বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫, ১২ আষাঢ় ১৪৩২

‘অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা’ জোরদারে মনোযোগ ইরানের

যাযাদি ডেস্ক
  ২৬ জুন ২০২৫, ১৬:৩১
‘অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা’ জোরদারে মনোযোগ ইরানের
ইরানের বাস্তায় নিরাপত্তা রক্ষীর সতর্ক পাহারা। ছবি: রয়টার্স/ সংগৃহীত

ইসরাইলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির পর গণ গ্রেপ্তার, মৃত্যুদণ্ড ও সামরিক বাহিনী মোতায়েনের মাধ্যমে ‘অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা’ জোরদারে মনোযোগ দিয়েছে ইরান। এসব ঘটনার অধিকাংশই ঘটছে দেশটির অশান্ত কুর্দিস্তান অঞ্চলে।

অশান্ত ওই অঞ্চলের কর্মকর্তারা ও আন্দোলনকারীরা রয়টার্সকে জানান, ১৩ জুন ইসরাইলি বিমান হামলা শুরু হওয়ার কয়েকদিনের মধ্যেই ইরানের নিরাপত্তা বাহিনীগুলো রাস্তায় চেকপয়েন্টগুলোকে ঘিরে অবস্থান জোরদার করে ব্যাপক গ্রেপ্তার অভিযান শুরু করে।

ইসরাইলের অনেকে ও ইরানের নির্বাসিত সরকারবিরোধী গোষ্ঠীগুলো আশা করেছিল, ইরানের রেভোল্যুশনারি গার্ড ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বাহিনীর পাশাপাশি পারমাণবিক স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্যস্থল করে ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর হামলায় ইরানজুড়ে ব্যাপক গণঅভ্যুত্থান দেখা দেবে ও বিক্ষুব্ধ জনতা দেশটির ইসলামিক শাসন ব্যবস্থার অবসান ঘটাবে। কিন্তু বাস্তবে সেরকম কিছু হয়নি।

দেশটির সরকারি নীতি নিয়ে রয়টার্স কথা বলেছে ক্ষুব্ধ অনেক ইরানির সঙ্গে। তারা মনে করেন, এসব নীতিই দেশকে ইসরাইলি হামলার দিকে নিয়ে গেছে; কিন্তু দেশজুড়ে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে উল্লেখযোগ্য কোনো প্রতিবাদ এ সময় দেখা যায়নি।

যাইহোক, অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিষয়গুলো সম্পর্কে অবহিত এক ঊর্ধ্বতন ইরানি নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও আরও দুই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কর্তৃপক্ষ সম্ভাব্য অভ্যন্তরীণ অস্থিরতার হুমকির দিকে নজর দিয়েছে, বিশেষকরে কুর্দি এলাকাগুলোতে।

ওই কর্মকর্তারা জানান, কর্তৃপক্ষ ইসরাইলি গোয়েন্দা, জাতিগত বিচ্ছিন্নতাবাদী ও নির্বাসিত সরকারবিরোধী গোষ্ঠী পিপলস মুজাহিদীন অর্গানাইজেশনের বিষয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে আছে। পিপলস মুজাহিদীন অর্গানাইজেশন এর আগে ইরানের বেশ কয়েকটি হামলা পরিচালনা করেছিল।

ইসরাইলি হামলার পর থেকে দেশটির আন্দোলনকারীরা প্রায় নিশ্চুপ হয়ে আছেন।

এর আগে ২০২২ সালের গণআন্দোলনের সময় কারান্তরীণ তেহরানের এক অধিকার আন্দোলনকারী বলেন, ‘শাসক গোষ্ঠী এই পরিস্থিতিকে একটি অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করতে পারে এমন বাস্তব উদ্বেগ থাকায় আমরা এখন অত্যন্ত সতর্ক হয়ে আছি।’

এই আন্দোলনকারী জানান, তিনি এমন বহু লোককে চেনেন যাদের কর্তৃপক্ষ ডেকে পাঠিয়েছে এবং হয় গ্রেপ্তার করেছে অথবা কোনো ভিন্নমত প্রকাশ করার বিষয়ে সতর্ক করেছে।

ইরানের অধিকার আন্দোলনকারী গোষ্ঠী এইচআরএনএ সোমবার জানিয়েছে, ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে রাজনৈতিক অথবা নিরাপত্তা বিষয়ক অভিযোগে ৭০৫ জনকে গ্রেপ্তারের রেকর্ড করেছে তারা।

এইচআরএনএ জানিয়েছে, তাদের অনেককে ইসরায়েলের পক্ষে গুপ্তচরগিরি করার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, তুরস্ক সীমান্তবর্তী ইরানের উত্তরপশ্চিমের শহর উরমিয়াতে ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সঙ্গে যোগসাজশ এবং গুপ্তহত্যায় ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি চোরাচালানের দায়ে দোষী সাব্যস্ত তিনজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।

ইরানি কুর্দিদের অধিকার আন্দোলনকারী গোষ্ঠী হেঙ্গাও জানিয়েছে, যাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে তারা সবাই কুর্দি।

এ বিষয়ে রয়টার্সের মন্তব্যের অনুরোধে ইরানের পররাষ্ট্র এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাৎক্ষণিভাবে সাড়া দেয়নি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে