ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (এফএফসি) পরিচালিত ত্রাণবাহী জাহাজ ‘ম্যাডলিন’ ইসরায়েলের বন্দরে নেয়ার পর এতে থাকা ১২ মানবাধিকারকর্মীকে দেশটির প্রধান বিমানবন্দরে হয়েছে।
ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ম্যাডলিন থেকে আটক ১১ জন কর্মী এবং একজন সাংবাদিককে ইসরায়েল থেকে তাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরে নেয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে কয়েকজনকে "আগামী কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পাঠানো সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে।"
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, "যারা নির্বাসন নথিতে স্বাক্ষর করতে এবং ইসরায়েল ত্যাগ করতে অস্বীকৃতি জানাবে, তাদের নির্বাসন অনুমোদনের জন্য ইসরায়েলি আইন অনুসারে বিচারিক কর্তৃপক্ষের সামনে হাজির করা হবে"।
ম্যাডলিনে জোরপূর্বক আটককৃতদের প্রতিনিধিত্বকারী আইনি কেন্দ্র আদালাহ জানিয়েছে, জাহাজের ক্রুদের "বর্তমানে বেন গুরিওন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের একটি আটক কেন্দ্রে রাখা হয়েছে"।
এর আগে স্থানীয় সময় সোমবার রাতে ১২ জন মানবাধিকারকর্মীসহ জাহাজটি ইসরায়েলের আশদাদ বন্দরে নিয়ে যায় দেশটির নৌবাহিনী। জাহাজটিতে করে গাজার ক্ষুধার্ত মানুষের জন্য ত্রাণ নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। এর প্রতিবাদে দেশে দেশে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।
‘ম্যাডলিন’ জাহাজে মোট ১২ জন মানবাধিকারকর্মী আছেন। তাঁরা হলেন সুইডেনের পরিবেশবিষয়ক আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ, ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত ফরাসি নাগরিক ও ইউরোপীয় পার্লামেন্ট সদস্য রিমা হাসান, জার্মানির ইয়াসেমিন আচার, ফ্রান্সের ব্যাপতিস্ত আন্দ্রে, ব্রাজিলের থিয়াগো আভিলা, ফ্রান্সের ওমর ফায়াদ, পাস্কাল মৌরিয়েরাস, ইয়ানিস মোহামদি, তুরস্কের সুলাইব ওর্দু, স্পেনের সার্জিও তোরিবিও, নেদারল্যান্ডসের মার্কো ফন রেনেস ও ফ্রান্সের রিভা ভিয়া।
এদিকে ত্রাণবাহী জাহাজ ও মানবাধিকারকর্মীদের আটকের প্রতিবাদে এবং ‘ম্যাডলিনকে মুক্ত করার’ দাবিতে ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছে। এ সময় তারা গাজা যুদ্ধ বন্ধেরও দাবি জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গত ২ মার্চ থেকে গাজায় ত্রাণ প্রবেশ পুরোপুরি বন্ধ করে দেয় ইসরায়েল। এই পরিস্থিতিতে অনাহারে ভুগে বেশ কয়েকটি শিশু মারা যায়। ত্রাণ প্রবেশে বাধা দেয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে ‘ম্যাডলিন’ নামের এ জাহাজ ১ জুন ইতালির সিসিলির কাতানিয়া শহর থেকে যাত্রা শুরু করে।
ফ্রি ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, গাজার মানুষের জন্য অত্যন্ত জরুরি ভিত্তিতে যেসব সহায়তা দরকার, জাহাজটি সেগুলো বহন করছে। এর মধ্যে রয়েছে চিকিৎসার সরঞ্জাম, ময়দা, চাল, শিশুদের দুধ (বেবি ফর্মুলা), ডায়াপার, নারীদের স্যানিটারি পণ্য, পানি বিশুদ্ধকরণ কিট, ক্রাচ ও শিশুদের কৃত্রিম অঙ্গ।
স্থানীয় সময় রোববার মধ্যরাতে গাজা থেকে প্রায় ১৮৫ কিলোমিটার দূরে আন্তর্জাতিক জলসীমায় জাহাজটি আটকে দেয় ইসরায়েলের নৌবাহিনী। পরে মানবাধিকারকর্মীসহ জাহাজটি ইসরায়েলি বন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়। সূত্র : আল জাজিরা