একেবারে ছন্দহীন, প্রাণহীন, দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই করে জয় ছিনিয়ে আনল বার্সেলোনা। এমন একটি ম্যাচ, যেখানে প্রতিপক্ষ লেগানেস জয় ছিনিয়ে নেওয়ার মতো পারফরম্যান্স দিয়েছে, ঠিক তখনই ‘চ্যাম্পিয়নের ভাগ্য’ পাশে দাঁড়াল বার্সার। হ্যাঁ, জয়সূচক গোলটিও এসেছে আত্মঘাতী ভুলে, লেগানেস ডিফেন্ডার জর্জ সান্স নিজের জালেই বল পাঠিয়ে দেন। ফলাফল—১-০ গোলের জয়, শিরোপা দৌড়ে আরও একধাপ এগিয়ে গেল ফ্লিকের দল।
চলতি বছরে এখন পর্যন্ত অপরাজিত বার্সেলোনা। বছরের শেষ দিনে সোরলথের ইনজুরি টাইমের গোলে হারের পর থেকে টানা ২৪ ম্যাচে অপরাজিত তারা। লা লিগায় রিয়াল মাদ্রিদের থেকে সাত পয়েন্ট এগিয়ে (যদিও মাদ্রিদের ভিটোরিয়া গেম এখনো বাকি)। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে পৌঁছাতে মুখিয়ে তারা, প্রথম লেগে বরুসিয়া ডর্টমুন্ডকে উড়িয়ে দিয়েছে ৪-০ গোলে। আর কোপা দেল রের ফাইনালে প্রতিপক্ষ সেই রিয়াল মাদ্রিদ, যাদের এই মৌসুমে বার্সা বারবার নাস্তানাবুদ করেছে।
তবে এই ম্যাচে বার্সা মোটেও চেনা ছন্দে ছিল না। শুরু থেকেই লেগানেসের চাপ, দানি রাবার ডানদিক দিয়ে চমৎকার দৌড় ও পাস থেকে আলতিমিরা গোলের কাছে চলে গিয়েছিলেন। কিন্তু সিজেসনি ছিলেন অটল। প্রথমার্ধে বড় সুযোগ পেয়েছিল দুই দলই। কুন্দের শট ডিফেন্ডারে লেগে দিক পরিবর্তন করেছিল, লামিন ইয়ামালের শট লাগে পোস্টের পাশে। বার্সার পক্ষে দুঃসংবাদ ছিল বালদের চোট, তাকে তুলে নিতে হয় মাঠ থেকে।
দ্বিতীয়ার্ধে ফ্লিক কাঠগড়ায় তুলেছিলেন নিজের দলকেই, একগুচ্ছ পরিবর্তন এনে খেলার ভারসাম্য ফেরানোর চেষ্টা করেন। আর তাতেই আসে ভাগ্যগুণে পাওয়া গোল। রাফিনহার ক্রস লেভানদোফস্কির দিকে যাচ্ছিল, কিন্তু তার আগেই জর্জ সাএন্স বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে নিজেই জালে ঠেলে দেন। ভাগ্যবান বার্সা পেয়ে যায় কাঙ্ক্ষিত গোলটি।
তবে গোল হজম করেও লেগানেস হাল ছাড়েনি। বরং আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে তারা। ফারমিন বক্সে কয়েকজনকে কাটিয়ে দুর্দান্ত চেষ্টায় গোল করতে পারতেন, কিন্তু লক্ষ্যভ্রষ্ট শট বার্সার ব্যবধান বাড়তে দেয়নি। শেষদিকে মুুনির ও দিয়েগো গার্সিয়া দুজনেই গোলের খুব কাছাকাছি গিয়েছিলেন, বিশেষ করে মুুনির একেবারে এক-অন-ওয়ান চলে গিয়েছিলেন সিজেসনির সঙ্গে, কিন্তু ইনিজিও মার্টিনেজের চমৎকার ব্লকে রক্ষা পায় বার্সা।
শেষ বাঁশি বাজার পরেও লেগানেস খেলোয়াড়দের চোখে হতাশা, বার্সা খেলোয়াড়দের মুখে হাঁফ ছেড়ে বাঁচার স্বস্তি। ম্যাচে যে কেবল তিন পয়েন্টই গুরুত্বপূর্ণ ছিল, তা ভালো করেই জানতেন ফ্লিক। আর সেই তিন পয়েন্ট এবার এসে গেল ভাগ্যের হাত ধরে। এমন ম্যাচই বলে দেয়—শিরোপা জিততে কেবল স্কিল নয়, দরকার ভাগ্যও। আর সেই ভাগ্যই হয়তো বার্সেলোনাকে ধীরে ধীরে টেনে নিয়ে যাচ্ছে ২০২৫ সালের ‘ত্রিমুকুটের’ দিকে।
যাযাদি/ এসএম