বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ইউনূসের তরফ থেকেই তারেকের সঙ্গে এক বৈঠকের আগ্রহ প্রকাশ করা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি। রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে জোর আলোচনা-এই বৈঠক আদৌ হবে কিনা।
প্রধান উপদেষ্টার সফরসূচি ‘কনফিডেনশিয়াল’ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় তাঁর ঢাকা ছাড়ার কথা থাকলেও দুপুর পর্যন্ত সফরসঙ্গীদের হাতে পূর্ণাঙ্গ সূচি ছিল না। বিটিভি ও পিআইডি প্রতিনিধি থাকলেও সরকারি বার্তা সংস্থা বাসস বা অন্যান্য সাংবাদিকদের না নেয়া-অনেকের কাছেই ব্যতিক্রম মনে হচ্ছে।
অবাক করা বিষয় হলো, তাঁর সফরসঙ্গীদের তালিকায় দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান আব্দুল মোমেন এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরও আছেন।
এই সফরে প্রধান আকর্ষণ হিসেবে রয়েছে ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লসের কাছ থেকে 'কিং চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড' গ্রহণ। বাকিংহাম প্যালেসে রাজা চার্লসের সঙ্গে সাক্ষাতের পাশাপাশি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ের স্টারমারের সঙ্গে বৈঠকেরও সম্ভাবনা রয়েছে।
এ ছাড়া ব্রিটিশ পার্লামেন্টের অল পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপ, ইউকে স্পেশাল এনভয় টু উইমেন অ্যান্ড গার্লস, কমনওয়েলথ মহাসচিব, আন্তর্জাতিক সমুদ্র সংস্থাসহ একাধিক কূটনৈতিক ও নীতিনির্ধারক ব্যক্তির সঙ্গে বৈঠকের সূচি রয়েছে।
চ্যাথাম হাউসে অংশগ্রহণ ছাড়াও তিনি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেবেন এবং কিংস ফাউন্ডেশনের বার্ষিক নৈশভোজেও অংশ নেবেন।
বিএনপি ও কূটনৈতিক সূত্রগুলো দাবি করছে, ইউনূসের তরফ থেকেই তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠকের আগ্রহ প্রকাশ করা হয়েছে। যদিও এখনো এটি চূড়ান্ত হয়নি। বিএনপির অভ্যন্তরেও প্রশ্ন উঠেছে-নির্বাচনের টাইমলাইন স্পষ্ট হয়ে যাওয়ার পর এমন বৈঠকের প্রয়োজনীয়তা আদৌ আছে কি না।
এ ছাড়া সরকারি সফরে গিয়ে একটি রাজনৈতিক দলের নেতার সঙ্গে সাক্ষাৎ কতটা গ্রহণযোগ্য হবে-সেটিও বিবেচনায় রাখা হচ্ছে।
তবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার দফতরের ঘনিষ্ঠ কয়েকজন রাজনৈতিক ব্যক্তি ইতোমধ্যে সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, “ইউনূস-তারেক বৈঠক হচ্ছে, শিগগিরই দেখবেন খবর।”
এই সফর ঘিরে যেমন উত্তেজনা আছে, তেমনি অনিশ্চয়তা ও ধোঁয়াশাও বিদ্যমান। প্রধান উপদেষ্টার সফরটি কেবল সম্মাননা গ্রহণের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে, নাকি এর মাধ্যমে রাজনৈতিক সমীকরণেও কোনো পরিবর্তন আসবে-তা সময়ই বলবে।