যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোতে বসবে ২০২৬ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ। ফুটবলের এই মেগা টুর্নামেন্টকে ঘিরে নতুন করে বিতর্কের মুখে পড়েছে বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা। কারণ, আসন্ন এই টুর্নামেন্টের অন্যতম আয়োজক দেশ যুক্তরাষ্ট্র বর্তমানে ইরানের সঙ্গে সামরিক উত্তেজনার মধ্যে রয়েছে। ফলে ইরান দল যুক্তরাষ্ট্রে খেলতে পারবে কি না, তা নিয়ে উঠেছে নানা প্রশ্ন।
ফিফার নীতিমালা অনুযায়ী, রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের কারণে কোনো দেশের খেলা অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার সরাসরি কোনো বিধান নেই। যদিও বর্তমানে ইরানের নাগরিকদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে কিছু নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, তবে কূটনৈতিক ছাড়ের আওতায় খেলোয়াড়, কোচিং স্টাফ ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা কিছু ক্ষেত্রে বিশেষ অনুমতি পেতে পারেন।
ইরান ইতিমধ্যেই ২০২৬ বিশ্বকাপের জন্য টানা চতুর্থবারের মতো কোয়ালিফাই করেছে। ২০২২ সালের কাতার বিশ্বকাপে তারা যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষেও খেলেছে। তবে এবার বিশ্বকাপ তিনটি দেশে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকো। আয়োজিত হওয়ায় ভেন্যু নিয়ে জটিলতা বেড়েছে।
যদি ইরান গ্রুপ ‘এ’-তে জায়গা পায়, তবে তাদের সব ম্যাচ মেক্সিকোতেই আয়োজন সম্ভব। এমনকি গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হলে তারা শেষ ষোলো পর্যন্ত মেক্সিকোতেই খেলতে পারবে। তবে কোয়ার্টার ফাইনাল কিংবা তার পরের রাউন্ডে যেতে হলে যুক্তরাষ্ট্রে খেলতে হতে পারে, যা এই রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে জটিলতা বাড়াতে পারে।
এই বিষয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি ফিফা। তবে দ্য গার্ডিয়ান এর এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে জানা গেছে, সংস্থাটি বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছে এবং চলতি বছরের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠেয় বিশ্বকাপ ড্রয়ের আগেই সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে চায়।
বিষয়টি আরও স্পর্শকাতর হয়ে উঠেছে ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনোর রাজনৈতিক সম্পর্ক ঘিরে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা এবং সম্প্রতি ট্রাম্পের দেওয়া একটি পারমাণবিক হামলার অনুমোদনের খবর পরিস্থিতিকে আরও জটিল করেছে।
এদিকে ফিফার প্রতিযোগিতা কমিটিতে ইরান, কানাডা ও মেক্সিকোর প্রতিনিধিরা থাকলেও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব ফিফা কাউন্সিল ও সভাপতি ইনফান্তিনোর ওপর। এই কমিটির নেতৃত্বে আছেন উয়েফা সভাপতি আলেকজান্ডার সেফেরিন, যিনি ২০২২ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সময় ইউক্রেন ও বেলারুশকে একই গ্রুপে না রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।