-দুজনই ছিল। বাড়তে বাড়তে আজকে পুরো দেশে বেড়েছে। যে ছাত্ররা প্রাণ দিলো, তাদের যে স্বপ্ন তা কীভাবে আমরা বাস্তবায়ন করি, সেই বাস্তবায়নের অংশীদার হতে হবে আমাদের।

কাজেই সব মিলিয়ে একসঙ্গে আমাদের কাজ করতে হবে। এতে সুবিধা হলো জাপান সরকারের ওপর প্রভাব বিস্তার করা। এই যে নতুন লোক নিচ্ছে, ভাষা শেখা থেকে শুরু করে কীভাবে কী করা যায়, কারণ আমাদের যেই সুবিধা আসে সেটাকে উল্টো দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা থাকে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, উল্টো দিকে নিয়ে বাজার নষ্ট করে ফেলে। জাপানিরা যদি দেখে তাহলে কিন্তু আসতে দিবে না। এরকম হয়েছে, আমি ব্যক্তিগতভাবে জানি, সব লোক নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। যখন তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসলাম, তারা বললো, তোমাদের সবকিছু ভুয়া। এই যে কাগজ, নাম, পাসপোর্ট সব ভুয়া। এই ভুয়া লোকের সঙ্গে কীভাবে কাজ করবে।

ফলে দেশ থেকে লোক নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। আমাদেরকে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। লুতফে সিদ্দিকীকে আমি এই কাজে লাগিয়ে রেখেছিলাম, এখানে কী সমস্যা কীভাবে দরজা খুলতে পারে। সবার সঙ্গে আলাপ করে বলা হলো অতীতে ভুল হয়েছে, আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে ভুল সংশোধন করে দেওয়া। বহু কষ্ট করে সেই দরজা খুলতে শুরু করেছে। এই হচ্ছে আমাদের জন্য মুশকিল, যেটাতে হাত দেই ভেজাল, যেটাতে হাত দেই ভুয়া।

কাজেই এখন যে এখানে লোক আনার রাস্তা শুরু হলো, আমার বড় সন্দেহ হচ্ছে— এখানেও ভুয়া ঢুকে পড়বে। ভুয়া লোক ঢুকে এই জাপানি সরকারের মধ্যে এমন মেজাজ খারাপ করবে, তারপর বলবে বাদ দাও। আমরা তাদের আজকে বুঝিয়েছি— আমাদের ছেলে মেয়েরা অনেক সুন্দর করে কাজ করে, তারা অনেক নির্ভরযোগ্য, তারা অন্য দেশেও কাজ করছে ,তাদের নিলে ভালো হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে