বিশ্বজুড়ে যখন ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়ছে, তখন সাইবার হামলা হয়ে উঠেছে একটি নতুন যুদ্ধক্ষেত্র। সম্প্রতি, `CyberIsnaadFront' নামে পরিচিত একটি হ্যাকার গোষ্ঠী দাবি করেছে যে তারা একটি ইসরায়েলি অ্যালুমিনিয়াম প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান, যা ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুক্ত, সেখানে সফলভাবে সাইবার হামলা চালিয়েছে। এই ঘটনায় গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ও পারমাণবিক তথ্য চুরি যাওয়ার দাবি করা হয়েছে।
হ্যাকার গ্রুপ তাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে প্রকাশিত বিবৃতিতে জানিয়েছে: তারা ওই ইসরায়েলি কারখানার সার্ভার হ্যাক করে। সেখানে সংরক্ষিত গোপন সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনার তথ্য সংগ্রহ করেছে। ওই তথ্যগুলোকে তারা ‘টার্গেট লিস্ট’ বা ভবিষ্যতের লক্ষ্যবস্তু হিসেবে সংরক্ষণ করেছে। তাদের ভাষ্যমতে, তারা শুধু একবারের হামলা নয় বরং একটি ধারাবাহিক সাইবার আক্রমণ অভিযান পরিচালনা করছে।
এই গোষ্ঠীর কার্যকলাপ দেখে ধারণা করা হচ্ছে, তারা শুধু প্রতীকী হামলার দিকে যাচ্ছে না, বরং গভীর তথ্য সংগ্রহ ও স্থায়ী ক্ষতির দিকে অগ্রসর হচ্ছে।
হ্যাকারদের প্রধান টার্গেট- সামরিক কারখানা, প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান, পরমাণু গবেষণা ও স্থাপনা সংক্রান্ত সিস্টেম।
এতে স্পষ্ট যে, সামরিক সম্পর্কিত বেসরকারি শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো এখন আর নিরাপদ নয়। Hacktivism-এর নতুন ধারা এসব প্রতিষ্ঠানকে যুদ্ধক্ষেত্রের অংশ করে তুলছে।
এই হামলার ফলে ইসরায়েলের জন্য যেসব গুরুত্বপূর্ণ ঝুঁকি তৈরি হয়েছে:
তথ্য ফাঁসের মাধ্যমে কৌশলগত দুর্বলতা তৈরি হতে পারে। এছাড়া সামরিক সরঞ্জাম উৎপাদন ব্যাহত হতে পারে, যা সরাসরি যুদ্ধ সক্ষমতায় প্রভাব ফেলবে। গোপন অপারেশন বা পারমাণবিক স্থাপনার অবস্থান ফাঁস হলে তা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি।
সাইবার নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন: ‘এটি শুধু একটি সাইবার হামলা নয়, বরং এটি একটি ডিজিটাল গুপ্তচরবৃত্তির উদাহরণ, যেখানে ভবিষ্যতের বড় হামলার ভিত্তি গড়ে তোলা হচ্ছে।’
অনেকেই আশঙ্কা করছেন, এই ধরনের আক্রমণগুলি যদি চলতে থাকে, তাহলে তা মাঝারি থেকে বড় পরিসরের সামরিক প্রতিক্রিয়ায় রূপ নিতে পারে। CyberIsnaadFront-এর এই দাবিকৃত সাইবার হামলা একটি নতুন ধাপের সূচনা করেছে যেখানে হ্যাকাররা শুধু ওয়েবসাইট ভাঙছে না, বরং জাতীয় নিরাপত্তার মেরুদণ্ডে আঘাত হানছে। এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলে ভবিষ্যতের সাইবার যুদ্ধ আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।