শনিবার, ১০ মে ২০২৫, ২৭ বৈশাখ ১৪৩২

‘আমার এবং আমার স্বামীর লাশ বাড়িতে নেওয়ার দরকার নেই’

যাযাদি ডেস্ক
  ২০ এপ্রিল ২০২৫, ১৫:৫৬
‘আমার এবং আমার স্বামীর লাশ বাড়িতে নেওয়ার দরকার নেই’
ফাইল ছবি

ওয়ারীতে বাসা থেকে দম্পতির লাশ উদ্ধার, পাশেই পড়ে ছিল চিরকুট।

রাজধানীর ওয়ারী এলাকার একটি বাসা থেকে এক দম্পতির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শনিবার রাত ৯টার দিকে ওয়ারী থানার ওয়ার স্ট্রীট জমজম টাওয়ারের পাঁচতলার একটি কক্ষ থেকে লাশ দুটি উদ্ধার করা হয়।

পরে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায় পুলিশ।

মৃত ওই দম্পতি হলেন- মোহাম্মদ মুঈদ (৩২) ও স্ত্রী আইরিন আক্তার রত্না(৩৫)। ওয়ারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফয়সাল আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ওয়ারী এলাকার জমজম টাওয়ারের পাঁচতলায় ভাড়া থাকতেন এ দম্পতি। এরমধ্যে স্বামী মুঈদ দীর্ঘদিন ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন।

ধারণা করা হচ্ছে, তারা আত্মহত্যা করেছেন। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।

এ বিষয়ে ওয়ারী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) কাউছার আহম্মদ জানান, ওই বাসায় স্বামী স্ত্রী দুজনই থাকতো। কারো সঙ্গে তেমন যোগাযোগ ছিল না।

একজন কাজের বুয়া কাজ করতো। তবে দুই মাস যাবত কাজের মহিলার বেতন দিতে পারেনি। রোজার ঈদের পরে বেতন দেওয়ার কথা ছিল। গত বৃহস্পতিবার বিকালে বেতন নেওয়ার উদ্দেশ্যে কাজের বুয়া ওই বাসায় যায়। পরে অনেকক্ষণ কলিংবেল টিপেও কোন সারা শব্দ না পেয়ে তিনি চলে যান।

এরপর শনিবার বিকেলে বাড়িওয়ালার মাধ্যমে ওই বাসায় আবার যান তিনি। তখন অনেকক্ষণ কলিং চেপেও সারা শব্দ না পেয়ে আমাদের খবর দেন।

খবর পেয়ে ওই বাসায় গিয়ে কেচিগেটের তালা ভেঙ্গে ভিতরে ঢুকে মরদেহ দুটি পড়ে থাকতে দেখি। মুঈদের মরদেহ পচনশীল ছিল। একই বিছানায় তার স্ত্রী রত্নার মরদেহ পড়েছিল।

পাশেই একটি চিরকুট পাওয়া যায়। সেখানে লেখা ছিল- ‘বিয়ের পর আমার বাবা মা ও স্বামীর পরিবারের সঙ্গে কোন যোগাযোগ নাই।

আমাদের দুজনের মরদেহ ঢাকাতে কোনো সরকারি কবরস্থানে দাফন দিয়েন। আমাকে এবং আমার স্বামীকে বাড়িতে নেওয়ার দরকার নাই’।

এসআই বলেন, স্বামী মুঈদ দীর্ঘদিন ধরে ক্যান্সারে ভুগছিলেন। তার স্ত্রী রত্না বাইরে কোথাও বের হতেন না। ধারণা করা হচ্ছে, স্বামী চার পাঁচদিন আগে মারা গেছে। এই শোকে স্ত্রী কোন কিছু সেবন করে আত্মহত্যা করতে পারে। তবে ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।

এদিকে মৃত মুঈদের বড় ভাই ডা. মুগলী সানি গণমাধ্যমকে জানান, গত ২১ সালের পর তাদের সঙ্গে আর কোন যোগাযোগ নাই। ঢাকার কোথায় থাকতো আমাদের জানা ছিল না। তার ভাইয়ের আমেরিকা যাওয়ার কথা ছিল।

শীনবার সন্ধ্যায় পুলিশের মাধ্যমে তাদের মরদেহ উদ্ধারের কথা জানতে পারি। তবে কিভাবে মারা গেছে তা আমাদের জানা নেই। তাদের বাড়ি কুমিল্লা জেলার তিতাস উপজেলার আড়াই কান্দি গ্রামে বাবার নাম মো. মুসা।

মৃত রত্নার বাড়ি কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলায়। বাবার নাম জয়নাল আবেদিন।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে