ইসরায়েলের হামলার জবাবে প্রথম দফায় শতাধিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। তবে এই হামলার সফলতা নিয়ে ছিল ধোঁয়াশা।
দ্বিতীয় দফায় হামায় ইসরায়েলের অল্প কিছু ক্ষয়ক্ষতি হলেও অধিকাংশ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করে দখলদার বাহিনী। তবে তৃতীয় ও চতুর্থ দফায় হামলা চালিয়ে একরকম ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে ইরান।
ইসরায়েলের হামলার জবাবে প্রথম দফায় শতাধিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। তবে এই হামলার সফলতা নিয়ে ছিল ধোঁয়াশা। দ্বিতীয় দফায় হামায় ইসরায়েলের অল্প কিছু ক্ষয়ক্ষতি হলেও অধিকাংশ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করে দখলদার বাহিনী। তবে তৃতীয় ও চতুর্থ দফায় হামলা চালিয়ে একরকম ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে ইরান।
এসব হামলায় হতাহতের সংখ্যা কম হলেও ডজনখানেক ভবন গুঁড়িয়ে দেয় তেহরান। সর্বশেষ রোববার সকালে চালানো হামলায় হতাহতের সংখ্যা এক'শ ছাড়িয়ে গেছে। ঘটনাস্থলে থাকা অন্তত কয়েক ডজন মানুষ এখনও নিখোঁজ রয়েছেন।
ইসরায়েলের উপর সাম্প্রতিক হামলায় ইরান তাদের নতুন ধরণের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে।
দেশটির রাষ্ট্রীয়-অনুমোদিত ফার্স সংবাদ সংস্থার মতে, রোববার রাতভর একের পর এক হামলার সময় ইসরায়েলে হাজ কাসেম গাইডেড ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে আঘাত হানা হয়েছে।
নতুন অত্যাধুনিক এই এই ক্ষেপণাস্ত্রটির নাম কাসেম বাসির, যার নামকরণ করা হয়েছে ইরানের ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ড কর্পসের বিশেষ অপারেশন ইউনিট কুদস বাহিনীর সাবেক কমান্ডার কাসেম সোলাইমানির নামে, যিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ইরাকে মার্কিন হামলায় নিহত হন।
গেল মে মাসে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী আজিজ নাসিরজাদেহের সাথে এক সাক্ষাৎকারের সময় নতুন ক্ষেপণাস্ত্রটির ফুটেজ সম্প্রচার করে।
নাসিরজাদেহ তখন সতর্ক করে বলেন, ‘যদি আমাদের ওপর যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়া হয়, তবে আমরা শক্ত হাতে জবাব দেব।’ তিনি আরো জানান, ইরান কোনো প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সংঘাতে যেতে চায় না, তবে তাদের মাটিতে থাকা মার্কিন ঘাঁটিগুলো হামলার লক্ষ্যবস্তু হবে।
ইরানি টিভিকে প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, নতুন ক্ষেপণাস্ত্রটি মার্কিন সামরিক বাহিনীর টার্মিনাল হাই অল্টিটিউড ডিফেন্স (থাড) এর মতো প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করতে পারে। ইসরায়েলে থাড মোতায়েন করা হয়েছে।
একইসাথে প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং ইসরায়েল কর্তৃক ব্যবহৃত অন্যান্য প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও এই ক্ষেপণাস্ত্র অতিক্রম করতে সক্ষম হবে।
সাম্প্রতিক হামলায় আজিজ নাসিরজাদেহের কথার প্রমাণ মিলেছে। ইরানের হামলার ভয়ে ইসরায়েল তাদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করেছে। পাশাপাশি মার্কিন সহযোগিতায় থাডসহ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা চালু করে রাখলেও ইরানের অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র আটকাতে পারেনি নেতানিয়াহুর বাহিনী।
ইরানের তাসনিম সংবাদ সংস্থার মতে, মে মাসের প্রথম দিকে ইরান এই ক্ষেপণাস্ত্রটি উন্মোচিত এই ক্ষেপণাস্ত্র শক্ত জ্বালানিতে সজ্জিত, এর পাল্লা ১২০০ কিলোমিটার। একটি কৌশলগত ওয়ারহেড দিয়ে সজ্জিত এই যুদ্ধাস্ত্র ক্ষেপণাস্ত্র-প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করতে পারে।
তাসনিম মে মাসের প্রথম দিকে রিপোর্ট করেছিল, "নতুন ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রটি একটি উন্নত নেভিগেশন সিস্টেম দিয়ে সজ্জিত যা এটিকে লক্ষ্যবস্তুতে সুনির্দিষ্টভাবে আঘাত করতে এবং ইলেকট্রনিক যুদ্ধের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সক্ষম করে।"
প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকরা বলছেন, আয়রন ডোম এবং অন্যান্য ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সাধারণত স্বল্প ও মধ্য-পাল্লার রকেট প্রতিহত করতে পারলেও, হাইপারসনিক গতির কোনো অস্ত্র ঠেকানো তাদের প্রযুক্তিগত সক্ষমতার বাইরে।
হাইপারসনিক প্রযুক্তিরএই ক্ষেপণাস্ত্র এখন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার জন্য এক বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।