জুলাই অভ্যুত্থানের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার আগামী ৮ আগস্ট ‘নতুন বাংলাদেশ দিবস’ পালনের যে ঘোষণা দিয়েছে তা প্রত্যাখান করেছে ইনকিলাব মঞ্চ।
গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারীদের সংগঠনটি, সরকার যদি তা পালনই করে, তাহলে ইনকিলাব মঞ্চ সেদিন বিপ্লব-বেহাত দিবস পালন করবে।
আজ শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে এ অবস্থানের কথা তুলে ধরেন মঞ্চের আহ্বায়ক শরীফ ওসমান বিন হাদি।
তিনি বলেন, ‘আমাদের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ৮ আগস্টকে ‘নতুন বাংলাদেশ দিবস’ ঘোষণা করতে চায়। আমরা তা হতে দেব না। ৮ আগস্ট আবার কোথা থেকে আসলো? আমাদের জাতীয় মুক্তি দিবস ৫ অগাস্ট।
তিনি বলেন, ‘…আমরা বেঁচে থাকতে ৮ আগস্টকে নতুন বাংলাদেশ দিবস ঘোষণা করতে দেওয়া হবে না। সরকার এমন কিছু করলে ওইদিন সারাদেশে পালিত হবে বিপ্লব-বেহাত দিবস।’
হাদি বলেন, ৩৬ জুলাই তথা ৫ অগাস্টকে জাতীয় মুক্তি দিবস কিংবা দ্বিতীয় স্বাধীনতা দিবস ঘোষণা করতে হবে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের সরকার পতনের ঘটনাবহুল ৫ আগস্টকে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস’ ঘোষণা করে বুধবার পরিপত্র জারি করে অন্তর্বর্তী সরকার।
সেইসঙ্গে নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকারের যাত্রা শুরুর দিন ৮ আগস্টকে ঘোষণা করা হয় ‘নতুন বাংলাদেশ দিবস’। আর জুলাইয়ের কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে রংপুরে পুলিশের গুলিতে আবু সাঈদের মৃত্যুর দিন ১৬ জুলাইকে ‘শহীদ আবু সাঈদ দিবস’ হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
শরীফ ওসমান বিন হাদি বলেন, ‘শহীদ আবু সাঈদ দিবসকে শুধু আবু সাঈদ দিবস না করে, বরং জুলাই শহীদ দিবস বা শহীদ দিবস ঘোষণা করা হোক। যাতে অন্যান্য শহীদের পরিবার এই দিবসটিকে সমানভাবে নিজের করে নিতে পারে।’
গত রোববার সন্ধ্যায় উত্তরার বাসা থেকে সাবেক সিইসি নূরুল হুদাকে আটক করে এক দল ব্যক্তি। এসময় তাকে হেনস্তা করা হয়।
এ প্রসঙ্গে হাদি বলেন, ‘বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রবীণ ‘সংগ্রাম’ পত্রিকার সম্পাদক আবুল আসাদ সাহেবকে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের গুন্ডাগুলা তার অফিসে গিয়া দাড়ি ধরে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে এসেছে। তখন কেউ তাদের মব সন্ত্রাস বলেনি, আর এখন সুশীলতা দেখানো হচ্ছে ‘
মঞ্চের আহ্বায়ক শরীফ ওসমান বিন হাদি বলেন, ‘আগামী জুলাইয়ের ১ তারিখ জুলাই সনদ আদায়ের দাবিতে লাল মার্চ ঘোষণা করা হয়েছে। শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে থেকে বিকাল ৪টায় ছাত্রজনতা মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে রওনা করবে জুলাই সনদ আদায়ের দাবিতে।’
তিনি বলেন, ‘সেদিন লাল মার্চে যে সকল জুলাই যোদ্ধারা আসবেন, শহীদ পরিবার আসবেন, ছাত্রজনতা আসবেন, জুলাই সনদ আদায়ের দাবিতে তারাই সিদ্ধান্ত নিবেন। তারা যদি মনে করেন, জুলাই সনদ না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে থাকবে; আমরাও তাদের সাথে থাকব।’