আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন জমার শেষ দিনে আচরণ বিধি ভঙ্গ করে সভা সমাবেশ করেছেন ঝিনাইদহ-৩ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য শফিকুল আজম খান চঞ্চল। আসন্ন নির্বাচনে দলের মনোনয়ন চেয়ে পাননি তিনি। ফলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে বৃহস্পতিবার মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন। এদিন বিকালে কোটচাঁদপুর শহরের আখ সেন্টার মোড়ে শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশের ব্যানারে বিশাল শোডাউন করে তার সমর্থকরা। সংসদ সদস্য শফিকুল আজম খান চঞ্চল সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তৃতা করেন। এসময় সেখানে পুলিশ, বিজিবি ও ম্যাজিষ্ট্রেট উপস্থিত ছিলেন।
সংসদ সদস্য শফিকুল আজম খান চঞ্চল বলেন, আমি দুইবার পৌর মেয়র নির্বাচিত হয়েছি। দুইবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছে। দির্ঘ এ সময়ে এলাকার মানুষের কল্যাণ ও উন্নয়নে ভূমিকা রেখেছি। কেউ বলতে পারবে না আমি মানুষের ক্ষতি করেছি। আমার আশা ছিল মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার দলীয় মনোনয়ন দিয়ে মহেশপুর কোটচাঁদপুর উপজেলাবাসির কাছে পাঠাবেন। কিন্তু আমি কষ্টের সাথে লক্ষ করলাম এমন একজনকে নৌকার মনোনয়ন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে, যার কোন রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা নেই। এসময় সাংসদ চঞ্চল উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে বলেন আপনারা কি সালাউদ্দীন মিয়াজিকে চেনেন। আপনরা তাকে চেনেন না, অথচ তাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছিলে, আমি জরিপ করছি। জরিপে যে এগিয়ে থাকবে তাকে মনোনয়ন দেওয়া হবে। আমরা আশায় বুক বেধে ছিলাম। জরিপের ফলাফল সম্পর্কে যতটুকু জেনেছি ৮০ ভাগের উপরে আমার পক্ষে ছিল। যার নামই নেই জরিপে। প্রার্থী হিসাবে যার নাম পাঠানো হয়নি, তাকে মনোনয়ন দেওয়া হলো। আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে প্রার্থী পরিবর্তনের দাবি রাখতে চাই।
সাধারন মানুষ আমাকে বলেছে, আপনি যতক্ষণ নির্বাচন না করবেন, ততক্ষণ আমরা ঘরে ফিরবো না। ভোটারদের দাবির প্রেক্ষিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। মনোনয়ন ঘোষনার দিন মনোনয়ন প্রত্যাশি সবাইকে ডেকেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, স্বতস্ত্র প্রার্থীদের কেউ ডিস্টার্ব করবেন না, কেউ বাধা সৃষ্টি করবেন না। নেত্রীর নির্দেশ আমরা মাথা পেতে নিয়েছি। দলের যে কেউ নির্বাচন করতে পারবে। যাকে নৌকার মনোয়ন দেওয়া হয়েছে তিনি রাজনীতি করেন না। আমরা যারা রাজনীতি করি তাদের যে কাউকে দিলে আমরা মেনে নিতাম। রাজনীতি করেন না, সারা জীবন ভালো পদে থেকে চাকরী করবেন। ক্ষমতার সমস্ত ফল আপনি ভোগ করবেন। অবসরে এসে রাজনীতি করবেন, আবার সুবিধা ভোগ করবেন, এটাতো হবে না। ব্কতব্য শেষে নেতাকর্মীদের নিয়ে বিশাল এক মিছিল করেন সাংসদ চঞ্চল।
ঝিনাইদহ-৩ আসন থেকে আওয়ামীলীগ দলীয় নৌকার প্রার্থী অবসরপ্রাপ্ত সামরিক সচিব মেজর জেনারেল সালাউদ্দীন মিয়াজি সাংসদ চঞ্চলের বক্তব্যের বিষয়ে বলেন, রাজনীতিতে কিছু অপসাংস্কৃতি আছে, এটা তারই অংশ। আমি রাজনীতিবিদ নয়, এটা তিনি সঠিক বলেছেন। কিন্তু আমি আওয়ামীলীগ পরিবারের সন্তান। আমার পিতা একজন সাংসদ ছিলেন। অবসরের পর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে রাজনীতি শুরু করেছি। দলের সদস্য পদ নিয়ে মহেশপুর আওয়ামীলীগের কার্যক্রম শুরু করি। তিনি যে অভিযোগ করেছেন, তা আমি বিনয়ের সাথে বলতে চাই আপনারা খোঁজ খবর নিয়ে দেখেন অভিযোগের বিষয়ে কোন প্রমাণ পাবেন না। আমাকে প্রধানমন্ত্রী নৌকা প্রতিক দিয়ে পাঠিয়েছেন। সেখানে প্রকাশ্যে সমাবেশ করে এমন বক্তব্য প্রধানমন্ত্রীর সম্মাহানীকর বক্তব্য বলেই আমি বিশ^াস করি। তবে তিনি সাংসদ চঞ্চলের নির্বাচন আচরণ বিধি ভঙ্গের বিষয়ে কোন অভিযোগ করেননি।
যাযাদি/ এস