বুধবার, ১৪ মে ২০২৫, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২

জাতীয় সংগীতে বাধা: ঢাবি শিবিরের ব্যাখ্যা

যাযাদি ডেস্ক
  ১৩ মে ২০২৫, ২৩:৪২
জাতীয় সংগীতে বাধা: ঢাবি শিবিরের ব্যাখ্যা
ছবি : সংগৃহিত

শাহবাগের জাতীয় সংগীতে বাধা দেওয়ার ঘটনায় এবার বিবৃতি দিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্রশিবির।

মঙ্গলবার (১৩ মে) শিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার প্রচার সম্পাদক মু. সাজ্জাদ হোসাইন খাঁন স্বাক্ষরিত ওই বিবৃতিতে শিবিরের বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের অভিযোগ তোলা হয়েছে।

1

বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, সম্প্রতি ফ্যাসিবাদী দল আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, ছাত্রসংগঠন ও ছাত্রজনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।

কর্মসূচির একপর্যায়ে জাতীয় সংগীত চলাকালীন সময়ে গুটিকয়েক ব্যক্তি বাধা প্রদানের ঘটনার সাথে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে সংঘবদ্ধ মিথ্যাচার করছে একশ্রেণির স্বার্থান্বেষী মহল।’

এতে বলা হয়, ভিডিও ফুটেজ দেখে বাধা প্রদানে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক পরিচয় শনাক্ত করা খুবই সহজসাধ্য কাজ।

স্বাভাবিকভাবেই ফুটেজে উপস্থিত ব্যক্তিদের মতামত জানা কিংবা প্রত্যক্ষদর্শী কর্তৃক ঘটনার বিবরণ জেনে এই ইস্যুতে প্রতিক্রিয়া জানানো ছিল ছাত্র সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে দায়িত্বশীল ও প্রত্যাশিত আচরণ।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, উপরন্তু, গতকাল সন্ধ্যায় রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ‘সাধারণ শিক্ষার্থী’র ব্যানারে শতাধিক শিক্ষার্থী জাতীয় সংগীত গাওয়ার অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

উক্ত অনুষ্ঠানে ছাত্রদল, ছাত্র ইউনিয়ন,গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ সহ বেশি কিছু ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন, যেখানে একাধিক ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকারে শাহবাগের ঘটনার সাথে ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে ঘৃণ্যতম মিথ্যাচার করেছে।

এতে আরও বলা হয়, এই মিথ্যাচারের প্রতিবাদে এক যৌথ বিবৃতিতে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি এস এম ফরহাদ ও সেক্রেটারি মহিউদ্দিন খাঁন বলেন, শাহবাগের ঘটনার সত্যতা ও সংশ্লিষ্টতা যাচাই না করে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই ঘটনায় ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে মিথ্যাচার ও অব্যাহত ট্যাগিং এর নিন্দা জানাচ্ছি।

ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে যথাযথ দায়িত্বশীল আচরণের পরিবর্তে গতকাল সন্ধ্যায় কিছু সংগঠন কর্তৃক 'সাধারণ শিক্ষার্থীর ব্যানার ব্যবহার করে শতাধিক শিক্ষার্থীদের নিয়ে আওয়ামী বয়ান ফিরিয়ে আনার অপচেষ্টা করা ও ছাত্রশিবিরকে নিয়ে ট্যাগিং ও মিথ্যাচারের আশ্রয় নেয়া মূলত সংগঠনগুলোর রাজনৈতিক দেউলিয়াত্বের বহিঃপ্রকাশ।

ছাত্র সংগঠন হিসেবে পুরোনো ধারার বিদ্বেষ, বিভাজন ও সংঘাতের রাজনীতির পরিবর্তে সকল সংগঠন কর্তৃক সাধারণ শিক্ষার্থী ও জাতির কল্যাণে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করা জুলাই স্পিরিটের মৌলিক দাবি।

বিবৃতিতে আরও বলা হয় বলেন, বাংলাদেশ ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বিজয় অর্জন করেছে এবং ২০২৪ সালে ছাত্র-জনতার ফ্যাসিবাদ বিরোধী অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আধিপত্যবাদের ভয়াল থাবা থেকে মুক্ত হয়েছে।

ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশে কোনো নাগরিককে রাজনৈতিকভাবে ঘায়েল করার উদ্দেশ্যে পতিত স্বৈরাচার ও ‘কালচারাল ফ্যাসিস্ট’দের বয়ানকে পুনরায় প্রাসঙ্গিক করার অপচেষ্টা নয়া ফ্যাসিবাদী রাজনীতির বহিঃপ্রকাশ।

এতে বলা হয়, আরও লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে বাংলাদেশপন্থার নামে জাতীয় সংগীতে বাধা প্রদানের ইস্যুতে ইসলামপন্থা বনাম বাংলাদেশপন্থাকে মুখোমুখি দাঁড় করানোর অপরাজনীতি কার্যত উগ্র বাঙালি জাতীয়তাবাদের পুনর্মঞ্চায়ন।

যেটি বাঙালি বনাম ইসলাম এর বিভাজনের ফ্যাসিবাদী রাজনীতির নয়া বন্দোবস্ত। জুলাই পরবর্তী বাংলাদেশে পতিত স্বৈরাচারের দোসর ‘কালচারাল ফ্যাসিস্টদের’ তৈরি বয়ানে ঐক্যবদ্ধ ছাত্র-জনতাকে বিভাজিত করার অপকৌশলকে ছাত্রশিবির ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছে। ছাত্রশিবির বিশ্বাস করে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঐক্যবদ্ধ ছাত্রজনতাই গড়বে আগামীর বাংলাদেশ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে