অপরাজনীতি ছাড়তে বিএনপিকে ৩৬ দিনের আলটিমেটাম দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সেতুমন্ত্রী বলেন, এ ৩৬ দিনের মধ্যে বিএনপিকে আগুন সন্ত্রাস, নাশকতার রাজনীতি ছাড়তে হবে, গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে হবে। নতুবা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে অপরাজনীতির কালোহাত গুঁড়িয়ে দেবো। মন্ত্রী গতকাল সোমবার বিকেল সোয়া ৫ টায় রাজধানীর উত্তরা ৩ নং সেক্টর আজমপুর আমির কমপ্লেক্স সংলগ্ন, ২নং রোডে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামীলীগের উদ্যোগে আয়োজিত শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপির কোমর ভেঙে গেছে। বিএনপি খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য ৩৬ মিনিটও আন্দোলন করতে পারেনি। ৩৬ দিনের সময় দিলাম, ঠিক হয়ে যান। বিএনপিকে আজকের এই সমাবেশ থেকে আল্টিমেটাম দিলাম; ৩৬ দিনের আল্টিমেটাম, ৩৬ ঘণ্টা নয়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, খেলা হবে। হবে খেলা? প্রস্তুত আছেন? যেমন কুকুর, তেমন মুগুর। কুকুর যেমন, মুগুরও ঠিক তেমন। কারো ভিসানীতির তোয়াক্কা আমরা করি না। বার্তা দিয়ে দিচ্ছি, কারো নিষেধাজ্ঞা আমরা তোয়াক্কা করি না। এই দেশ রক্ত দিয়ে স্বাধীন করেছি, কারো নিষেধাজ্ঞা মানার জন্য নয়। তুমি কে? সাত-সমুদ্র, তেরো নদীর আটলান্টিকের ওপাড় থেকে নিষেধাজ্ঞা দেবে? তিনি আরো বলেন, বিএনপি যদি অস্ত্র নিয়ে আসে ওই হাত ভেঙে দিতে হবে। আগুন নিয়ে আসলে ওই হাত পুড়িয়ে দিতে হবে। যেমন কুকুর, তেমন মুগুর। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে প্রশ্ন রাখেন। বিএনপির পলাতক দণ্ডিত নেতা তারেক রহমানকে দেওয়া মার্কিন রাষ্ট্রদূত জেমস মরিয়ার্টির দেওয়া নিষেধাজ্ঞার কী হলো ফখরুল সাহেব?
বিএনপির উদ্দেশ্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, সুযোগ একটাই; নির্বাচনে আসেন। নির্বাচনে যদি না আসেন খেলার আগেই হেরে যাবেন। বিএনপি জামায়াতের দেশবিরোধী হরতাল, নৈরাজ্য ও অবরোধ প্রতিরোধে আয়োজিত সমাবেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি ভর করেছে ভিসানীতির ওপর, আর আওয়ামী লীগ জনগণের শক্তির ওপর। কারও নিষেধাজ্ঞা ও খবরদারিতে বাংলাদেশে নির্বাচন চলবে না। ভিসানীতি, নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা আমরা করি না। যারা ভিসানীতি, নিষেধাজ্ঞা দেয় তাদের দেশেই গণতন্ত্র ত্রুটিমুক্ত নয়। মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। কিছুই তারা করতে পারছে না। আমরা পরোয়া করি বাংলাদেশের জনগণকে। বাংলাদেশের জনগণ ছাড়া কোনো ভিসানীতি, নিষেধাজ্ঞা মানি না, মানবো না। আমাদের নির্বাচন আমরা করবো। সংবিধান বলে দিয়েছে কীভাবে নির্বাচন হবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আজকে তারা ৩৬ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেয়, তারা তাদের নেত্রীর জন্য কিছু করতে পারেনি। শেখ হাসিনার মহানুভবতায় আজ তিনি বাসায় বসে চিকিৎসা নিচ্ছেন। মির্জা ফখরুলের লজ্জা করে না? ৩৬ মিনিটও তারা তাদের নেত্রীর জন্য আন্দোলন করতে পারেনি। গোলাপবাগের গর্তে পড়ে ফখরুল এখন সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারছেন না। বিএনপির ঘুম হারাম হয়ে গেছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, দুই সেলফিতে বিএনপির ঘুম হারাম হয়ে গেছে। ফখরুল ছটফটিয়ে ঘুমায় না রাতে। উপরে-উপরে নেতাকর্মীদের বোঝানোর জন্য বড় বড় কথা বলে। আওয়ামীলীগ এই শীর্ষ নেতা বলেন, হায়রে কষ্ট, হায়রে দুঃখ। এত লোটা, এত কম্বল, এত বিছানা নিয়ে সমাবেশ করল, কোনো কাজ হয় না। নির্বাচন যথাসময়ে হবে। নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী হবে। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হবে না। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বাংলাদেশের মানুষ বুঝে গেছে, কষ্ট আছে, দুঃখ আছে কিন্তু আমাদের একজন নেতা আছে। যে নেতা ঘুমায় না। আজকের এই দুঃখ-কষ্ট দূর করার জন্য শেখ হাসিনাকেই এ দেশের মানুষ বিশ্বাস করে। তিনি যা করতে পারবেন, তাই বলেন। কোনোদিনও মিথ্যা কথা বলেন না। তার মতো ঈমানদার নেতা নেই। তিনি যত দিন আছেন, আল্লাহর আশীর্বাদ বাংলাদেশের সঙ্গে আছে।
যাযাদি/ এস