ইসরাইলি প্রতিরক্ষা সদর দপ্তর তেল আবিবে ইরানের একটি ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হেনেছে। এছাড়ও ইরান থেকে ছোড়া বেশ কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র ইসরাইলের শক্তিশালী আকাশ প্রতিরক্ষা ভেদ করে দেশটির কেন্দ্রস্থলে আঘাত হানে। এতে ঘরবাড়িসহ বিভিন্ন স্থাপনার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
ইরানের হামলার সময় ইসরাইলের বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সে সময় বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয় এবং অনেকেই হতবাক হয়ে যান।
মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে ইরানের পাল্টা হামলাটি আসে ইসরাইলের বিমান হামলার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই। দ্য টাইমসের যাচাইকৃত এক ভিডিওতে দেখা গেছে, তেল আবিবের কেন্দ্রীয় অংশে একটি বিস্ফোরণ ঘটেছে, যেখানে ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদর দপ্তরসহ একাধিক সামরিক স্থাপনা অবস্থিত।
১৯ সেকেন্ডের ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, ইসরাইলের আয়রন ডোম একটি ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করার চেষ্টা করছে, কিন্তু ক্ষেপণাস্ত্রটি প্রতিরক্ষা বলয় ভেদ করে সরাসরি প্রতিরক্ষা সদর দপ্তরে আঘাত হানে।
এ ঘটনায় ইসরাইলের আয়রন ডোম প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার এক চাঞ্চল্যকর ব্যর্থতা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ভিডিওটি শুরু হয় বিকট শব্দ ও বের হওয়া ক্ষেপণাস্ত্রের দৃশ্য দিয়ে। এরপর একটি উজ্জ্বল আলো ও আগুনের গোলা একটি ভবনে গিয়ে বিস্ফোরিত হয়। এর পেছনে তেল আবিবের কিরিয়া এলাকার মার্গানিট টাওয়ারটি দেখা যায়, যা আইডিএফ সদর দপ্তরের কাছে শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত।
শুক্রবার সকালে ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা এবং সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে ভয়াবহ হামলা চালায়। এতে ইরানের বেশ কয়েকজন সামরিক শীর্ষ কর্মকর্তা এবং পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত হন। এরপর ইসরাইলে প্রতিশোধ নিতে শুরু করে তেহরান।
তেল আবিবের বাসিন্দা টালি হোরেশ ইসরাইলের সংবাদমাধ্যম ওয়াইনেট নিউজকে বলেন, আমরা ঘরের দরজা বন্ধ করে রেখেছিলাম। হঠাৎ বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটলো। এতে পুরো ভবন কেঁপে ওঠে। উদ্ধারকর্মীরা পৌঁছানোর আগপর্যন্ত প্রায় দুই ঘণ্টা তারা সেখানে আটকা পড়েছিলেন।
এদিকে ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) কর্মকর্তা কর্নেল (অব.) মাইকেল ডেভিড বলেন, এটা এত বড় মাত্রার হামলার ঘটনা, যা আমরা অতীতে দেখিনি।
শনিবার রাতে তেল আবিবের কাছাকাছি অবস্থিত রিশনের আবাসিক এলাকায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। এতে দুজন নিহত এবং অন্তত ২০ জন আহত হয়। ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের ধ্বংসস্তূপ থেকে যাদের উদ্ধার করা হয়েছে তাদের মধ্যে তিন মাস বয়সী এক শিশুও রয়েছে।
ওই এলাকার বাসিন্দা অভি গাতেনিও চ্যানেল ১২-কে বলেছেন, আমি বাচ্চাদের নিয়ে ঘুমাচ্ছিলাম। সাইরেন বেজে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে আমরা নিচে নেমে নিরাপদ কক্ষে চলে যাই। এর পাঁচ মিনিট পর আমরা বড় ধরনের বিস্ফোরণের শব্দ শুনি। তিনি জানান, পুরো এলাকায় ধ্বংসযজ্ঞ ঘটে গেছে। ওই বাসিন্দা বলেন, ঈশ্বরকে ধন্যবাদ, আমাদের কিছু হয়নি। আমাদের একটি আঁচড়ও লাগেনি।