ইউক্রেনের সঙ্গে ১০০ বছরের অংশীদারিত্ব চুক্তির মাধ্যমে কিয়েভকে আরও সমর্থন দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। তাছাড়া ইউক্রেনের মিত্রদের সঙ্গেও কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। এদিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমি জেলেনস্কি বৃহস্পতিবারের এই চুক্তিকে ঐতিহাসিক বলে প্রশংসা করেন। ২০২২ সালের ফেব্রম্নয়ারিতে রাশিয়া পূর্ণ মাত্রায় আক্রমণ শুরু করার পর থেকে যুক্তরাজ্য ইউক্রেনের অন্যতম বড় সামরিক সমর্থক হিসেবে কাজ করেছে। বৃহস্পতিবার কিয়েভে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে দেখা করেন স্টারমার। সে সময় '১০০ বছরের অংশীদারিত্ব' চুক্তি সই করেন দুই নেতা। এই চুক্তির মাধ্যমে কিয়েভকে আরও সমর্থন দেওয়ার ঘোষণা দেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। সেই সঙ্গে রাশিয়ার সাথে যুদ্ধবিরতি আলোচনা হলে কিয়েভকে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দেওয়ার কথাও বলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। গত বছরের জুলাইয়ে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর এটিই স্টারমারের প্রথম ইউক্রেন সফর। এই সফরে দুই দেশের মধ্যে আগের চেয়ে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথা তুলে ধরেন তিনি। স্টারমার বলেন, যুদ্ধ বন্ধের যেকোনো চুক্তিতে ইউক্রেনের নিরাপত্তা ও স্বাধীনতার নিশ্চয়তা থাকতে হবে।
সোমবার শপথ নিতে যাওয়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নির্বাচনী প্রচারণার সময় প্রায় তিন বছর ধরে চলে আসা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ঘটানোর প্রতিশ্রুতি দেন। এরই মধ্যে ট্রাম্প জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর ?'অতি শিগগির' রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এমন কিছু ঘটলে সেটা হবে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার শীর্ষ দুই নেতার মধ্যে প্রথম বৈঠক। ' ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে সফর করছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেইর স্টারমার। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার তিনি কিয়েভে পা রাখেন। তার এই সফরের মধ্যেই কিয়েভে বিমান হামলার সাইরেন বেজে উঠেছে এবং ভয়াবহ বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। কিয়েভের কর্মকর্তারা বলেছেন যে, বিমান বাহিনী শত্রম্নদের ড্রোন হামলার বিষয়ে সতর্ক করার পর শহরের কেন্দ্রস্থলে শত্রম্নদের লক্ষ্যবস্তু প্রতিহত করতে কাজ করছে বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। কিয়েভ থেকে এএফপির সাংবাদিকরা জানিয়েছেন তারা একটি ড্রোন উড়ে যেতে দেখেছেন। এর আগে রাশিয়ার এঙ্গেলস শহরে সামরিক বিমানঘাঁটির তেলের ডিপোয় হামলা চালায় ইউক্রেন। সেসময় আগুন নেভাতে গিয়ে দুই দমকলকর্মীর মৃতু্য হয়। গত৮ জানুয়ারি উভয় পক্ষই একে অপরের বিদু্যৎ ও সামরিক ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যুক্ত জায়গায় হামলার দাবি করেছে। রুশ ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ইউক্রেনের ঝাপোরিঝিয়াতে ১৩ জন নিহত হয়। গত মাসের শেষদিকে রাশিয়ার ওরিওল অঞ্চলে দূরপালস্নার শাহেদ ড্রোনের একটি সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণ ডিপোতে হামলা চালানোর দাবি করে ইউক্রেন। সে সময় ইউক্রেনীয় সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে জানায়, এই হামলা রাশিয়ার জন্য ইউক্রেনের বিরুদ্ধে বৃহৎ আকারের ড্রোন হামলা পরিচালনার সক্ষমতা 'গুরুতরভাবে কমিয়ে' দিয়েছে। ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী জানায়, দেশটির বিমান বাহিনী এই হামলা চালিয়েছে। এই হামলার ফলে শাহেদ কামিকাজে ড্রোনের সংরক্ষণ, রক্ষণাবেক্ষণ এবং মেরামতের জন্য ব্যবহৃত সুরক্ষিত কংক্রিট কাঠামোতে একটি ডিপো ধ্বংস হয়ে গেছে। এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই সামরিক অভিযানে শত্রম্নপক্ষের বিমান হামলার সক্ষমতা উলেস্নখযোগ্যভাবে কমে গেছে। এটি ইউক্রেনের বেসামরিক অবকাঠামোর ওপর রাশিয়ার ড্রোন হামলা চালানোর ক্ষমতা কমিয়ে দিয়েছে। গত কয়েক মাসে মস্কো প্রায় প্রতিদিন শতাধিক ড্রোন হামলা চালিয়ে ইউক্রেনের অবকাঠামোকে ক্ষতিগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে। রাশিয়া গত প্রায় ৩৫ মাস ধরে ইউক্রেনে নিয়মিতভাবে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়ে আসছে। সূত্র: রয়টার্স