শনিবার, ১৭ মে ২০২৫, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

পদ ছাড়ার পর একেবারে একা হয়ে যাব, শঙ্কা শফিকুল আলমের

যাযাদি ডেস্ক
  ১৭ মে ২০২৫, ১২:৪৬
পদ ছাড়ার পর একেবারে একা হয়ে যাব, শঙ্কা শফিকুল আলমের
প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ছবি : সংগৃহীত

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিবের পদ থেকে সরে যাওয়ার পর ভবিষ্যতে একাকিত্বে পড়তে পারেন- এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন শফিকুল আলম। তবে এ নিয়ে তার মনে কোনো আক্ষেপ নেই। তিনি মনে করেন, নিজের ওপর অর্পিত দায়িত্ব সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করেছেন।

শনিবার (১৭ মে) সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ অনুভূতির কথা জানান।

1

পোস্টে তিনি লেখেন, ‘অনেক বছর আগে শেখ হাসিনার স্বৈরশাসনের সময় প্রায়শই বিরোধী নেতাদের সম্পর্কে লিখতাম। তারা সে শাসন অমান্য করেছিলেন এবং জাতির জন্য আশার আলো হিসেবে কাজ করেছিলেন। তাদের আত্মীয়-স্বজনরা সেসব পোস্টগুলো শেয়ার করতেন। মাঝে মাঝে তারা আমাকে বার্তা পাঠিয়ে আমার লেখা ও সাংবাদিকতার প্রশংসা করতেন।

প্রেস সচিব লিখেছেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারে একটি সংবেদনশীল ভূমিকা গ্রহণ করার পর, আমি লক্ষ্য করেছি এই ব্যক্তিদের মধ্যে অনেকেই আমাকে আনফ্রেন্ড করেছেন। এখন আমি আর আগের মতো সেই ব্যক্তি নই। কারও কারও কাছে, অহংকারী হয়ে উঠেছি। এছাড়াও কারো কাছে ভিন্নমতের প্রতি অসহিষ্ণু এক প্রেস কর্মকর্তা। এমন অবস্থায় আমি ভয় পাচ্ছি, আমার সাংবাদিকতা ক্যারিয়ার জুড়ে তৈরি হওয়া অনেক ফেসবুক বন্ধুকে হারাতে পারি। আমার অনেক আত্মীয় ইতোমধ্যেই সম্পর্ক ছিন্ন করে ফেলেছেন। কারণ আমি তাদের অনুগ্রহ করি না। আমার স্ত্রী সতর্ক করে দিয়েছেন যে, যখন এই পদ ছেড়ে দেব, তখন আমি নিজেকে একা দেখতে পাব।’

তিনি আরও লিখেছেন, ‘কিন্তু আমার আপত্তি নেই। আমাদের ইতিহাসের সবচেয়ে সহিংস কিছু ঘটনা নথিভুক্ত করার সময় আমি একেবারে একা ছিলাম। বিহারিদের অধিকারের পক্ষে কথা বলার সময় এবং তাদের সহ্য করা অবিচার তুলে ধরার সময় মূলত একা ছিলাম। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো আমি ন্যায্যতা এবং ন্যায়বিচারের সঙ্গে কাজ করছি কিনা তা নিশ্চিত করা। আমার নিয়োগকর্তাদের কার্যকরভাবে এবং ভালোভাবে রক্ষা করছি? এবং দ্বিতীয়ত, আমি কি এ প্রক্রিয়ায় কারো ক্ষতি করছি?’

চ্যালেঞ্জের কথা জানিয়ে শফিকুল আলম লিখেছেন, ‘ক্ষমতা এমনভাবে দুর্নীতিগ্রস্ত করে যা কেউ কল্পনাও করতে পারেন না বা উপলব্ধি করতে পারেন না। আব্বাসীয় আমলে সুফিরা সরকারি পদ এড়িয়ে চলতেন। অনিশ্চিত থাকতেন তারা অক্ষত থাকতে পারবেন কিনা। ক্ষমতায় থাকা ব্যক্তির জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো নিশ্চিত করা তারা অন্যদের ক্ষতি করবেন না।’

সবশেষে তিনি লিখেছেন, ‘আমার এখন পর্যন্ত এটাই প্রতিজ্ঞা। কয়েক মাস পরে, যখন আমি পদত্যাগ করব। তখন আমি গর্বের সঙ্গে পেছনে ফিরে তাকাতে পারব বলে আশা করি। কারণ, আমি জানি আমি এই দুটি লক্ষ্য অর্জন করেছি।’

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে