শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

মে মাসে সড়কে ঝরেছে ৬১৪ প্রাণ 

যাত্রী কল্যাণ সমিতির প্রতিবেদন
যাযাদি ডেস্ক
  ১২ জুন ২০২৫, ১৫:৪৯
আপডেট  : ১২ জুন ২০২৫, ১৫:৫৯
মে মাসে সড়কে ঝরেছে ৬১৪ প্রাণ 
প্রতীকী ছবি : সংগৃহীত

চলতি বছরের মে মাসে সারাদেশে ৫৯৭ সড়ক দুর্ঘটনায় অন্তত ৬১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের ৪২ শতাংশই মারা গেছেন মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায়।

আজ বৃহস্পতিবার (১২ জুন) এ পরিসংখ্যান তুলে ধরেছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। সেই সঙ্গে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে দশটি সুপারিশও করেছে। দেশের গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।

1

সংগঠনটি জানায়, বিদায়ী মে মাসে দেশের গণমাধ্যমে ৫৯৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৬১৪ জন নিহত, ১১৯৬ জন আহতের তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। এই মাসে রেলপথে ৪৮টি দুর্ঘটনায় ৩৫ জন নিহত, ১৪ জন আহতের তথ্য গণমাধ্যমে উঠে এসেছে। নৌ পথে ৭টি দুর্ঘটনায় ৯ জন নিহত, ১০ জন নিখোঁজ রয়েছে। সড়ক, রেল ও নৌ-পথে সর্বমোট ৬৫২টি দুর্ঘটনায় ৬৫৮ জন নিহত এবং ১২১০ জন আহত হয়েছে।

এর মধ্যে এই সময়ে ২৩৩টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ২৫৬ জন নিহত, ২০১ জন আহত হয়েছে। যা মোট দুর্ঘটনার ৩৯.০২ শতাংশ, নিহতের ৪১.৬৯ শতাংশ ও আহতের ১৬.৮০ শতাংশ।

মে মাসে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ঢাকা বিভাগে ১৩৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৪৮ জন নিহত ও ২৭১ জন আহত হয়েছে, সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে বরিশাল বিভাগে ৩০টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩০ জন নিহত ও ৪৪ জন আহত হয়েছে। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির দুর্ঘটনা মনিটরিং সেল গণমাধ্যম পর্যবেক্ষণে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

সংস্থা জানায়, এই সময় সড়ক দুর্ঘটনায় সংগঠিত ৯৪৫টি যানবাহনের পরিচয় মিলেছে। এতে দেখা যায়, ২৯.৪১ শতাংশ মোটরসাইকেল, ২২.৫৩ শতাংশ ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান ও লরি, ১২.৪৮ শতাংশ বাস, ১৪.১৭ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ৬.৬৬ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ৯.৩১ শতাংশ নছিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর ও লেগুনা, ৫.৩৯ শতাংশ কার-জিপ-মাইক্রোবাস সড়কে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে।

দুর্ঘটনার ধরণ বিশ্লেষণে দেখা যায়, এই মাসে সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার ৩৩.৫০ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ৩২.৮৩ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ২৮.১৪ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়েছে। এছাড়াও সারা দেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৩.৫১ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ১.৫০ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে ও ০.৫০ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংগঠিত হয়েছে।

দুর্ঘটনার প্রতিরোধে ১০টি সুপারিশ করেছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি। সেগুলো হলো-

১. জরুরি ভিত্তিতে মোটরসাইকেল ও ব্যাটারিচালিত রিক্সা আমদানী ও নিবন্ধন বন্ধ করা।

২. জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে রাতের বেলায় অবাধে চলাচলের জন্য আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা।

৩. দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ, যানবাহনের ডিজিটাল পদ্ধতিতে ফিটনেস প্রদান।

৪. ধীরগতির যান ও দ্রুতগতির যানের জন্য আলাদা লেনের ব্যবস্থা করা।

৫. সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধ করা, চালকদের বেতন ও কর্মঘণ্টা সুনিশ্চিত করা।

৬. মহাসড়কে ফুটপাত ও পথচারী পারাপারের ব্যবস্থা রাখা, রোড সাইন, রোড মার্কিং স্থাপন করা।

৭. সড়ক পরিবহন আইন যথাযথভাবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রয়োগ করা।

৮. উন্নতমানের আধুনিক বাস নেটওর্য়াক গড়ে তোলা, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিআরটিএ’র সক্ষমতা বৃদ্ধি করা।

৯. মানসম্মত সড়ক নির্মাণ ও মেরামত সুনিশ্চিত করা, নিয়মিত রোড সেইফটি অডিট করা এবং

১০. মেয়াদোত্তীর্ণ গণপরিবহন ও দীর্ঘদিন যাবৎ ফিটনেসহীন যানবাহন স্ক্র্যাপ করার উদ্যোগ নেয়া।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে