বুধবার, ০৭ মে ২০২৫, ২৪ বৈশাখ ১৪৩২

চীনের সামনে ট্রাম্পের শুল্কের চেয়েও রয়েছে বড় তিন চ্যালেঞ্জ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
চীনের সামনে ট্রাম্পের শুল্কের চেয়েও রয়েছে বড় তিন চ্যালেঞ্জ
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ট ট্রাম্প ও চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং

চীনের অর্থনীতি গেল বছরের শেষ তিন মাসে যেভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে, তাতে ২০২৪ সালের ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পেরেছে দেশটির সরকার। লক্ষ্য পূরণ হলেও চীনের এই প্রবৃদ্ধির হার কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে কম। আবাসন বাজারের দীর্ঘস্থায়ী মন্দা, সরকারের বিপুল ঋণ এবং যুব বেকারত্ব কাটিয়ে উঠতে লড়াই করছে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটি। অর্থনীতির গতি বাড়াতে গত বছরের শেষ দিকে বেশ কয়েকটি প্রণোদনা ব্যবস্থা চালু করে চীন সরকার। দেশটির পরিসংখ্যান বু্যরোর প্রধান ই কং বলেছেন, ২০২৪ সালে যে অর্থনৈতিক সাফল্য এসেছে তা অনেক 'কষ্টের ফল'। বেইজিং অতীতে তার প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে খুব কমই ব্যর্থ হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা মোটামুটি এই হারের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েই রেখেছিলেন। ঋণ নেওয়ার খরচ কমে যাওয়া এবং রপ্তানি বাড়ার কারণে চীনের বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ৪ দশমিক ৯ শতাংশ হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছিল বিশ্ব ব্যাংক। ৫০০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের চীনা পণ্যের উপর শুল্ক আরোপের যে হুমকি নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প দিয়ে রেখেছেন, সেটাও গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। বিনিয়োগকারীরা ইতোমধ্যে নিজেদের প্রস্তুতি শুরু করছেন। তবে চীনের পরবর্তী বছরের প্রবৃদ্ধির অর্জনের পথে এই শুল্কই কেবল বাধা নয়।

ক্রেতাদের ভোগের প্রবণতা কমায় দেশটির ব্যবসার অবস্থা ভালো নয়। প্রবৃদ্ধি বাড়াতে বেইজিং সুদের হার কমানোয় চীনা ইউয়ান দুর্বল হতে থাকবে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সামনে ট্রাম্পের শুল্কের চাইতেও মোটাদাগে তিনটি বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে। ২০২৫ সালে চীনের অর্থনীতি শ্লথ হয়ে পড়ার সতর্কবার্তা দিন দিন জোরালো হচ্ছে। গত বছরের প্রবৃদ্ধির বড় চালিকাশক্তি রপ্তানি এখন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। চীন মন্দা এড়াতে শিল্পখাতে নির্ভরতা বাড়াচ্ছে; দেশটি রেকর্ড সংখ্যক বৈদু্যতিক বাহন, থ্রিডি প্রিন্টার এবং শিল্প রোবট রপ্তানি করছে। চীনের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত পণ্য তৈরির অভিযোগ করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। তারা দেশীয় কর্মসংস্থান ও ব্যবসা রক্ষার জন্য চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চীনা রপ্তানিকারকরা এখন বিশ্বের অন্যান্য অংশে মনোনিবেশ করতে পারেন। তবে সেই দেশগুলো বেইজিংয়ের জন্য হতে পারে উদীয়মান বাজার; যাদের উত্তর আমেরিকা কিংবা ইউরোপের মত অত চাহিদা নেই।এর ফলে চীনা ব্যবসায় প্রভাব পড়তে পারে। ফলে জ্বালানি ও কাঁচামাল সরবরাহকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। শি চাইছেন, ২০৩৫ সালের মধ্যে চীনকে বিশ্বের সস্তা পণ্যের কারখানা থেকে একটি উচ্চ প্রযুক্তির শক্তিতে রূপান্তর করতে। কিন্তু ক্রমবর্ধমান শুল্কের মুখে কীভাবে উৎপাদন খাত এত বড় প্রবৃদ্ধির চালিকাশক্তি হতে পারে তা স্পষ্ট নয়। চীনে পারিবারিক সম্পদ ব্যাপকভাবে সম্পত্তি বাজারে বিনিয়োগ করা হয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে