রোববার, ০১ জুন ২০২৫, ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে গাজার শতভাগ বাসিন্দা: জাতিসংঘ

যাযাদি ডেস্ক
  ৩০ মে ২০২৫, ২০:০৮
দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে গাজার শতভাগ বাসিন্দা: জাতিসংঘ
খাদ্য সংকটে চরম ঝুঁকির মুখে গাজার বাসিন্দারা।ছবি: সংগৃহীত

জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয় অফিস (ওসিএইচএ)-এর একজন মুখপাত্র বলেছেন, গাজা পৃথিবীর ‘একমাত্র সংজ্ঞায়িত অঞ্চল’, যেখানকার সমস্ত জনসংখ্যা দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে রয়েছে।

শুক্রবার বার্তা সংস্থা এএফপি এ তথ্য জানায়।

1

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওসিএইচএ’র মুখপাত্র জেন্স লারকে বলেন, ‘গাজা পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষুধার্ত স্থান। এটিই একমাত্র সংজ্ঞায়িত অঞ্চল, একটি দেশ বা দেশের মধ্যে সংজ্ঞায়িত একটি ভূখণ্ড, যেখানে সমগ্র জনসংখ্যা দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে। এখাঙ্কার ১০০ শতাংশ জনসংখ্যা দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে রয়েছে’।

এদিকে গাজায় চলমান ভয়াবহ মানবিক সংকটে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে থাকা ইসরাইলের প্রতি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ।

বলেছেন, ‘গাজা উপত্যকার মানবিক পরিস্থিতি যদি অবিলম্বে উন্নত না হয়, তাহলে ইউরোপীয় দেশগুলোর উচিত ইসরাইলের বিরুদ্ধে সম্মিলিত অবস্থান আরও কঠোর করা’।

ম্যাক্রোঁ বলেন, ‘আমাদের সামনের কয়েকটা ঘণ্টা ও দিনের মধ্যেই কাজ সারতে হবে।’

তার ভাষায়, ‘ইসরাইল যদি যথাযথ প্রতিক্রিয়া না দেখায়, তাহলে আমাদেরকে মানবাধিকার রক্ষার ধারণাকে ত্যাগ করে নিষেধাজ্ঞা আরোপের পথেই যেতে হবে’।

এ সময় গাজায় খাদ্যবাহী ট্রাক লুটপাটের ঘটনা উল্লেখ করে ম্যাক্রোঁ বলেন, এটি মানবিক সহায়তা বণ্টনের গভীর সমস্যার প্রমাণ।

অন্যদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার ইসরাইলের সঙ্গে একটি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। প্রস্তাবটি ইতোমধ্যেই ইসরাইল গ্রহণ করেছে। তবে সরাসরি প্রত্যাখ্যান না করলেও প্রস্তাবটি আলোচনাধীন রয়েছে বলে জানিয়েছে হামাস।

একইসঙ্গে এ প্রস্তাবের বর্তমান রূপ গাজায় ‘হত্যা ও দুর্ভিক্ষের ধারাবাহিকতা’ ছাড়া আর কিছুই বয়ে আনবে না বলেই অভিযোগ করেছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠনটি।

রয়টার্স জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের গোপন এক পরিকল্পনা অনুযায়ী গাজায় ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। যার প্রথম সপ্তাহেই ২৮ জন ইসরাইলি (জীবিত ও মৃত) জিম্মির মুক্তির বিনিময়ে ১,২৩৬ জন ফিলিস্তিনি বন্দি ও ১৮০টি লাশ ফিরিয়ে দেওয়া হবে।

প্রস্তাবিত সর্বশেষ এ পরিকল্পনাটির ব্যাপারে খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং মধ্যস্থতাকারী মিশর ও কাতারের গ্যারান্টিতে দিয়েছে বলেও উল্লেখ করেছে রয়টার্স।

এতে বলা হয়েছে, হামাস যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হলেই গাজায় মানবিক সহায়তা পাঠানো শুরু হবে।

একই সঙ্গে মানবিক ত্রাণ সহায়তা পৌঁছাবে জাতিসংঘ, রেড ক্রিসেন্ট ও অন্যান্য অনুমোদিত সংস্থার মাধ্যমে।

ইসরাইল ইতোমধ্যেই এ প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস।

তবে হামাস নেতা সামি আবু জুহরি বলেন, এই প্রস্তাবে ইসরাইলের দৃষ্টিভঙ্গির পুরো প্রতিফলন ঘটেছে। তবে এতে যুদ্ধ শেষ, সেনা প্রত্যাহার কিংবা মানবিক সহায়তা প্রবেশের কোনো নিশ্চয়তা নেই। যেগুলো হামাসের প্রধান দাবি।

এদিকে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে অব্যাহত ইসরাইলি আগ্রাসনে গাজায় এ পর্যন্ত ৫৪,২০০-এরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

তবে গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস তাদের মৃতের সংখ্যা ৬১,৭০০-এরও বেশি আপডেট করেছে। জানিয়েছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে নিখোঁজ হাজার হাজার মানুষ মৃত বলে ধারণা করা হচ্ছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে