ইরানে ইসরায়েলি হামলার নিন্দায় যখন সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) একজোট হয়ে বিবৃতি দিচ্ছে, তখন এই বিবৃতি থেকে সরে দাঁড়িয়েছে ভারত।
নয়াদিল্লি জানিয়েছে, তারা এসসিওর ওই আলোচনায় অংশই নেয়নি। পাশাপাশি, নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে একটি সাত বাক্যের বিবৃতিতে ভারত জানিয়েছে, তারা ইসরায়েলি হামলার নিন্দা করছে না, বরং ‘উভয়পক্ষকে কূটনৈতিক সমাধানের পথে’ আহ্বান জানাচ্ছে।
শুক্রবার ইসরায়েল ইরানের একটি পরমাণু স্থাপনায় বিমান হামলা চালায়। জবাবে ইরানও পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থাপনায়।
এই পটভূমিতে রাশিয়া, চীন, পাকিস্তান, ইরানসহ এসসিওর ৯টি সদস্য রাষ্ট্র ইসরায়েলের এই পদক্ষেপকে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন এবং ইরানের সার্বভৌমত্বের পরিপন্থী বলে উল্লেখ করে বিবৃতি দেয়। তবে, ভারত সেই বিবৃতিতে অংশ নেয়নি।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, তারা শুক্রবারই ইসরায়েল-ইরান পরিস্থিতি নিয়ে নিজেদের অবস্থান জানিয়েছে এবং এখনও সেই অবস্থানেই অনড় রয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, ভারত দুই পক্ষকে সংঘর্ষ থেকে বিরত থেকে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানে আহ্বান জানাচ্ছে। আন্তর্জাতিক মহলকেও এই প্রচেষ্টায় সহায়তা করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এ বিষয়ে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে টেলিফোনে আলোচনা করেছেন বলেও জানানো হয়েছে। সেখানে ভারতীয় পক্ষ থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করে দ্রুত কূটনৈতিক সমাধানের উপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু শুক্রবার ফোন করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে আলোচনায় বসেন। পশ্চিম এশিয়ার সাম্প্রতিক উত্তেজনা এবং ইসরায়েলের পদক্ষেপ সম্পর্কে মোদীকে অবহিত করেন নেতানিয়াহু। এ সময় মোদী আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং ভবিষ্যতেও দ্বিপাক্ষিক যোগাযোগ অব্যাহত রাখার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
ভারতের এই অবস্থান পশ্চিমা মিত্র ও মুসলিম বিশ্বের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষার কৌশল বলেই মনে করছেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা। মধ্যপ্রাচ্যে ভারতের জ্বালানি ও কূটনৈতিক স্বার্থ বজায় রাখতে দ্বৈত কৌশল গ্রহণই নয়াদিল্লির লক্ষ্য হতে পারে।