ইসরায়েলের দ্বারা পরিচালিত সাম্প্রতিক বিমান হামলার পরিপ্রেক্ষিতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের (UNSC) জরুরি বৈঠকের আহ্বান জানিয়েছে ইরান। দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা তাসনিম জানায়, ইরানে নিযুক্ত জাতিসংঘে স্থায়ী প্রতিনিধি আমির সাঈদ ইরাভানি আনুষ্ঠানিকভাবে এ আবেদনপত্র জমা দিয়েছেন।
এই পদক্ষেপ এমন এক সময়ে নেওয়া হয়েছে, যখন ইসরায়েল ইরানের মূল পারমাণবিক স্থাপনা ও সামরিক অবকাঠামো লক্ষ্য করে একাধিক সমন্বিত হামলা চালিয়েছে, যার কিছু অংশের ক্ষতির খবর নিশ্চিত করেছে ইরানের পারমাণবিক সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক সংস্থা IAEA।
‘অপরাধমূলক এবং আগ্রাসী কার্যকলাপ’—জাতিসংঘকে কড়া ভাষায় চিঠি তেহরান থেকে পাঠানো লিখিত আবেদনপত্রে বলা হয়েছে— “একটি বেপরোয়া, অবৈধ এবং পূর্বপরিকল্পিত সামরিক অভিযানের মাধ্যমে ইহুদি জাতীয়তাবাদী জায়নিস্ট শাসকগোষ্ঠী (Zionist regime) ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা এবং বেসামরিক অবকাঠামোর উপর একাধিক হামলা চালিয়েছে। এই হামলা জাতিসংঘ সনদ এবং আন্তর্জাতিক আইনের মৌলিক নীতিমালার সরাসরি লঙ্ঘন।”
চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, এই হামলার বিপজ্জনক পরিণতি কেবল আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতাকেই নয়, বরং বৈশ্বিক নিরাপত্তাকেও হুমকির মুখে ফেলেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরানের এই আহ্বান নিরাপত্তা পরিষদে উত্তপ্ত বিতর্কের জন্ম দিতে পারে। কারণ, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মতো কিছু স্থায়ী সদস্য সাধারণত ইসরায়েলের পক্ষে অবস্থান নেয়, যেখানে রাশিয়া ও চীন অনেক সময় ইরানের প্রতি সমর্থন জানায়।
জাতিসংঘ এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো জরুরি বৈঠকের ঘোষণা দেয়নি, তবে কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, নিরাপত্তা পরিষদে বিষয়টি আলোচনায় তোলার জন্য পর্দার আড়ালে তৎপরতা শুরু হয়েছে।
ইসরায়েল শুক্রবার ভোরে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা নাতাঞ্জে হামলা চালায়, যেটি ইরানের মূল ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। যদিও কোনো প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি, কিন্তু পারমাণবিক স্থাপনার ক্ষতির কথা স্বীকার করেছে তেহরান। এরই মধ্যে আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, “যদি ইরান এখনো চুক্তিতে না আসে, তবে আর কিছুই বাকি থাকবে না।”