গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের (জিআইবি) প্রায় ৫০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ‘বিতর্কিত’ শিল্পগোষ্ঠী এস আলম পরিবারের তিন সদস্যসহ ২৬ জনের বিরুদ্ধে দু’টি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
এসব মামলায় ভারতে অন্তরীণ পি কে হালদার, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের ভাই বোরহানুল হাসান চৌধুরী সালেহীনও আসামির তালিকায় আছেন।
আজ সোমবার (৩০ জুন) চট্টগ্রাম জেলা দুদক কার্যালয়ের উপ-পরিচালক সুবেল আহমেদ জানিয়েছেন, সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক বিলকিস আক্তার রোববার দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ মামলাটি দু’টি দায়ের করেছেন।
তিনি বলেন, ‘২০১৭ সালের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের (বর্তমান গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক) খাতুনগঞ্জ শাখা থেকে জামানত ছাড়াই জালিয়াতির মাধ্যমে দু’টি ঋণের মাধ্যমে ২৯ কোটি ১৬ লাখ ৫২ হাজার এবং ২০ কোটি ৫২ লাখ ৯৩ হাজার টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে দু’টি মামলা নথিভুক্ত হয়েছে।’
মামলায় এস আলম গ্রুপের কর্ণধার সাইফুল আলম মাসুদের ভাই ওসমান গণি, ভাগনে মোস্তান বিল্লাহ আদিল ও জামাতা বেলাল আহমেদকে আসামি করা হয়েছে। সাবেক এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক, যা পরে গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক হয়েছে, এরা ওই ব্যাংকের পরিচালক ছিলেন।
প্রশান্ত কুমার (পিকে) হালদার ব্যাংকটির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বোরহানুল হাসান চৌধুরীকে পরিচালক হিসেবে আসামি করা হয়েছে।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- ঋণগ্রহীতা সাদ মুসা গ্রুপের কর্ণধার মোহাম্মদ মোহসিন (৬৫), তার স্ত্রী মাহমুদ সাজিদ কটন মিলস লিমিটেডের চেয়ারম্যান শামীমা নারগিস চৌধুরী (৬০), গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান নিজাম চৌধুরী (৬৫), সাবেক পরিচালক গোলাম মোহাম্মদ (৭০), ড. মোহাম্মদ ফারুক (৭১), আরিফ আহমেদ (৪৩), মায়মুনা খানম (৩৪), সরোয়ার জাহান মালেক (৬২), শাহানা ফেরদৌস (৪৯), সাজেদা নুর বেগম (৫৮), সাবেক স্বতন্ত্র পরিচালক মোহাম্মদ কুতুবউদ্দৌলা (৭৬) ও এস এ এম সলিমউল্লাহ (৭৫)।
এ ছাড়া গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. গোলাম সারওয়ার (৭১), সাবেক এসভিপি এন্ড হেড অব ক্রেডিট মোহাম্মদ মাহমুদ আলম (৫৪), উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী মশিউর রহমান জাহেদ (৬৮), ব্যবস্থাপক মো. শামসুল আলম (৫২), মুন্নিশ্রী চক্রবর্তী (৪৯), প্রিন্সিপাল অফিসার মো. হাসান আলী (৪৫), জুনিয়র অফিসার রিফাত ইফতেখারুল আলম (৩৯), মো. মিজানুর রহমান এবং নিগার সুলতানা (৩৯)।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ২০১৭ সালের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের খাতুনগঞ্জ শাখা থেকে চট্টগ্রামের সাদ মুসা গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান মাহমুদ সাজিদ কটন মিলস লিমিটেডের নামে দু’টি ঋণ অনুমোদন হয়।
আসামিরা ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রয়োজনীয় জামানত ছাড়া জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ করেন।
দণ্ডবিধির ৪০৯, ৪২০, ১০৯ এবং ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) এবং ২০১২ সালের মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ৪(২)(৩) ধারায় মামলা দু’টি করা হয়েছে।