সোমবার, ০৯ জুন ২০২৫, ২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

মানুষ রোজা রাখবে না নির্বাচনের প্রচারণা করবে: প্রশ্ন রিজভীর

যাযাদি ডেস্ক
  ০৮ জুন ২০২৫, ১৯:৪৯
মানুষ রোজা রাখবে না নির্বাচনের প্রচারণা করবে: প্রশ্ন রিজভীর
ছবি : যায়যায়দিন

‘বাংলাদেশের পলিমাটির যে বাতাস এ বাতাস অত্যন্ত পরিশোধিত বাতাস। এ বাতাসের মাঝে এখন কিছু বঙ্কিম বাতাসও প্রবাহিত হয়। ক্ষমতায় এলেই চিরস্থায়ী ক্ষমতায় থাকার স্বপ্ন দেখে।

যেটি দেখেছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান, যেটি দেখেছিলেন শেখ হাসিনা, তেমনি আবারও পঙ্কিল বাতাসটা অন্তর্বর্তী সরকারের শরীরেও লাগছে কিনা।

1

এটি মানুষের কাছে বড় ধরনের প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে।’

রোববার (৮ জুন) দুপুরে নয়া পল্টনে জাতীয়তাবাদী ভ্যান শ্রমকি ও রিকশা শ্রমিক দলের উদ্যেগে খাবার বিতরণকালে এসব কথা বলেন বিএনপির সিনিয়ির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

অন্তর্বর্তী সরকার গণতন্ত্রকে সংস্কারের মুখোমুখি করেছেন মন্তব্য করে বিএনপির মুখপাত্র বলেন, কেন দুই-একজন লোকের কথায় বা দুই-একটি রাজনৈতিক দলের কথায় প্রধান উপদেষ্টা এপ্রিলে নির্বাচনের কথা বলছেন।

এপ্রিল মাসে তো প্রচণ্ড খরতাপ থাকে, ঝড় বৃষ্টি হয়, এসএসসিহ পরীক্ষাসহ অন্যান্য পরীক্ষা থাকে। সে সময় কেবল রোজার ঈদ শেষ হবে। এপ্রিলে নির্বাচন হলে রমজানে প্রচারণা চালাতে হবে। রোজা রেখে প্রচারণা চালাবে কীভাবে।

মানুষ রোজা রাখবে না নির্বাচনের প্রচারণা করবে। এপ্রিলে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত, এটি অর্বাচীনের মতো কাজ, অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্ত বলে জনগণ মনে করে।

তিনি বলেন, ছাত্রজনতার আত্মদান ছিল যে গণতন্ত্রকে শেখ হাসিনা সিন্ধুকের ভেতরে তালাবদ্ধ করেছিল, সে গণতন্ত্রকে অবমুক্ত করার জন্য।

১৫-১৬ বছর এদেশের মানুষ ভোট দিতে পারেনি। আওয়ামী লীগ দিনের ভোট রাতে দিয়েছে, সব অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের ইতিহাসকে দুই পায়ে ঢলেছেন শেখ হাসিনা।

তিনি আরও বলেন, গণতন্ত্রতের একটি প্রধান মাধ্যম হচ্ছে নির্বাচন, আমি আমার বন্ধুর সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করতেই পারি। তবে অধিকাংশ মানুষ যাকে সমর্থন করবে, ভোট দেবে, তারাই বিজয়ী হবে। এটিই নির্বাচন। এজন্য আন্দোলন করেছে, এজন্য সংগ্রাম করেছে। এটি বলতে গিয়ে ইলয়াস আলী, চৌধুরী আলমসহ হাজারও মানুষ অদৃশ্য হয়েছে। কারণ তারা গণতন্ত্র চেয়েছে। তারা অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন চেয়েছে, কথা বলার স্বাধীনতা চেয়েছে, এ চাওয়াটাই তাদের অপরাধ হয়েছে। শেখ হাসিনা তাদের গুম করেছে। আরও কত যুবককে বিচারবহির্ভূত হত্যা করেছে। কারও লাশ নদীর ধারে, খালের ধারে ফেলে দিয়েছে। মিথ্যা মামলা দিয়ে বছরের পর বছর কারাগারে রেখেছে। কাউকে আয়না ঘরে বন্দি করে রেখেছে। সব কিছুর মূলে ছিল গণতন্ত্র। আর গণতেন্ত্রর মূল উপাদান হচ্ছে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন। কিন্তু বাংলাদেশে গণতন্ত্রের খুব দুর্ভাগ্য। গণতন্ত্র নিজেই এক দুর্ভাগ্যের মধ্যে পড়েছে। অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়েই যেন গড়িমসি।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, কোন সূতার টানে, কার পারামর্শে তিনি নির্বাচন নিয়ে টানাহেচঁড়া করছেন। নির্বাচনই নিজেই কেন জানি একটা টানাপোড়েনের মধ্যে আছে। এ পরিস্থিতি তো হওয়ার কথা নয়। আমরা সব না বুঝলেও এটি বুঝি।

প্রধান উপদেষ্টার জাপানে গিয়ে নির্বাচন নিয়ে দেওয়া বক্তব্যের প্রসঙ্গে প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির এই নেতা বলেন, তিনি জাপানে গিয়ে বলে দিলেন একটি দল ছাড়া কেউ নির্বাচন চায় না। কিন্তু একটি দলের আয়তন কত, তার প্রশস্ত কতটুকু, তা কি তিনি জানেন না? অবশ্যই জানেন, ওই দলটার জনসমর্থন কতটুকু। তার মতো দায়িত্বশীল কী করে এসব কথা বলেন? এরপরও আপনি দেখেন কত রাজনৈতিক দল ডিসেম্বরে নির্বাচন চেয়েছে। তিনি আবারও ডিসেম্বরে নির্বাচনের দাবি জানান।

আয়োজক সংগঠনের আহ্বায়ক জহির রায়হানের সভাপতিত্বে ও আফজাল হোসেনের পরিচালনায় এতে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, নির্বাহী কমিটির সদস্য মাহুবুব ইসলাম, ডা. জাহিদুল কবির প্রমুখ। অনুষ্ঠানটির সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন সংগঠনের নেতা আরিফুর রহমান তুষার।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে