রোববার, ১১ মে ২০২৫, ২৮ বৈশাখ ১৪৩২
যুক্তরাষ্ট্র এবং ফ্রান্সের মধ্যস্থতা

ইসরায়েল-হিজবুলস্নাহ যুদ্ধবিরতি কার্যকর

ইসরায়েল আগামী ৬০ দিনের মধ্যে লেবানন থেকে পর্যায়ক্রমে তাদের বাহিনী প্রত্যাহার করবে
যাযাদি ডেস্ক
  ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
ইসরায়েল-হিজবুলস্নাহ যুদ্ধবিরতি কার্যকর
ইসরায়েল-হিজবুলস্নাহ যুদ্ধবিরতি কার্যকর

যুক্তরাষ্ট্র এবং ফ্রান্সের মধ্যস্থতায় সমঝোতায় পৌঁছানোর পর ইসরায়েল এবং ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠী হিজবুলস্নাহর মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মঙ্গলবার ঘোষণা দেন, উভয়পক্ষই এই যুদ্ধবিরতি চুক্তি মেনে নিয়েছে। এরপর বুধবার ভোর থেকে ইসরায়েল ও হিজবুলস্নাহর মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয় বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে রয়টার্স।

এর মধ্য দিয়ে লেবানন সীমান্তে দীর্ঘদিন ধরে চলা লড়াই অবসানের একটি পথ তৈরি হলো, যে লড়াইয়ে হাজারও মানুষের প্রাণ গেছে, যার সূচনা হয়েছিল গত বছরের গাজা যুদ্ধের জের ধরে।

ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা মঙ্গলবার ১০-১ ভোটে এই যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুমোদনের পরপরই হোয়াইট হাউসে বক্তৃতা দিতে আসেন বাইডেন।

তিনি বলেন, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং লেবাননের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতির সঙ্গে তার কথা হয়েছে, স্থানীয় সময় ভোর ৪ টায় যুদ্ধবিরতি শুরু করতে তারা দুইজনেই সম্মত হয়েছেন।

তিনি বলেন, 'বৈরিতার স্থায়ী অবসানের লক্ষ্য নিয়ে এই যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের পরিকল্পনা করা হয়েছে। হিজবুলস্নাহ এবং অন্যান্য সন্ত্রাসী সংগঠনের যা অবশিষ্ট আছে, তাদের আর ইসরায়েলের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হতে দেওয়া হবে না।'

চুক্তি অনুযায়ী, ইসরায়েল আগামী ৬০ দিনের মধ্যে লেবানন থেকে পর্যায়ক্রমে তাদের বাহিনী প্রত্যাহার করবে। একই সময় লেবাননের সেনাবাহিনী ইসরায়েল সীমান্ত সংলগ্ন অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নেবে, যাতে হিজবুলস্নাহ সেখানে আবার কোনো অবকাঠামো পুনর্নির্মাণ না করতে পারে।

এই যুদ্ধবিরতি নিয়ে হিজবুলস্নাহ আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে তাদের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা হাসান ফাদলালস্নাহ লেবাননের আল জাদেদ টিভিকে বলেছেন, এই চুক্তি লেবাননের রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্বের সম্প্রসারণকে সমর্থন করলেও হিজবুলস্নাহ আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে।

তিনি বলেন, 'হাজারও মানুষ আমাদের প্রতিরোধে যোগ দেবে। আমাদের নিরস্ত্র করার যে প্রস্তাব ইসরায়েলি দিয়েছিল, সেটা ভেস্তে গেছে।'

হিজবুলস্নাহকে সমর্থন দিয়ে আসা ইরান, ফিলিস্তিনের সশস্ত্র দল হামাস কিংবা ইয়েমেন থেকে ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে আসা হুতি বিদ্রোহীরা যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেনি।

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ এক এক্স পোস্টে লিখেছেন, 'এই চুক্তি যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ সহযোগিতায় ইসরায়েলি ও লেবানিজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বহু মাস ধরে চলা আলোচনার চূড়ান্ত পরিণতি।'

লেবাননের প্রধানমন্ত্রী মিকাতি এই চুক্তিকে স্বাগত জানিয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছেন। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুলস্নাহ বো হাবিব বলেছেন, ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের সঙ্গে সঙ্গে লেবানিজ সেনাবাহিনীর কমপক্ষে পাঁচ হাজার সদস্যকে দক্ষিণ লেবাননে মোতায়েন করা হবে।

ইসরায়েলের নেতা নেতানিয়াহু বলেছেন, এই যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য তিনি প্রস্তুত। কিন্তু হিজবুলস্নাহ চুক্তি লঙ্ঘন করলে এর 'কঠোর জবাব' ইসরায়েল দেবে।

তার ভাষায়, এই যুদ্ধবিরতি ইসরায়েলকে এখন ইরানের হুমকির বিষয়ে আরও মনোযোগ দেওয়ার সুযোগ করে দেবে। পাশাপাশি সেনাবাহিনীর বিশ্রাম, রসদের সরবরাহ বাড়ানো এবং ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাসকে বিচ্ছিন্ন করার ক্ষেত্রেও সহায়ক হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে