সুদানের নর্থ দারফুর রাজ্যের আল-ফাশির শহরে অবরোধের মধ্যে মে থেকে এ পর্যন্ত ৭৮২ জন নিহত হয়েছেন বলে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার জানিয়েছেন।
শুক্রবার এক বিবৃতিতে হাই কমিশনার ভলকার তুর্ক বলেছেন, 'অবরোধ ও বিরামহীন লড়াইয়ে প্রতিদিন ব্যাপকহারে জীবন ধ্বংস হচ্ছে।' আল-ফাশিরের অবরোধ থামাতে সুদানের আধা-সামরিক বাহিনীর্ যাপিড সাপোর্ট ফোর্সের (আরএসএফ) প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, ' এই উদ্বেগজনক পরিস্থিতি চলতে দেওয়া যায় না।র্ যাপিড সাপোর্ট ফোর্সকে অবশ্যই ভয়ঙ্কর অবরোধের ইতি টানতে হবে।'
জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর জানিয়েছে, তারা মে মাস থেকে কমপক্ষে ৭৮২ জন বেসামরিকের মৃত্যু এবং ১১৪৩ জনেরও বেশি আহতের তথ্য নথিবদ্ধ করেছে। যারা এই এলাকা থেকে পালিয়ে গেছে আংশিকভাবে তাদের সাক্ষাৎকার ও অন্যান্য সাক্ষের ভিত্তিতে এই তালিকা করা হয়েছে। তারা জানায়, শহরটির ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় আরএসএফ নিয়মিত তীব্র গোলাবর্ষণ করায় এবং সুদানের সশস্ত্র বাহিনীর পৌনঃপুনিক বিমান হামলার কারণে এসব হতাহতের ঘটনা ঘটছে। বেসামরিকদের ওপর এ ধরনের আক্রমণ যুদ্ধাপরাধ হতে পারে। রয়টার্স জানায়, আল-ফাশির ও এর আশপাশে ইচ্ছাকৃতভাবে বেসামরিকদের ওপর আক্রমণের অভিযোগ উভয়পক্ষ বারবার অস্বীকার করে এমনটি করার জন্য একে অপরককে দায়ী করেছে।
সুদানের সশস্ত্র বাহিনী ও আরএসএফ ১৮ মাসেরও বেশি সময় ধরে সংঘর্ষে জড়িয়ে আছে। এতে দেশটিতে একটি গভীর মানবিক সংকট তৈরি হয়েছে। এক কোটি ২০ লাখেরও বেশি মানুষকে তাদের ঘরবাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে আর জাতিসংঘের সংস্থাগুলো ত্রাণ বিতরণ করতে রীতিমতো সংগ্রাম করছে।
আরএসএফ এবং সুদানের সেনাবাহিনী ও তাদের মিত্রদের মধ্যে লড়াইয়ে আল-ফাশির সবচেয়ে সক্রিয় যুদ্ধক্ষেত্রগুলোর মধ্যে একটি। সুদানের সেনাবাহিনী ও মিত্ররা দারফুর অঞ্চলে তাদের শেষ অবস্থান ধরে রাখতে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। পর্যবেক্ষকদের শঙ্কা, এখানে আরএসএফের জয় হলে গত বছর ওয়েস্ট দারফুরে যেমনটি হয়েছিল এখানেও তেমন জাতিগত প্রতিশোধের ঘটনা ঘটতে পারে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, চলতি মাসের প্রথমদিকে আরএসএফ আল-ফাশিরের প্রধান হাসপাতালে হামলা চালিয়ে নয়জনকে হত্যা করেছিল।