ইরান গত ৬০ ঘণ্টা ধরে প্রায় সম্পূর্ণরূপে বৈশ্বিক ইন্টারনেট থেকে বিচ্ছিন্ন রয়েছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা নেটব্লকস। সংস্থাটি জানায়, এই দীর্ঘ ইন্টারনেট বিভ্রাট সাধারণ মানুষের রাজনৈতিক মতপ্রকাশ, স্বাধীনভাবে যোগাযোগ এবং জরুরি নিরাপত্তা বার্তা অনুসরণের সক্ষমতাকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করছে।
নেটব্লকস-এর মতে, ইরানের সরকারই এই ব্লকেজ আরোপ করেছে এবং এর পেছনে নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখানো হয়েছে। ইরানি কর্তৃপক্ষের দাবি, এটি ইসরায়েলের সম্ভাব্য সাইবার আক্রমণ প্রতিহত করার জন্যই জরুরি পদক্ষেপ হিসেবে নেওয়া হয়েছে।
তবে মানবাধিকার ও প্রযুক্তি পর্যবেক্ষক মহল বলছে, ইরানে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়ার এ প্রবণতা নতুন নয়। রাজনৈতিক অস্থিরতা, আন্দোলন কিংবা আন্তর্জাতিক উত্তেজনার সময় দেশটির সরকার প্রায়শই এই ধরনের পদক্ষেপ নেয় — যার ফলে সাধারণ মানুষের তথ্যপ্রাপ্তি, মতপ্রকাশ এবং সামাজিক সংযোগ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, চলমান ইরান-ইসরায়েল সংঘর্ষ পরিস্থিতিতে এমন ব্ল্যাকআউট শুধুই দেশের অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ সুদৃঢ় করতে এবং বিরুদ্ধ মতের দমন নিশ্চিত করতেই ব্যবহার করা হচ্ছে।
ইরানের সরকারের পক্ষ থেকে এখনো এই ইন্টারনেট বন্ধের বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত কোনো ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীরা দেশটির বিভিন্ন প্রান্ত থেকে VPN এবং অন্যান্য বিকল্প পদ্ধতিতে সীমিতভাবে অনলাইনে আসার চেষ্টা করছেন বলে জানা গেছে।
বিশ্বজুড়ে নেট অধিকারকর্মীরা এই পদক্ষেপের কড়া সমালোচনা করেছেন এবং দ্রুত ইন্টারনেট পরিষেবা পুনরায় চালুর দাবি জানিয়েছেন।
বিশ্ব পরিস্থিতি যখন প্রতিদিন বদলে যাচ্ছে এবং নিরাপত্তাজনিত তথ্য জানার প্রয়োজন সর্বোচ্চ, তখন একটি জাতিকে এমন তথ্যবিচ্ছিন্ন করে রাখাকে আন্তর্জাতিক মহল গভীর উদ্বেগের চোখে দেখছে।