বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫, ১৯ আষাঢ় ১৪৩২

যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় চিকিৎসক নিজ সন্তানকে হত্যা করে

নিউ ইয়র্ক প্রতিনিধি
  ০৩ জুলাই ২০২৫, ০৯:১১
যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় চিকিৎসক নিজ সন্তানকে হত্যা করে
অভিযুক্ত চিকিৎসক হলেন ওকলাহোমা সিটির ডা. নেহা গুপ্তা (৩৬)।

যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ফ্লোরিডায় ছুটি কাটাতে গিয়ে চার বছরের কন্যার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ‘নাটকীয় পানিতে ডুবে যাওয়া’র অভিযোগে এক ভারতীয় মার্কিন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের বিরুদ্ধে প্রথম-ডিগ্রি হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।

অভিযুক্ত চিকিৎসক হলেন ওকলাহোমা সিটির ডা. নেহা গুপ্তা (৩৬)।

পুলিশ জানায়, ২৭ জুন ভোররাতে স্থানীয় সময় ৩:৪০ মিনিটে, গুপ্তা ৯১১-এ কল করে জানিয়েছিলেন, তাঁর মেয়ে আরিয়া তালাঠি একটি আবাসিক পুলে ডুবে গেছে। ঘটনাটি ঘটেছিল মায়ামির কাছে এল পোর্টাল নামক এলাকায় একটি স্বল্পমেয়াদি ভাড়ার বাসায়।

অভিযোগ অনুযায়ী, পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছেই গুপ্তার নির্দেশে পেছনের উঠানে যায়, যেখানে তারা পুলের গভীর পানিতে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে দেখতে পায়। সিপিআর দেওয়ার পরও আরিয়াকে বাঁচানো যায়নি; তাকে দ্রুত জ্যাকসন মেমোরিয়াল হাসপাতালের রাইডার ট্রমা সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হলেও সেখানেই তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়।

প্রাথমিকভাবে ঘটনাটিকে দুর্ঘটনা হিসেবে ধরা হলেও, এক সপ্তাহব্যাপী তদন্ত ও ময়নাতদন্তের রিপোর্টের ভিত্তিতে পুলিশ জানায়, এটি ছিল একটি ‘স্টেজড ড্রাউনিং’, অর্থাৎ ইচ্ছাকৃতভাবে সাজানো পানিতে ডুবে যাওয়ার ঘটনা। ময়নাতদন্তে আরিয়ার ফুসফুস ও পেটে পানির কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি, যা ডুবে যাওয়ার সম্ভাবনাকে নাকচ করে। বরং তাঁর মুখ ও গালের আঘাত ‘শ্বাসরোধ করে হত্যা’র ইঙ্গিত দেয়।

ময়নাতদন্তে আরও বলা হয়েছে, আরিয়া সম্ভবত মৃত্যুর পরই পানিতে ফেলা হয়েছিল। এছাড়া গুপ্তার দাবি অনুযায়ী, আরিয়া রাত ৯টায় রাতের খাবার খেয়েছিল—এই দাবির সঙ্গে শিশুটির খালি পেটের অবস্থা সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

গুপ্তার আইনজীবী রিচার্ড কুপার জানান, গুপ্তা পুলিশকে বলেন, রাত ১২:৩০ মিনিটে তারা দুজন একই বিছানায় ঘুমাতে যান। পরে ৩:২০ মিনিটে গুপ্তা শব্দ শুনে ঘুম ভেঙে দেখতে পান আরিয়া বিছানায় নেই, এবং পুলে ভাসছে। তিনি জানান, সাঁতার না জানার কারণে তিনি প্রায় ১০ মিনিট চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে ৯১১-এ ফোন করেন।

তদন্তকারী সংস্থা মায়ামি-ডেইড কাউন্টি শেরিফ অফিস এখন মামলাটি দেখছে। আইনজীবীরা বলেন, 'এটা অত্যন্ত দুঃখজনক যে একজন শোকাহত মা, যার কন্যা সদ্য মারা গেছে, এখন কারাগারে বন্দি। আমাদের বিশ্বাস, সম্পূর্ণ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত সত্য প্রকাশ পাবে।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে