সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫, ৯ আষাঢ় ১৪৩২

মুসলিম ছেলেকে বিয়ে করায় জীবিত মেয়ের শ্রাদ্ধ করলেন মা

যাযাদি ডেস্ক
  ২৩ জুন ২০২৫, ১১:০২
মুসলিম ছেলেকে বিয়ে করায় জীবিত মেয়ের শ্রাদ্ধ করলেন মা
মুসলিম যুবককে বিয়ে করায় প্রাপ্তবয়স্ক এক কলেজছাত্রীকে জীবিত অবস্থাতেই ‘মৃত’ ঘোষণা করে তার শ্রাদ্ধ করলেন পরিবারের সদস্যরা। 

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া জেলার হাঁসখালি এলাকায় ঘটল এক চমকে দেওয়া ঘটনা। মুসলিম যুবককে বিয়ে করায় প্রাপ্তবয়স্ক এক কলেজছাত্রীকে জীবিত অবস্থাতেই ‘মৃত’ ঘোষণা করে তার শ্রাদ্ধ করলেন পরিবারের সদস্যরা।

মেয়ের এই সিদ্ধান্তে মেনে নিতে না পেরে, সামাজিক প্রথা মেনে শ্রাদ্ধশান্তির আয়োজন করা হয়— ডাকা হয় পুরোহিত, দেওয়া হয় পুজো, এমনকি ছবিতে মালাও দেওয়া হয়।

জানা গেছে, গাজনা উত্তরপাড়া গ্রামের ওই কলেজছাত্রী গত মঙ্গলবার (১৭ জুন) গভীর রাতে বাড়ি থেকে পালিয়ে যান।

পরিবারের দাবি, মেয়েটি মুসলিম ধর্মাবলম্বী এক যুবককে বিয়ে করেছেন, যিনি আবার বিবাহিতও। পরিবারের লোকজন এমন সম্পর্ক কিছুতেই মেনে নিতে পারেননি।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, এর আগেও মেয়েটি ওই যুবকের সঙ্গে পালিয়ে গিয়েছিলেন, কিন্তু তখন বহু বোঝাবুঝির পরে তাঁকে ফিরিয়ে আনা হয়। তখনও পরিবার তাকে ক্ষমা করে নেয়।

প্রায় তিন মাস মেয়েটি বাড়িতেই ছিলেন। কিন্তু আবার পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করায় পুরো পরিবার ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে।

তারপরেই সিদ্ধান্ত হয়, মেয়েটির সঙ্গে আর কোনও সম্পর্ক রাখা হবে না। কাকা নিজে মাথা নেড়ে পুরোহিত ডেকে মেয়েটির শ্রাদ্ধের কাজ সম্পন্ন করেন। বাড়ির অন্যান্য সদস্য, কাকি, জেঠু, জেঠিমারাও এই কাজে অংশ নেন।

মেয়েটির কাকা বলেন, “আমার ভাইঝি আমাদের খুবই প্রিয় ছিল। ওকে আমরা বহুবার বোঝানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু সে বারবার আমাদের বিশ্বাস ভেঙেছে।

তাই এই কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছি। আজ থেকে তার সঙ্গে আমাদের কোনও সম্পর্ক নেই।”

কাকিমার কথায়, “আমরা তাকে খুব ভালোবাসতাম। কিন্তু সে আমাদের বিশ্বাসে আঘাত দিয়েছে। তাই এমনটা করতেই হলো, যাতে আর কোনও দিন সে এই বাড়িতে ফিরতে না পারে।”

মেয়েটির বাবা বর্তমানে ইজরায়েলে কর্মরত এবং সেখানে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি। পরিবারের লোকেরা জানান, এমন সিদ্ধান্তের কথা তাঁকে জানানো হয়নি, কারণ তিনি যুদ্ধের পরিস্থিতিতে রয়েছেন এবং শারীরিকভাবে অসুস্থ।

এই ঘটনায় স্থানীয় এলাকাতেও চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। অনেকেই বিষয়টি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। কেউ কেউ একে পরিবারে কঠোর সিদ্ধান্ত বলে মনে করছেন, আবার কেউ বলছেন, ভালোবাসার স্বাধীনতা মেনে নেওয়া উচিত। সূত্র: আজতক বাংলা

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে