বর্ষাকাল মোটরসাইকেল চালকদের জন্য একদিকে যেমন রোমাঞ্চকর, অন্যদিকে তেমনি চ্যালেঞ্জিং। কারণ বৃষ্টির পানিতে কাদা, পানির জমাটবাঁধা এবং অতিরিক্ত আর্দ্রতা বাইকের যন্ত্রাংশের ক্ষতির কারণ হতে পারে।
তাই বর্ষাকালে মোটরসাইকেলের সঠিক যত্ন না নিলে এর কার্যকারিতা কমে যেতে পারে, এমনকি দুর্ঘটনার ঝুঁকিও বাড়ে। নিচে বর্ষাকালে মোটরসাইকেলের যত্ন নেওয়ার কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ তুলে ধরা হলো:
১. নিয়মিত পরিষ্কার রাখা বৃষ্টির পানিতে রাস্তার কাদা, ধুলা ও রাসায়নিক উপাদান লেগে বাইকের গায়ে জং ধরতে পারে। তাই বৃষ্টিতে ভিজে যাওয়ার পর যত দ্রুত সম্ভব বাইক ধুয়ে পরিষ্কার ও শুকনা করতে হবে।
বিশেষ করে চেইন, এক্সহস্ট পাইপ ও চাকার আশপাশে জমে থাকা কাদা ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে।
২. চেইনের যত্ন
৩. ব্রেক চেক করা ভেজা অবস্থায় ব্রেক প্যাড বা ডিস্ক ঠিকভাবে কাজ না-ও করতে পারে। তাই প্রতি সপ্তাহে অন্তত একবার ব্রেক চেক করে দেখতে হবে। জল ঢুকে গেলে ব্রেক গ্রিপ দুর্বল হয়ে যেতে পারে, ফলে সময়মতো মেরামতের ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।
৪. টায়ারের গ্রিপ নিশ্চিত করা বৃষ্টির পানিতে রাস্তা পিচ্ছিল হয়ে যায়। ফলে টায়ারের ট্রেড যদি ক্ষয়প্রাপ্ত হয়, তাহলে স্কিড করার সম্ভাবনা থাকে। তাই টায়ারের গ্রিপ ভালো আছে কি না, সেটা নিশ্চিত করুন এবং প্রয়োজন হলে টায়ার পাল্টান।
৫. ইলেকট্রিক সংযোগ পরীক্ষা বর্ষায় বাইকের বিভিন্ন ইলেকট্রিক কানেকশন, যেমন- হেডলাইট, ইনডিকেটর, হর্ন, ব্যাটারি কানেকশন ইত্যাদি নষ্ট হয়ে যেতে পারে। পানির সংস্পর্শ থেকে বাঁচাতে এসব জায়গা টেপ বা ওয়াটারপ্রুফ কাভার দিয়ে সুরক্ষিত রাখা উচিত।
৬. ওয়াটারপ্রুফ কাভার ব্যবহার বাইকে ওয়াটারপ্রুফ সিট কাভার ও বাইক কাভার ব্যবহার করুন যাতে বাইক ভিজে না যায়। রাতে বাইক বাইরে রাখলে অবশ্যই কভার ব্যবহার করা উচিত।
৭. এয়ার ফিল্টার পরিষ্কার রাখা বৃষ্টির দিনে বাইকে পানি ঢুকে এয়ার ফিল্টার ভিজে যেতে পারে, যা ইঞ্জিনের ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই নিয়মিত ফিল্টার পরীক্ষা করে পরিষ্কার ও শুকনো রাখা প্রয়োজন।
৮. ফুয়েল ট্যাংকের মুখ বন্ধ রাখা বৃষ্টির পানি যেন ট্যাংকে না ঢুকে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। ক্যাপ ঠিকঠাক কাজ করছে কি না তা দেখে নিতে হবে।
৯. রোড সেফটি গিয়ার বৃষ্টিতে বাইক চালানোর সময় রেইনকোট, হেলমেটের সাফ ভিশন গ্লাস ও স্লিপ রোধক জুতা ব্যবহার করা জরুরি।
বর্ষাকালে মোটরসাইকেলের যত্ন নেওয়া মানে শুধু বাইক ভালো রাখা নয়, নিজের নিরাপত্তাও নিশ্চিত করা।
সামান্য যত্ন ও নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ আপনার বাইককে সুস্থ রাখবে এবং দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমাবে। তাই বর্ষার দিনে সচেতনতা ও যত্নই হতে পারে আপনার বাইকের দীর্ঘজীবনের চাবিকাঠি।